॥ মাহীর হেলাল ॥
৮ম শ্রেণি, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল
এ বছর ২ এপ্রিলে অত্যন্ত জনপ্রিয় সিনেমা সিরিজ ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস’র ৭ম পর্ব বের হয়েছে। গত বছর থেকেই ভাবছি যে, এই সিনেমাটি বড় পর্দায় অর্থাৎ সিনেমা হলে গিয়ে দেখব। তাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। ইতোমধ্যে ঢাকার দু’টি সিনেমা হলে ছবিটি মুক্তি পেল। গত ১০ এপ্রিল আমি আমার ক্লাস-বন্ধুদের সাথে সিনেমাটি দেখার জন্য প্ল্যান করে মা-বাবার অনুমতি নিলাম। আমার বাকি ৩ বন্ধুও তাদের মা-বাবার অনুমতি নিল। ঠিক হলো আমার মা আমাদের চারজনকে নিয়ে যাবেন। আমরা সিনেমা হলে মুভি দেখব, আর মা আমার ছোট ভাইকে নিয়ে Toy Park এ সময় কাটাবেন। আবার মুভি শেষে সবাইকে বাসায় নিয়ে আসবেন।
প্ল্যান অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনে আমার বন্ধুরা আমাদের বাসায় চলে এল। সিনেমাটি দেখতে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমা হলে গেলাম। যাবার পথে মনে ছিল অনেক Excitement. মা ফোন করে সিনেমা হলে খবর নিলেন, টিকেট আছে কিনা। যে ব্যাক্তি ফোন ধরেছিল, সে জানালো টিকেট আছে; শো শুরুর ১ ঘন্টা আগে আসলেই হবে। কিন্তু সিনেমা হলে গিয়ে আমাদের পড়তে হলো বড় সমস্যায়। আমরা ঠিক করেছিলাম যে, ৩-৪০ এর শো দেখব; কিন্তু সেখানে যেয়ে দেখলাম ৩-৪০ এর কোনো টিকেট নেই। টিকেট কাউন্টারে বসা Sales man বললেন হঠাৎ অনেক দর্শক এসে শুধু ৩-৪০ এর শো নয়, এর পরের দু’টি শো’র টিকেটও কিনে ফেলেছে। ফলে রাত ৯টার শো ছাড়া আর কোনো টিকেট নেই। এত রাতে মুভি দেখে বাসায় ফিরব কত রাতে!
আমরা হাল না ছেড়ে সিদ্ধান্ত নেই যে, বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে যেয়ে মুভিটি দেখব। যমুনা ফিউচার পার্কে আর দেরি না করে চলে যাই বসুন্ধরায়। তাড়াহুড়ো করে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সেখানেও টিকেট শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের চার বন্ধুরই মন খারাপ হয়ে গেল। মা আমদের বোঝালেন; মন খারাপ করতে বারণ করে বললেন উনি আমাদের খাওয়াবেন, যা খেতে চাই তাই। তাৎক্ষনিক একটু মন খারাপ হলেও পরে নিজেকে বোঝালাম, হলে বসেই সিনেমা দেখতে হবে কেন? এই সিনেমাটি বাসায় বসে আরাম করেও দেখতে পারব। তাই সবাই Cheer up হয়ে একত্রে খাওয়া-দাওয়া করলাম, মজা করলাম।
আমি এই Experience থেকে বেশ কিছু জরুরি বিষয় শিখেছি। প্রথমত, সিনেমা হলে মুভি দেখতে হলে, বিশেষ করে যেসব সিনেমা অনেক বিখ্যাত সেগুলোর ক্ষেত্রে শো এর অন্তত একদিন আগে টিকিট কাটতে হবে। যদি কোনো কারণে টিকিট না কেনা যায়, তাহলে দেখার দিন সিনেমা শুরু হওয়ার ৩-৪ ঘন্টা আগেই সিনেমা হলে যেতে হবে। এরকম ক্ষেত্রে কোনো সময়ই মন খারাপ করা যাবে না বরং এরকম পরিস্থিতিতে কীভাবে সময়ের ভালো ব্যবহার করা যায়, তার চেষ্টা করতে হবে।
বন্ধুরা, যেকোনো পরিস্থিতিরই ভালো দিক এবং মন্দ দিক দু’টোই থাকে। কোনো একটি অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিতে মন্দ দিকের পরিমাণ যদি বেশি থাকে এবং তাতে যদি সামান্য পরিমাণেও ভালো দিক খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে সেই ভালোর দিকে তাকিয়ে মন্দ দিককে ভুলে থাকতে পারলে নিজের মনের জগতে শান্তিলাভ করা যায়। তাই তোমরা যদি যে কোনো দুঃখজনক পরিস্থিতিতে কেবল খারাপ দিকে না তাকিয়ে ভালো দিকে তাকাও, পজিটিভ দিকে প্রোএকটিভ এটিচিউডে তাকাও তাহলে সব পরিস্থিতিতেই আমরা সবাই ভালো থাকব।
লেখকের ওয়েবঃ www.maheer.helal.net.bd
Email: maheer7helal@gmail.com