১২ মার্চ ক্যাম্পাস পত্রিকার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ইংলিশ এন্ড স্মার্টনেস ফর লিডারশিপ কোর্সের ২৯তম ব্যাচের উদ্বোধন অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবায় আধুনিক ও সৃজনশীল উদ্যোক্তা, বহুমুখী প্রতিভা ও বর্ণিল গুণাবলির আইকনিক সমাজসেবী, ফরাজী হাসপাতাল এর চেয়ারম্যান ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন; গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন প্রতিভাদীপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বর্ণিল গুণাবলির কর্মযোগী ও চিকিৎসা সংগঠক, ফরাজী হাসপাতাল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং ক্যাম্পাস সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিএসডিসি) এর মহাসচিব ড. এম হেলাল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিগণকে পুষ্পমাল্যে বরণ করে নেয়া হয় এবং উপহার হিসেবে অর্পণ করা হয় ক্যাম্পাস’র জ্ঞানমেলা সিরিজে প্রকাশিত সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, আত্মোন্নয়ন ও জাতি জাগরণমূলক বিভিন্ন বইয়ের সেট; ক্যাম্পাস’র পরিবেশ আন্দোলনের প্রতীক, পাটের তৈরি ওয়াটার প্রুফ আকর্ষণীয় ব্যাগ; ক্যাম্পাস’র নিজস্ব গবেষণায় প্রকাশিত দেশোন্নয়নের ২টি মডেল, বিভিন্ন সিডির সেট ও স্যুভেনির।
চিকিৎসা অঙ্গনের তারুণ্যোজ্জ্বল দুই নক্ষত্রকে ক্যাম্পাস’র সম্মাননা ক্রেস্ট অর্পণের মাধ্যমে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক ড. এম হেলাল।
ইংলিশ কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা যেন স্মার্ট এন্ড গ্লোবাল ইয়ুথ জেনারেশনরূপে দেশ ও জাতির অন্ধকার দূরীকরণে তাদের অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে, সে কামনায় প্রধান অতিথির হাতে আশা জাগানিয়া মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। এরপর শুরু হয় বক্তৃতাপর্ব।
প্রধান অতিথি ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন বলেন- ক্যাম্পাস’র কার্যক্রম আমি যতই দেখি ততই আনন্দে অভিভূত হই। এর আগে একবার এখানে এসেছিলাম; ভালোলাগা থেকে আবার এসেছি। তরুণ ছাত্র-যুবকদের নিয়ে ক্যাম্পাস’র ব্যতিক্রমী কার্যক্রম ভূঁয়সী প্রশংসার দাবিদার। এখানে যারা কোর্স করতে এসেছো- তোমাদের সৌভাগ্য যে, তোমরা ক্যাম্পাস’র মতো নিঃস্বার্থ আলোকবর্তিকার মহীরূহ প্রতিষ্ঠানের ছায়াতলে ঠাঁই পেয়েছো। ক্যাম্পাস’র নীতি-আদর্শে তোমরা নিজেদের ইতিবাচকরূপে গড়ে তুলবে। ইন্টারনেট-ফেসবুক ইত্যাদি ভার্চুয়াল জগত ছেড়ে বেশি বেশি বই পড়তে হবে। মনে রাখতে হবে- পুঁথিগত বিদ্যা আর পরহস্ত ধন; নহে বিদ্যা, নহে ধন; হলে প্রয়োজন। কাজেই জ্ঞানগর্ভ বই পড়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে হবে, যা জীবনে অনেক কাজে আসবে।
পৃথিবীতে ২ ধরণের মানুষ আছে; প্রোএকটিভ মানুষ এবং রিএকটিভ মানুষ। যারা রিএকটিভ এবং নেতিবাচক চিন্তার মানুষ তারা জীবনে সফল হতে পারে না। আর যারা প্রোএকটিভ এবং ইতিবাচক চিন্তার মানুষ তারাই জীবনে সফল হয়। ক্যাম্পাস’র কর্ণধার ড. এম হেলাল একজন প্রোএকটিভ এটিচিউডের মানুষ। আমি তাঁকে অনেক রাগন্বিত করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো অবস্থাতেই পারিনি। তোমরা ক্যাম্পাস’র মতো ইতিবাচক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকলে ইতিবাচক হওয়ার পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে পারবে।
