রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা সমুন্নত রেখে এগিয়ে যেতে তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) দ্বিতীয় সমাবর্তনে বক্তৃতাকালে রাষ্ট্রপতি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে স্বাধীনতাযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস জানতে হবে। বাঙালির শিকড় কোথায় এটা তোমাদের জানতে হবে। আমার বিশ্বাস তরুণ প্রজন্ম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা সমুন্নত রেখে সামনে এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের বিপথগামী কিছু ছাত্র ও শিক্ষকের জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত হওয়ার খবর শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাই ক্ষুন্ন করছে না, পুরো জাতির মর্যাদাও ক্ষুণœ করছে। যারা মেধাবী ছাত্রদের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত হতে উস্কানি দিচ্ছে তাদেরকে অবশ্যই শনাক্ত করা হবে এবং পুরোপুরি মূলোৎপাটন করা হবে।
রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠোর শৃঙ্খলা বজায় রাখা, নিয়মিত পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ এবং খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার পরামর্শ দেন। ডিগ্রিপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, তোমরা এখন গ্র্যাজুয়েট, দেশের মূল্যবান মানবসম্পদ। এজন্য তোমাদের পরিবার, সমাজ, দেশ, জাতি এবং বিশ্ব সমাজের প্রতি তোমাদের দায়দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিনও বক্তৃতা করেন। সমাবর্তন বক্তৃতা দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজউদ্দিন।
আইনজীবী পেশাকে একটি মহৎ পেশা হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি অসহায় ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোনো ফি না নিয়ে অন্তত একটি মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আপনাদের প্রতি একটি অনুরোধ রাখতে চাই, প্রত্যেক আইনজীবী বছরে অন্তত একটি মামলা অসহায় দুস্থদের কাছ থেকে কোনো ফি না নিয়ে পরিচালনা করবেন। আপনারা যদি এটি করেন তাহলে সমাজে পরিবর্তন আসবে এবং সাধারণ মানুষ আইনের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল হবেন।
অ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি মুলতান উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম। এ সময় টাঙ্গাইলের সংসদ সদস্যরা, জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।