করোনা মহামারির কারণে পরীক্ষা নিতে না পারায় ছাত্রছাত্রীদের সময় কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শর্তসাপেক্ষে তাদের পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণের সুযোগ দেয়া হবে। পাশাপাশি অনলাইনে তাদের নতুন ক্লাসও শুরু করা হবে। আর যাদের চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা হয়ে গেছে, অনলাইনে তাদের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে। বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীদের ল্যাবরেটরি পরীক্ষা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরাসরি নেয়া হবে।
এর অংশ হিসাবে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দুই শর্তে দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল। উত্তীর্ণের শর্তগুলো হলো- এক. পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই যথানিয়মে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। কেউ যদি ওই পরীক্ষায় অংশ না নেয় বা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ‘নট প্রমোটেড’ (নির্ধারিত পাশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ না হওয়া) হয়, সেক্ষেত্রে তার উত্তীর্ণের বিষয়টি বাতিল বলে গণ্য হবে। দুই. যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছিল এবং ইনকোর্স পরীক্ষায় অংশ নেয়ার পাশাপাশি ক্লাস শেষ করেছে- শুধু তারা উত্তীর্ণ হতে পারবে।
২০২০ সালে অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩৫ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী ২ লাখ ৯৭ হাজার ৬২৬ জন। অনিয়মিত শিক্ষার্থী ১৯ হাজার ৫০ জন, আর মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৫১ হাজার ১৫৯ জন। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ২য় বর্ষে উত্তীর্ণ হবে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৬৭৬ শিক্ষার্থী। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিল ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৮৭৬ জন শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, উত্তীর্ণের সুযোগ দেয়ার কারণ হচ্ছে, তাদের বসিয়ে রাখতে চাই না। এখন দ্বিতীয় বর্ষে অনলাইনে ক্লাস করবে তারা। এতে শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট হবে না।
তিনি বলেন, আসলে আমরা কারও পরীক্ষা মওকুফ করছি না। প্রথম কথা হচ্ছে, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ইতোমধ্যে একদফা মূল্যায়ন হয়ে গেছে। সবারই ইনকোর্স পরীক্ষা নিয়েছে কলেজগুলো। তাছাড়া পরিস্থিতি অনুকূলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সরাসরি পরীক্ষা দিতে হবে। না হলে তাদের আগের শ্রেণিতেই ফিরে যেতে হবে।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বাকি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদেরও পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণের চিন্তাভাবনা চলছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও কিছুদিন এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে চায়। গত বছরের নভেম্বরের পরে এ দুই বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার কথা ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান জানান, কর্তৃপক্ষ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দেয়া উত্তীর্ণ সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশিকা তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ওই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।