পৃথিবীতে ভালোবাসাও দুই প্রকার; কন্ডিশনাল লাভ আর আনকন্ডিশনাল লাভ। বাবা-মায়ের ভালোবাসা আনকন্ডিশনাল, কারণ তাঁরা প্রতিদান চায় না। জীবনে বড় হতে হলে মানুষকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসতে হবে; মানবকল্যাণে সৃজনশীলতার স্বাক্ষর রেখে যেতে হবে। অসহায় মানুষের প্রতি সদয় হতে হবে, বিনয়ী হতে হবে। সেই প্রকৃত মানুষ -যে মানুষের কল্যাণ কামনা করে, মানুষের সেবায় নিবেদিত, দুঃস্থ মানুষের সেবায় উৎসর্গীকৃত। মানবসেবা সবচেয়ে বড় সেবা। আমরা চিকিৎসকেরা মানবসেবার জন্য শপথ নিয়ে থাকি- যাকে ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ বলে। সব চিকিৎসকই ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ নিয়ে থাকে। কিন্তু সত্যিকারের উদারপ্রাণ মানুষ শপথ ছাড়াই মানবতার সেবা করে থাকে। তোমাদেরও প্রকৃত মানুষ হতে হলে মানবসেবায় উৎসর্গীকৃত হতে হবে।
যারা নেতিবাচক চিন্তার মানুষ, তারা ‘No’ এর মানে বোঝে ‘না’। কিন্তু যারা ইতিবাচক চিন্তার মানুষ তারা ‘No’ এর মানে বোঝে- Next Opportunity অর্থাৎ ইতিবাচক চিন্তার মানুষ ঘড় থেকে পরবর্তী সম্ভাবনা খোঁজে। তাই পজিটিভ ও প্রোএকটিভ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। ক্যাম্পাস’র সকল কর্মকান্ডই পজিটিভ ও প্রোএকটিভ ধারণা থেকে উৎসারিত। কাজেই তোমরা যারা ক্যাম্পাস’র প্রশিক্ষণার্থী, তোমরাও ক্যাম্পাস’র ইতিবাচক ধ্যান-ধারণায় উদ্বুদ্ধ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
ডাঃ ফরাজী বলেন- সফল লোকেরা কাজকে কখনোই ছোট করে দেখে না বা অবহেলা করে না। তারা সব কাজকেই সমান গুরুত্বের সাথে নেয়। কেননা তারা জানে যে, কাজের মধ্যেই সাফল্য লুকিয়ে আছে। তোমাদেরকেও কাজকে গুরুত্ব দিতে হবে। কাজ সে ছোটই হোক আর বড়ই হোক; তাহলে তোমরাও জীবনে সফল হবে।
এই পৃথিবীতে আমরা কেউই থাকবো না, শুধু আমাদের কাজগুলো থাকবে। কাজেই ভালো কাজ করতে হবে, তাহলে কাজের মধ্যেই আমরা বেঁচে থাকবো; কাজের মাধ্যমেই আমাদেরকে মানুষ স্মরণ করবে। কবি নজরুল-রবীন্দ্রনাথ-জগদীশচন্দ্র বসু আজ আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তাঁদের কাজগুলো আছে; কাজগুলোর মধ্য দিয়েই তাঁদেরকে আমরা স্মরণ করি। কবির ভাষায়, এমন জীবন তুমি করিও গঠন- মরণে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন। তোমাদের এরকম জীবনের অধিকারী হতে হবে।
সুইজারল্যান্ডসহ উন্নত দেশগুলোতে দেখা যায়, মানুষ মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু আমাদের দেশে সহনশীলতার বড়ই অভাব। এখানে রাস্তায় কাউকে কোনো ঠিকানা বা এ ধরণের কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করলে দায় এড়িয়ে যেতে চায়। কিন্তু আমি সুইজারল্যান্ডে দেখেছি- কাউকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করলে তারা সর্বোচ্চ সাহায্য করার চেষ্টা করে। সত্যিকারের মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ হতে হলে তোমাদের এ ধরণের মানবিক গুণে গুণান্বিত হতে হবে।
করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে ডাঃ ফরাজী বলেন- বিশ্বে এই ভাইরাস এখন মহামারী আকারে ছড়িয়েছে। তবে এই ভাইরাসের জন্য আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতা এবং সতর্কতা অবলম্বন করে মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে। বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। জনসমাগম, ভীড়-ভাট্টা এড়িয়ে চলতে হবে। এসব বিষয়ে সর্তক থাকলে আশা করা যায়, এ ভাইরাস থেকে আল্লাহর রহমতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে।
