সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ লাভ এবং দায়িত্ব গ্রহণ করায় নয়া গভর্নর ফজলে কবিরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অভিনন্দন বার্তা পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকা ও ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র (সিএসডিসি)। সিএসডিসি’র প্রেসিডেন্ট ড. আনিসুজ্জামান এবং সিএসডিসি’র মহাসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক ড. এম হেলাল স্বাক্ষরিত অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়, একদিকে দেশ-উন্নয়নের গতিশীল অগ্রযাত্রার শুভ-সন্ধিক্ষণ এবং অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাসে সর্বাধিক স্পর্শকাতর মুহুর্তে আপনার চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব গ্রহণ দেশ ও জাতির জন্য আশাব্যঞ্জক।
আমরা আশা করছি, আপনার প্রাজ্ঞ-অভিজ্ঞ ও ডায়নামিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল হবে। ফলে দেশের আর্থ-বাণিজ্য এবং ব্যাংকিং সেক্টরের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংক অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে। তাছাড়া ছাত্র-যুবক, শিশু-কিশোরসহ আপামর জনগোষ্ঠীর মাঝে ব্যাংকিং সেবা বিস্তৃতকরণের মাধ্যমে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস।
জবাবে ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়া গভর্নর বলেন, আপনার মতো একজন সাহিত্য গবেষক, চিন্তাবিদ, মুক্ত বুদ্ধির স্বদেশী চেতনায় জাগ্রত, সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব এর নিকট থেকে এমন হৃদয়গ্রাহী অভিনন্দন বার্তায় আমি অভিভূত এবং কৃতজ্ঞ। অসাম্প্রদায়িক চেতনার মনীষী ড. আনিসুজ্জামান -আপনার জীবন কিংবদন্তীতুল্য। জীবনে থেমে থাকার জন্য আপনার জন্ম হয়নি। ৮০তম জন্ম জয়ন্তীতে পদার্পণ করেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস প্রফেসর, সিপিডি’র বোর্ড অব ট্রাস্টির সম্মানিত সদস্য, নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান, ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রেসিডেন্ট- আপনি দেশের শিল্পকলা, শিশু সাহিত্য ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভাবাদর্শ সৃষ্টিতে নিরন্তর পথ চলছেন। আপনার মতো গুণী মনীষীর অভিনন্দন আমাকে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনায় অবশ্যই বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক নীতি-কৌশলের কাম্য ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ এখন সময়ের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। দক্ষতা ও সতর্কতার সাথে যথানিয়মে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে।
১৯৫৫ সালের ৪ জুলাই ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফজলে কবির। তার পৈতৃক বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি উপজেলার হাসাইল গ্রামে। ফজলে কবিরের স্ত্রী মাহমুদা শারমিন বেনু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত।
ফজলে কবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। তিনি ১৯৮০ রেলওয়ের সহকারী ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এর তিন বছরের মাথায় প্রশাসনে যোগ দেন তিনি। ২০১২ সালে অর্থ সচিবের দায়িত্বে আসার আগে জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন ফজলে কবির। বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদেও ছিলেন তিনি। ৩৪ বছরের দীর্ঘ চাকরি জীবনে ফজলে কবির বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ ও মাঠপর্যায়ের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া ফজলে কবির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন একাডেমি ও বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে তিনি মহাপরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ২০১২ সালে অর্থসচিব হিসেবে যোগদানের আগে তিনি রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৮ সালে জাতিসংঘের ফিন্যান্স এবং বাজেট কমিটি অধিবেশনে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগ পর্যন্ত ফজলে কবির রাষ্ট্রায়াত্ত সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন।