বাজেটে মোবাইল খরচের ওপর বর্ধিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ করে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের ওপর থেকে পুরো শুল্ক প্রত্যাহারেরও অনুরোধ করেছেন তিনি। সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ চিঠি পাঠানো হয়।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি অর্থমন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি, যেন বর্ধিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। করোনাকালীন সময়ে আমাদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ইন্টারনেট। এর ব্যয় বাড়ানো হলে মানুষের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। আমি অর্থমন্ত্রীর কাছে আরেকটি আবেদন করেছি, সেটা হলো শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের ওপর যেন কোনো ধরনের শুল্ক রাখা না হয়। শিক্ষার্থীরা এখন অনলাইনে পড়াশোনা করছে।
ঘোষিত বাজেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর গ্রাহক পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আগে যেটা ছিল ২৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। এখন ৫ শতাংশ বৃদ্ধির পর সেটা দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। এই ট্যাক্স বৃদ্ধির ফলে ১০০ টাকা রিচার্জে সরকারের কাছে কর হিসেবে যাবে ২৫ টাকার কিছু বেশি। এতদিন তা ২২ টাকার মতো ছিল। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, মোবাইল সেবায় কর বাড়ানোর ফলে সাধারণ মানুষ চাপে পড়বে।
চলতি অর্থ বছরে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল আছে। এর সঙ্গে যোগ হয় আরো ৫ শতাংশ। সম্পূরক শুল্কের পাশাপাশি বর্তমানে গ্রাহকরা ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং আরো ১ শতাংশ সারচার্জ দিয়ে আসছে সরকারকে। বাজেট ঘোষণার দিন রাত ১২টা থেকেই কার্যকর করা হয় অতিরিক্ত শুল্ক কাঠামো। নতুন ট্যাক্স কাঠামোতে একজন গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে তিনি সবমিলে ৭৫ টাকার সেবা পাবেন। মোবাইল অপারেটররা শুরু থেকে বলে আসছে, প্রতি বছরই দফায় দফায় টেলিকম সেবার ওপর ট্যাক্স বৃদ্ধি সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশনের পরিপন্থি। তারা বলছেন, আগে থেকেই টেলিকম খাতে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ ট্যাক্স রয়েছে বাংলাদেশে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোবাইল সেবার ওপর ১ শতাংশ সারসার্জ আরোপ করা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আরোপ হয় ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট ও ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে সম্পূরক শুল্ক আরো বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। শীর্ষ দুই মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির হিসাবে, তাদের মোট রাজস্ব আয়ের ৫৩ থেকে ৫৬ শতাংশই সরকারের কোষাগারে বিভিন্ন কর ও ফি বা মাশুল হিসেবে চলে যায়।