গত ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ক্যাম্পাস পরিচালিত ইংলিশ এন্ড স্মার্টনেস কোর্স ফর লিডারশিপ এর ১৭তম ব্যাচের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্টে দেশের গর্ব, প্রতিভাদীপ্ত গবেষক, বিটিআরসি’র অনন্য-সুযোগ্য চেয়ারম্যান ড. শাহ্জাহান মাহমুদ; গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন ৮০’র দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ থেকে ফার্স্টক্লাসধারী ব্রিলিয়ান্ট স্কলার, কবি-সাহিত্যিক-গ্রন্থকার-নাট্যকার-গীতিকার, প্রবীণ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কলামিস্ট, বর্তমানে সরকারের অতিঃসচিব পদমর্যাদায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক (বার্তা) কবি নাসির আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং ক্যাম্পাস সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিএসডিসি) এর মহাসচিব ড. এম হেলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিশ্বব্যাংক বিষয়ক কনসালটেন্ট এবং ওয়ার্ল্ড-ওয়াইড ফ্যামিলিলাভ মুভমেন্টের চেয়ারপার্সন তাজকেরা খায়ের; সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন কমিটির সদস্য, সরকারি পল্লি সঞ্চয়-ব্যাংকের পরিচালক এবং বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ; সোফেন ইনোভেশন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. খান আসাদুজ্জামান; ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পারসন এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া; কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার উপদেষ্টা ছড়াকার মোহাম্মাদ মোস্তফা প্রমুখ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ক্যাম্পাস’র শিক্ষানবিশ আনতারা রাইসা ও স্কাউট লিডার মাহীর হেলাল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদ্বয়কে পুষ্পমাল্যে বরণ করে নেয়া হয় এবং উপহার হিসেবে অর্পণ করা হয় ক্যাম্পাস জ্ঞানমেলা সিরিজে প্রকাশিত সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, আত্মোন্নয়ন ও জাতি জাগরণমূলক বিভিন্ন বই; ক্যম্পাস’র নিজস্ব গবেষণায় প্রকাশিত ২টি মডেল এবং বিভিন্ন সিডির সেট ও সুভ্যেনির।
এরপর অতিথিদ্বয়কে ক্যাম্পাস’র সম্মাননা ক্রেস্ট অর্পণ করা হয়। স্ব স্ব ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় তাঁদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট অর্পণ করেন সিএসডিসি’র মহাসচিব ড. এম হেলাল।
ভালো কাজে পুরস্কার এবং মন্দ কাজে তিরস্কার ক্যাম্পাস’র চিরায়ত রীতি; সে ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাস’র ৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। তাঁরা হলেন ক্যম্পাস পত্রিকার কন্ট্রিবিউটর, কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার উপদেষ্টা ছড়াকার মোহাম্মাদ মোস্তফা; ক্যাম্পাস’র সহকারী পরিচালক কামাল হোসেন; ওয়েব ডেভেলপার রিমেল বড়–য়া; জুনিয়র এক্সিকিউটিভ সৈকত চন্দ্র দে; ইসমাইল হোসেন; ইংরেজি ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া।
ইংলিশ কোর্সের ট্রেইনীরা যাতে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে দেশোন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে, সে কামনায় অতিথিদ্বয় আশা জাগানিয়া মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। এরপর সফল ট্রেইনীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়। এ ব্যাচের বেস্ট পারফর্মার এর পুরস্কার অর্জন করেন রিক্তা ইয়াসমিন; সনদ ও পুরস্কার বিতরণ শেষে শুরু হয় বক্তৃতাপর্ব।
ক্যাম্পাস পরিচালিত ইংলিশ এন্ড স্মার্টনেস কোর্স, বিশ্বায়নের যুগে একটি অসাধারণ উদ্যোগ
-ড. শাহজাহান মাহমুদ
