ক্যাম্পাস পরিচালিত ফ্রি ইংলিশ কোর্সের ১৪তম ব্যাচের সনদ বিতরণ হয় গত ২৪ আগস্ট। ক্যাম্পাস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ, গবেষক, নীতি-পর্যালোচক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত এবং গেস্ট অব অনার ছিলেন লেখক, গবেষক, গ্রন্থকার, ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ এর সুযোগ্য প্রেসিডেন্ট মসিহ্ মালিক চৌধুরী।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং ক্যাম্পাস সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিএসডিসি) এর মহাসচিব এম হেলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট প্রাণরসায়ন ও অনুজীব বিজ্ঞানী এবং সাবেক উপাচার্য ড. খলিলুর রহমান; কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ জাকির হোসাইন; খাজা ইউনুস আলী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার আবদুর রশিদ খান; ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফ্যামেলি লাভ মুভমেন্ট এর চেয়ারপার্সন তাজকেরা খায়ের; সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন কমিটির সদস্য, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের পরিচালক এবং বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজমা বেগম; প্রোএকটিভ ও পজিটিভ এটিচিউড আন্দোলনের গবেষক ড. আলমাসুর রহমান; ইন্টারন্যাশনাল বাংলা ক্লাবের ভাইস-প্রেসিডেন্ট দেলোয়ার হোসাইন; ক্যাম্পাস’র ফ্রি ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পার্সন এম জি কিবরিয়া; কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার উপদেষ্টা ছড়াকার মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ক্যাম্পাস’র শিক্ষানবিশ আনতারা রাইসা ও জসিম উদ্দিন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদ্বয়কে অর্পণ করা হয় ক্যাম্পাস’র জ্ঞানমেলা সিরিজে প্রকাশিত সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, আত্মোন্নয়ন ও জাতি জাগরণমূলক বিভিন্ন বইয়ের সেট; ক্যাম্পাস’র নিজস্ব গবেষণায় প্রকাশিত ২টি মডেল ও বিভিন্ন সিডির সেট এবং ক্যাম্পাস’র স্যুভেনির।
এরপর অতিথিদ্বয়কে ক্যাম্পাস’র সম্মাননা ক্রেস্ট অর্পণ করা হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সফল ও কৃতী অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত এবং বিভিন্ন সেক্টরের সফল উদ্যোক্তা ও চার্টার্ড একাউন্টেন্সি জগতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব মসিহ্ মালিক চৌধুরীকে ক্রেস্ট অর্পণ করেন ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল। এরপর ট্রেইনীদের মাঝে অতিথিদ্বয় সনদ বিতরণ করেন। সনদ বিতরণ শেষে শুরু হয় বক্তৃতাপর্ব।
শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি, অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও সোস্যাল নেটওয়ার্কিং -এ চারটি বিষয়ে ক্যাম্পাস সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করছে -ড. জায়েদ বখত
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর, অগ্রণী ব্যাংকের সুযোগ্য চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন ক্যাম্পাস’র কর্মসূচি পর্যালোচনা করলে যে জিনিসটি ফুটে ওঠে, তা হলো উন্নয়ন। উন্নয়ন বহুমাত্রিক বিষয়। জীবন সংগ্রামে মোকাবেলা করার জন্য দক্ষতা অর্জনের নামই উন্নয়ন। তিনি বলেন সংগ্রাম পরিচালনার জন্য প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি অর্জন, অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও সোস্যাল নেটওয়ার্ক। জনজীবনের এ ৪টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ক্যাম্পাস সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করছে।