ডাঃ ফরাজী বলেন- আমরা আজ মুজিববর্ষে পদাপর্ণ করেছি। ১৯২০ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মেছিলেন। ২০২০ সালে তাঁর ১০০ বছর পূর্ণ হলো, তাই এটা মুজিব শতবর্ষ। এই মুজিব শতবর্ষে পদার্পণ করার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে। আমরা সেই সুযোগ ও সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে আমাদের এবং দেশের উন্নয়নে নিজেদের উৎসর্গ করবো।
ডাঃ এম মোক্তার হোসেন
অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার ডাঃ এম মোক্তার হোসেন বলেন- ক্যাম্পাস’র ফ্রি ইংলিশ এন্ড স্মার্টনেস ফর লিডারশিপ কোর্সটি সত্যিই যুগপোযোগী কর্মসূচি। জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গঠনে ক্যাম্পাস’র অনবদ্য ভূমিকা একদিন ইতিহাসের পাতায় স্থায়ী আসন করে নেবে -এটা সুনিশ্চিতভাবে বলা যায়।
ডাঃ মোক্তার হোসেন বলেন- আমাদের ফরাজী হাসপাতালের সম্মানিত চেয়ারম্যান ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমনের আইডিয়োলজির সাথে ক্যাম্পাস’র কর্ণধার ড. এম হেলালের আইডিয়োলজির চমৎকার মিল আছে। তা হলো- মানবতার কল্যাণে কাজ করা। আমাদের চেয়ারম্যান ডাঃ ফরাজী স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে মানবতার কল্যাণ করে যাচ্ছেন। আর ড. এম হেলাল বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণ ছাত্র-যুবসমাজকে আধুনিক বিশ্বের উপযোগীরূপে গড়ে তুলছেন। ড. হেলালের এসব কল্যাণকর্মে আমাদের সকলেরই উদার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসা উচিত। আমরা ফরাজী পরিবার আমাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করবো।
ট্রেইনীদের উদ্দেশ্যে ডাঃ মোক্তার হোসেন বলেন, ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা আর অবিরাম চেষ্টাই মানুষকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেয়। ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা আর চেষ্টা ছিলো বলেই মানবতার জননী, বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকের ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে নিজস্ব অর্থে পদ্মাসেতু বাস্তবায়নের স্বপ্নপূরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর অগ্নিকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদ্মাসেতু উদাহরণ থেকে তোমাদের শিক্ষা নিতে হবে। জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আসবে, বাধা-বিপত্তি আসবে; সেসব পেরিয়ে তোমাদের সত্য, সুন্দর ও আলোর পথে যেতে হবে। ক্যাম্পাস তোমাদের সেই আলোর পথের অভিযাত্রী। ক্যাম্পাস’র যাত্রায় শামিল হলে তোমরা আলোর পথে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।
করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে ডাঃ মোক্তার হোসেন বলেন- সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছে। আমাদের দেশও আক্রান্ত হয়েছে। তবে করোনা নিয়ে এতো আতঙ্কের কিছু নেই। কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে আমরা এ ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারবো। তা হলো- বারবার সাবানপানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ মাছ-মাংস-দুধ-ডিম-শাক-সব্জি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আমাদের ফরাজী হাসপাতালের স্লোগান হলো- We Care, Allah Cure. অর্থাৎ আমরা চিকিৎসা করবো, সেবা দেবো; আর আরোগ্য করবেন আল্লাহপাক। কাজেই করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় ও আতঙ্কের কিছু নাই, আল্লাহপাককে ডাকতে হবে; তাঁর কাছে এই করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করতে হবে। করোনা ভাইরাস আল্লাহর হুকুমে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
তাজকেরা খায়ের
ওয়ার্ল্ড-ওয়াইড ফ্যামিলি লাভ মুভমেন্ট এর চেয়ারপারসন তাজকেরা খায়ের বলেন, বিশ্ব পারিবারিক ভালোবাসা আন্দোলনের চেয়ারপার্সন তাজকেরা খায়ের বলেন- ক্যাম্পাস আলোকিত জীবন গড়ার একটি উজ্জীবনী প্রতিষ্ঠান। তরুণ ছাত্র-যুবকদের আলোকিত জীবনের পথে পরিচালিত করার এক আলোকজ্জ্বল বাতিঘর। ক্যাম্পাস থেকে তরুণ ছাত্র-যুবকদের জীবন গড়ার দীক্ষা নিতে হবে। আলোকিত জীবন গঠন করে মানবকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে। তাহলে দেশ ও জাতি গঠনমূলক ক্যাম্পাস কার্যক্রমের সার্থকতা রচিত হবে।
ক্যাম্পাস’র মহতী কার্যক্রমসমূহে আজকের অনুষ্ঠানের অতিথিগণ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে আমি আশা করি।
ড. আলমাসুর রহমান
প্রোএকটিভ এন্ড পজিটিভ এটিচিউড আন্দোলনের প্রবক্তা ড. আলমাসুর রহমান বলেন- জীবনে সফলতার জন্য প্রোএকটিভ থাকা খুবই জরুরি। মনকে সবসময় পজিটিভ রাখতে হবে। অতীতের দুঃখ-বেদনা ও ভুল-ত্রুটিকে মন থেকে সরিয়ে দিতে হবে। সবসময় হাসি-খুশি থাকতে হবে। ক্যাম্পাস’র কল্যাণমুখী কার্যক্রমে অংশ নিয়ে ছাত্র-যুবকদের সফল জীবন গড়ে তুলতে হবে।
প্রধান অতিথি ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন প্রোএকটিভ এটিচিউডের একজন সফল মানুষ। প্রোএকটিভ মানসিকতার কারণে এই তরুণ বয়সেই তিনি ফরাজী হাসপাতালসহ বড় বড় সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পেরেছেন। একজন আইকনিক তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমাদের ছাত্র-যুবকদেরকেও তাঁর মতো প্রোএকটিভ মানসিকতা লালন করে নিজেদেরকে জীবনে সফলভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
ইউছুফ সাদেক
শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ইউছুফ সাদেক বলেন- ছাত্র-যুবকদের সফল জীবন গঠনের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস’র সকল কার্যক্রমই দেশ ও জাতি গঠনের লক্ষ্যে নিবেদিত। জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গঠনের লক্ষ্যে পরিচালিত। তরুণ ছাত্র-যুবকদের জীবন ইতিবাচক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সফল করাই ক্যাম্পাস’র লক্ষ্য। তাই আমাদের সকলকেই ক্যাম্পাস’র অনুপ্রেরণামূলক কর্মকান্ডে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া
ক্যাম্পাস’র ফ্রি ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পার্সন এডভোকেট এম জি কিবরিয়া বলেন- আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফরাজী হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন একজন বহুমাত্রিক প্রতিভার বর্ণিল গুণাবলির কর্মযোগী ব্যক্তিত্ব। মেধা ও কর্মনিষ্ঠার গুণে তিনি নিজেই আজ একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন। তরুণ বয়সেই তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। জাজিরা ফাউন্ডেশনসহ বহু প্রতিষ্ঠানের গুরুদায়িত্ব তিনি পালন করছেন। মানবকল্যাণই তাঁর জীবনের অন্যতম ব্রত। তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে ক্যাম্পাস’র প্রশিক্ষণার্থীদের অনেক কিছু শেখার আছে। তাঁকে অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা মহত্তর জীবনের সন্ধানলাভ করবে -এই প্রত্যাশাই করি।
