প্রশাসনে চারজন সচিবকে সিনিয়র সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া জনপ্রশাসনে চার অতিরিক্ত সচিব ও ২১ যুগ্মসচিবের দফতর বদল করা হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
সিনিয়র সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া চার কর্মকর্তা হলেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ড. মোঃ আব্দুর রব হাওলাদার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
পদোন্নতি পাওয়া চার কর্মকর্তারই দপ্তর অপরিবর্তিত রয়েছে। এই চারজনকে নিয়ে জনপ্রশাসনে জ্যেষ্ঠ সচিবের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪।
প্রসঙ্গত, ‘সিনিয়র সচিব’ পদ সৃষ্টি করা হয় ২০১২ সালে। সর্বশেষ অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো অনুযায়ী সিনিয়র সচিবদের মূল বেতন ৮২ হাজার টাকা। সচিবদের মূল বেতন ৭৮ হাজার টাকা নির্ধারিত।
জ্যেষ্ঠ সচিবদের চেয়ে সরকারের দু’জন কর্মকর্তা বেশি বেতন পান; তাঁরা হলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব; যাঁদের মূল বেতন নির্ধারিত আছে ৮৬ হাজার টাকা।
মোঃ নজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের ছাতকে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালের নিয়মিত ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা নজিবুর রহমান ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। পদাধিকারবলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান তিনি।
এর আগে নজিবুর রহমান পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে ইকোনমিক মিনিস্টার, অর্থনৈতিক সামাজিক পরিষদে লিড ডেলিগেইট এবং ইউএনডিপি’র সহকারী আবাসিক পরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন নজিবুর। প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর একান্ত (পিএস) সহকারীও ছিলেন তিনি। তিনি ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর অবসরোত্তর ছুটিতে যাবেন।
সিনিয়র সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেলো বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ৪১ বাস্তবায়নে আরও বেশি করে কাজ করতে হবে।
কর্মক্ষেত্রের এ পদোন্নতি এনবিআর’র সব সহকর্মী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসর্গ করেন মোঃ নজিবুর রহমান।
সংসদ সচিবালয়ের সচিব ড. আব্দুর রব হাওলাদার এর আগে ধর্ম এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। তিনি প্রশাসন ৮২ ব্যাচের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব। এছাড়া তিনি ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন।
ড. জাফর আহমেদ খান পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৮১ ব্যাচের কর্মকর্তা মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে যোগদান করেন। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করেন।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব এবং একই বছরের ২৯ জুলাই সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান।
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে। চাকরিরত অবস্থায় ১৯৯২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের উইলিয়ামস কলেজ থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, ঢাকায় এক বছর মেয়াদি এনডিসি কোর্স সম্পন্ন করেন মোশাররফ।