বিধি-বহির্ভূতভাবে পরিচালিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সরকারি বিধিমালা অমান্য করে কোনো মেডিকেল কলেজ পরিচালিত হলে শুধু কার্যক্রম বন্ধই নয়, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও নেয়া হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষায়ই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিম্নমানের শিক্ষায় অর্ধ শিক্ষিত ডাক্তারের হাতে জনস্বাস্থ্য ছেড়ে দেয়া যায় না। সরকার কিছুতেই এই ঝুঁকি নিতে পারে না। মেডিকেল শিক্ষার মান নিয়ে কোনো আপোস করা হবে না।
জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি তিনটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম সমায়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনটি কলেজই ছিল নানা সমস্যায় জর্জরিত। অনুমোদনের চেয়েও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষক সংকট, ল্যাবরেটরির উপকরণ স্বল্পতা, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ঠিকমতো না দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে এই তিন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে। পরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন বিভাগের পরিদর্শন প্রতিবেদনে দেয়া সুপারিশের ভিত্তিতে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নীতিমালা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় ওই তিন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়।
জানা গেছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশের ৬৮টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দিতে পরিদর্শন কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিদর্শন কমিটি ইতোমধ্যে ২৫টি বেসরকারি কলেজের পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে। বাকিগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হবে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া কলেজগুলো পুনরায় চালু করতে ইতোমধ্যে একটি মহল চেষ্টা-তদ্বির শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক, বিএমডিসি’র প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাসহ ঢাকা ও বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা শিক্ষা অনুষদের ডিনগণ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মান নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বৈঠকে কমিটির রিপোর্ট পার্যালোচনা শেষে তিন কলেজের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।