তিনি বলেন- ক্যাম্পাস’র ২৪টিরও বেশি কল্যাণমুখী কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে সার্টিফাইড ছাত্র-যুবকদের কোয়ালিফাইড করে গড়ে তুলছে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস’র এসব কার্যক্রম দেশ-বিদেশে বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দিতে ‘স্টাডি সেন্টার’ নির্মাণের সুবৃহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করা রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে সরকারসহ বিত্তশালী উদারপ্রাণ মানুষের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। আজকের অনুষ্ঠানের অতিথিগণ তাঁদের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা তাদের সার্কেল থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে বিশ্বাস করি।
ড. এম হেলাল
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং সিএসডিসি’র মহাসচিব ড. এম হেলাল বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তরুণ চিকিৎসা-উদ্যোক্তা ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন এবং গেস্ট অব অনার ডাঃ এম মোক্তার হোসেন দু’জনই বহুমুখী প্রতিভা ও বর্ণিল গুণাবলির কর্মযোগী। মেধা-অধ্যাবসায় আর কর্মনিষ্ঠার কারণে তাঁরা আজ মানবসেবায় অনন্য কীর্তি হিসেবে গড়ে তুলেছেন ফরাজী হাসপাতাল এবং ডেন্টাল রিসার্চের মতো সুবৃহৎ চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান। আর্ত-মানবতার সেবায় নিবেদিত হয়ে তাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের হাসপাতালের স্লোগানটিই প্রমাণ করে তাঁদের মহত্ব। তাঁরা স্লোগান বলেছেন- We Care, Allah Cure.
ডাঃ ইমন ফরাজী বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়ে জানতে পেরেছেন যে- বঙ্গবন্ধু একা খাবার খেতেন না, কাউকে না কাউকে সঙ্গে নিয়ে খেতেন। এরপর থেকে ডাঃ ইমন ফরাজীও একা খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করেছেন; এখন তিনি খাওয়ার সময় কাউকে না কাউকে সাথে নিয়েই বসেন। এটি মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি নিদর্শন।
ডাঃ ইমন ফরাজী বয়সে নবীন হলেও কর্ম-অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এক অনুপম ব্যক্তিত্ব। তাঁর চিন্তা-চেতনা, জীবন-দর্শন সত্যিই এক বিমুগ্ধ বিস্ময়! তাঁর কাছ থেকে ইতিবাচক অনেক কিছুই শেখার আছে। আমাদের ট্রেইনীরা যদি এই তারুণ্যদীপ্ত চিকিৎসকের জীবনাদর্শ অনুসরণ করে, তাহলে তারাও তাঁর মতো উন্নত জীবন গড়তে সক্ষম হবে।
ড. হেলাল বলেন- ক্যাম্পাস নিত্য-নতুন আইডিয়া জেনারেট করে তা ছড়িয়ে দিচ্ছে সমাজে-জাতিতে ও বিশ্ব-পরিসরে। ছাত্র ও যুব উন্নয়নে ইংলিশ কোর্সের মতো যুগোপযোগী নানা কর্মসূচি পরিচালনা করে জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও আলোকিত জাতি গঠনে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ক্যাম্পাস’র এসব কল্যাণকর কর্মসূচিতে উদারপ্রাণ-দানশীল ব্যক্তিত্বগণের সমর্থন-সহযোগিতা এসকল কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে সক্ষম হবে।