অসতর্কতা কিংবা যেকোনো কারণে শারীরিক অসুস্থতা সৃষ্টি হতে পারে; ক্যাম্পাস এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য-সচেতনতার শিক্ষা দিয়ে থাকে। শরীর সুস্থ থাকলেও মানসিক শক্তির অভাবে অনেকে পিছিয়ে থাকে; সেক্ষেত্রে মানসিক শক্তি বৃদ্ধিতে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে ফ্রি মেডিটেশন, ইয়োগা, আকুপ্রেশার, রিফ্লেক্সোলজী, রেইকি প্রোগ্রাম এবং প্রোএকটিভ সেমিনারসহ নানা কার্যক্রম। দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো যায়; তাই দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে ফ্রি কম্পিউটার ট্রেনিং, ফ্রি ইংলিশ কোর্স, ফ্রি চায়নিজ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সসহ সময়োপযোগী নানা কর্মসূচি। ক্যাম্পাস’র সোস্যাল নেটওয়ার্কিংয়েও দেখা যায় বিভিন্ন ক্লাব ও ফেলোশিপসহ তাদের বিভিন্ন Follow-up কর্মসূচি।
ড. জায়েদ বখত বলেন, বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্মার্টনেস ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে Quality English কোর্স পরিচালনা ক্যাম্পাস’র একটা উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি। ইংলিশ শেখানোর মধ্যে দিয়ে তারা দেশে জনসম্পদ তৈরি করছে। ক্যাম্পাস’র ভিশন হলো জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা; সে লক্ষ্যে তারা পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে চলেছে, তাদের সামনে রয়েছে সাফল্যের হাতছানি।
নিজস্ব ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ক্যাম্পাস’র কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ সফল হবে -মসিহ্ মালিক চৌধুরী
অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার সমাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট মসিহ্ মালিক চৌধুরী বলেন ক্যাম্পাস শেখার স্থান, জানার স্থান। এখানে এসে আমিও অনেক কিছু শিখেছি, অনেক কিছু জেনেছি। সৃজনশীল ও সময়োপযোগী বহুমুখী কর্মসূচির ডায়নামিক প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস; মাল্টিডায়মেনশনাল কর্মসূচির মাধ্যমে তারা ছাত্র-তরুণদের জাগিয়ে তুলছে, দেশকেও এগিয়ে নিচ্ছে। দেশোন্নয়নের ভিশন-মিশন নিয়েই যাত্রা শুরু করেছে; অত্যাধুনিক বহুমুখী কর্মসূচি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। এখন তারা নিজ জমিতে ভবন গড়ে তোলার তথা Campus Study Center গড়ে তুলতে কাজ করছে। নিজস্ব ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ক্যাম্পাস’র কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ সফল হবে।
মসিহ্ মালিক চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন ক্যাম্পাস তোমাদের জীবন ভরে তুলবে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও সৃজনশীলতায়। এরূপ সমৃদ্ধ জীবনকে তোমরা যখন কর্মের মধ্যে নিবদ্ধ করবে, তখন তোমাদের জীবন রূপ-রস-গন্ধ ও সাফল্যের সুষমায় ভরে উঠবে।
ছাত্র-যুবকদেরকে সহযোগিতা দান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইসিএবি প্রদত্ত বিভিন্ন কোর্সে ক্যাম্পাস’র ছাত্র-ছাত্রীরা যদি অংশ নিতে চায়, তাহলে অনুরূপ অন্তত ৫ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর জন্য তিনি স্পন্সর জোগাড় করে দিবেন।
ড. খলিলুর রহমান
বিশিষ্ট প্রাণরসায়ন ও অনুজীব বিজ্ঞানী ড. খলিলুর রহমান বলেন, ক্যাম্পাস আমার একটা পছন্দের স্থান; এখানে আসলে মনটা আনন্দে ভরে ওঠে, এখানে নতুন কিছু জানা যায়। কারণ ক্যাম্পাস নতুন নতুন আইডিয়া জেনারেট করে। ক্যাম্পাস’র মতো এত সুন্দর পরিবেশ আর কোথাও পাওয়া যায় না।
ড. খলিলুর রহমান বলেন দু’অতিথি অর্থনীতির লোক, তাঁদের সার্কেলও অনেক বড়। তাঁরা সহজেই ক্যাম্পাস’র ডায়নামিক কর্মসূচিতে সহযোগিতা করতে পারেন।
জাকির হোসাইন
কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোঃ জাকির হোসাইন বলেন, ক্যাম্পাস গুণী লোকের কদর দেয়, যা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. জায়েদ বখত এর বই পড়ে আমি উপকৃত হয়েছি, সমৃদ্ধ হয়েছি। আশা করি, ইংলিশ কোর্সের শিক্ষার্থীরাও তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে আলোকিত হবে।
