॥ রাইসা হেলাল ॥
স্নাতক (সম্মান), ১ম বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
লেখক মোস্তাক আহমেদ এর ‘শৃঙ্খলাই সুরক্ষিত জীবন’ বইটি সম্প্রতি পড়লাম। বইটিতে লেখক মূলত শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপনের উপায় এবং এরূপ জীবন-যাপনের সুফল সম্পর্কে লিখেছেন। শিশু-ক্যাম্পাস’র পাঠকদের জন্য এ বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই এ সম্পর্কে লিখতে উৎসাহিত হয়েছি।
মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই শৃঙ্খলার প্রভাব ব্যাপক। শৃঙ্খলাবোধের অভাবে আমরা অনেক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হই। আমাদের জীবনে অনেক বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয় শুধুমাত্র শৃঙ্খলার অভাবে। আর তাই কিভাবে সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করা যায় সে সম্পর্কে লেখক এ বইয়ে পরিষ্কার ধারণা দিয়েছেন।
লেখক বইটিতে বোঝাতে চেয়েছেন যে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থাৎ ব্যক্তিগত, পেশাগত, শিক্ষাজীবন- সর্বক্ষেত্রেই শৃঙ্খলা অপরিহার্য। সুশৃঙ্খল হয়ে গড়ে উঠতে হলে সময়ানুবর্তী হতে হবে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই যদি ঠিক করে নেয়া যায়- আজ সারাদিন কী করব, কোন্ কাজের পর কোন্টি করব এবং তারপর যদি সে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা যায়, তাহলে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সুন্দরভাবে সময়মতো শেষ করা সম্ভব হবে। সময়ানুবর্তী লোক কোনো কাজ ফেলে রাখে না। সে ভালোভাবে জানে, সঠিক সময়ে কাজে হাত দিলে তা জমে থাকে না এবং কাজটি নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।
লেখকের মতে, শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার আরেক উপায় হল গোছালো হওয়া। কারণ অগোছালোভাবে কাজ করলে কাজ শেষ হতে সময় বেশি লাগে; কাজে অনেক ভুলও থেকে যায়। ফলে একই কাজ বার বার করতে হয়। এতে সময়, শ্রম ও অর্থের অপচয় হয়।
সুশৃঙ্খল জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ। যেকোন কাজ করতে হবে দায়িত্ব নিয়ে, কারণ ঐ কাজে কোনো ভুল থাকলে তার দায় নিজের উপরই পড়বে। তখন কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে আমরা যত্নবান হব। তাছাড়া কাজ করতে হবে পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের সাথে। যতক্ষণ কাজটি সুষ্ঠুভাবে শেষ না হচ্ছে ততক্ষণ লেগে থাকতে হবে।
এভাবেই আমরা যদি সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে থাকি, তাহলে জীবনের সর্বক্ষেত্রেই সাফল্য আসবে বলে লেখক মোস্তাক আহ্মাদ মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতে, এরূপ জীবন হল সুরক্ষিত জীবন। কারণ একজন সুশৃঙ্খল মানুষ থাকে ঝামেলামুক্ত, চিন্তাহীন, সর্বদা প্রস্তুত। ফলে তার জীবনে সমস্যা থাকে কম। এরূপ সফল, সুন্দর জীবনের জন্য আমি এখন থেকে সুশৃঙ্খল জীবন-যাপনে যত্নবান হব। ক্যাম্পাস পত্রিকার শিশু-ক্যাম্পাস কলামের পাঠকরাও সে পথে এগিয়ে আসবে বলে আশা করছি।