আবদুর রশিদ খান
খাজা ইউনুস আলী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার আবদুর রশিদ খান বলেন, বহুমুখী কর্মসূচির প্রতিষ্ঠান হলো ক্যাম্পাস; তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রশংসনীয় এবং দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আজকের অনুষ্ঠানের অতিথিদ্বয় ক্যাম্পাস’র কল্যাণকর কর্মসূচিতে তাদের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবেন এটি আমাদের প্রত্যাশা।
তাজকেরা খায়ের
বিশ্ব পারিবারিক ভালোবাসা আন্দোলনের চেয়ারপার্সন তাজকেরা খায়ের বলেন স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসনের প্রকৃত ও বাস্তব চর্চা আমি একমাত্র ক্যাম্পাস অফিসে দেখেছি। এখানকার স্টাফরা বছরে কয়েকটি সেশনে তাদের বস্ এর সমালোচনা, এমনকি ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এম হেলাল এর সমালোচনা করার সুযোগ পায়। ক্যাম্পাস নিজেদের উদ্যোগে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সমাজ-সচেতনতামূলক বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত ক্যালেন্ডার ও স্টিকার বিতরণ করে। এর মাধ্যমে তারা মানুষকে সচেতন করে তুলছে, গড়ে তুলছে আধুনিক চিন্তার উন্নত মানুষ। এছাড়া দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে নানা কর্মসূচি। আমাদের সকলেরই উচিত ক্যাম্পাস’র এসব কর্মসূচিতে সহযোগিতা করা।
ড. নাজনীন আহমেদ
স্বাগত ভাষণে ক্যাম্পাস’র অনারারী রিসার্চ ডিরেক্টর ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ছাত্র-যুব উন্নয়নের মাধ্যমে দেশোন্নয়নের লক্ষ্যে ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে নানামুখী ডায়নামিক কর্মসূচি। এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ছাত্র-যুবকরা হয়ে উঠছে চৌকস, কর্মঠ ও দেশপ্রেমী। ক্যাম্পাস’র শিক্ষা নিয়ে ছাত্র-যুবকরা কর্মজীবনেও সফল হচ্ছে। ক্যাম্পাস’র এসব কর্মসূচি আরও ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উত্তরায় ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সে উদ্যোগ বাস্তবায়নে আজকের অনুষ্ঠানের অতিথিদ্বয়ের পরামর্শ ও সহযোগিতা থাকবে বলে আশা করি।
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন তোমরা এখানে যা শিখেছ, তা প্র্যাকটিস করবে; প্র্যাকটিস না করলে এ শেখা ভুলে যেতে বেশি সময় লাগবে না।
ড. আলমাসুর রহমান
প্রোএকটিভ এটিচিউড আন্দোলনের প্রবক্তা ড. আলমাসুর রহমান বলেন কত পেয়েছি এ নিয়ে মানুষ ব্যস্ত, অথচ এটি প্রকৃত ধনী হবার লক্ষণ নয়। দেশ ও সমাজকে কত দিতে পেরেছি, সেটিই ধনীর পরিচয়। তাই আমাদেরকে কী পেয়েছি, তা না দেখে দেশ ও সমাজকে কী দিলাম তা দেখতে হবে। ক্যাম্পাস সেই কাজটিই করছে, তারা অকাতরে সমাজকে দিয়ে যাচ্ছে।
এম গোলাম কিবরিয়া
ফ্রি ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পার্সন এম গোলাম কিবরিয়া বলেন ক্যাম্পাস হলো Breading center of making super human being, মানুষের মনোভাব পরিবর্তনের কারখানা। প্রশিক্ষণার্থীদের লক্ষ্য করে কিবরিয়া বলেন, নিজ জীবন বদলে দিতে তোমাদের ইচ্ছেটাই যথেষ্ট। ইচ্ছাশক্তি দিয়েই তোমরা সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে যেতে পারবে।
এম হেলাল
ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং সিএসডিসি’র মহাসচিব এম হেলাল বলেন, ক্যাম্পাস নিত্য-নতুন জ্ঞান ও আইডিয়া জেনারেট করে তা সযত্নে ছড়িয়ে দিচ্ছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরসহ সারা দেশে। ইংলিশ কোর্স পরিচালনার মাধ্যমে Smart & global youth generation গড়ে তোলার কাজ করছে ক্যাম্পাস। এছাড়া সময়োপযোগী নানা কর্মসূচি পরিচালনার মাধ্যমে ছাত্র-যুবকদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করছে। জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে পরিচালিত ক্যাম্পাস’র এসব জনকল্যাণকর কর্মসূচিতে উদার চিত্তে সবার এগিয়ে আসা একান্ত কাম্য।