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, প্রতিভাদীপ্ত-খ্যাতিমান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন ক্যাম্পাস’র আজকের এ অনুষ্ঠানে এসে আমি অত্যন্ত চমৎকৃত ও আনন্দিত হয়েছি। বিশেষ করে ছাত্র-তরুণদের উচ্ছলতা আমাকে বেশ আশান্বিত করেছে। এরাইতো শক্ত হাতে এদেশের হাল ধরবে। ক্যাম্পাস পরিচালিত ইংলিশ এন্ড স্মার্টনেস কোর্স ফর লিডারশিপ ছাত্র-তরুণদেরকে ইংরেজি উচ্চারণ, জড়তা দূরীকরণ এবং অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলায় পারদর্শী করছে, যা বিশ্বায়নের যুগে একটি অসাধারণ উদ্যোগ।
ছাত্র-তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ক্যাম্পাস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তোমরা ইংরেজিতে সুন্দরভাবে অনুভূতি ব্যক্ত করেছ এটি আমাদেরকে আশান্বিত করে। তোমরা এ চর্চা অব্যাহত রাখবে, তাহলে তোমরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।
ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বুয়েট থেকে পাস করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলাম। ৩০ বছর কাজ করেছি সেখানে। কিন্তু মন বসাতে পারিনি। ভাবলাম, দেশের জন্য কিছু করতে হবে। দেশে ফিরে আসার পর আমার উপর বিরাট দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, যা আমি সানন্দে গ্রহণ করেছি। দেশ ও জাতিকে কিছু দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ক্যাম্পাস জ্ঞানের যে মশাল জ্বালিয়েছে, তা থেকে এখন লক্ষ আলো প্রজ্জ্বলিত হয়েছে; ক্যাম্পাস সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করছে
কবি নাসির আহমেদ
অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার, ৮০’র দশকের খ্যাতিমান কবি-নাট্যকার-গীতিকার- কলামিস্ট-বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিক-সমাজচিন্তক নাসির আহমেদ বলেন ক্যাম্পাস অফিসে এসে আমি বেশ স্পন্দিত হয়েছি। ড. এম হেলাল এর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় যে বহুমুখী ও বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হচ্ছে তাতে ক্যাম্পাস এমনিভাবে এগিয়ে চলেছে, যেন এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন এতদঞ্চলে উন্নয়নের রোল মডেল, বিশ্বসভায় একটি সম্মানিত দেশ।
কবি নাসির আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাস’র শিক্ষা-পদ্ধতি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ; তাদের ইংরেজি শিক্ষাদানের কৌশল অভিনব, ব্যতিক্রমী। একজন সুযোগ্য শিক্ষক কত আন্তরিকতা দিয়ে এ প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন খানিকটা লক্ষ্য করে আমি এর মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পেরেছি। আমার মনে হয়, আমিও এ ক্লাসে ভর্তি হয়ে যাই! জ্ঞানীরা বলেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। যে কোনো বয়সে শেখা যায়। ক্যাম্পাস জ্ঞানের যে মশাল জা¡লিয়েছে, তা থেকে এখন লক্ষ আলো প্রজ্জ্বলিত হয়েছে। আলোয় আলোয় সম্মিলন হয়েছে। ক্যাম্পাস সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করছে।
নিজের সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে কবি নাসির আহমেদ বলেন জীবনে অনেক কিছু হতে চেয়েছি, কিন্তু আমার জন্য নির্ধারিত ছিল কাব্যভুবন, সংস্কৃতি-অঙ্গন; সেখানে আমি স্থিত হয়েছি। মানুষের অসাধ্য কোনো কাজ নেই। সাধনা, প্রেরণা ও বলিষ্ঠ প্রত্যয় থাকলে সাফল্য আসবেই। আমাদের পূর্বসুরি ছড়াকার মোহাম্মাদ মোস্তফাকে ক্যাম্পাস অনুষ্ঠানে পেয়ে আমি খুব আনন্দিত হয়েছি, ফেলে আসা দিনগুলোর কথা স্মৃতিপটে ভেসে উঠেছে।
ড. নাজনীন আহমেদ
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, ক্যাম্পাস’র অনারারী রিসার্চ ডিরেক্টর ড. নাজনীন আহমেদ ইংরেজি শেখার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, আজকাল ইংরেজির ব্যবহার সর্বব্যাপী। ইংরেজি বলতে না পারার কারণে ভালোভাবে কম্পিউটার চালনা করতে পারলেও, এমনকি অন্যান্য যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকতে হয়। এজন্য ইংরেজি শেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পাস করে বের হবার পরও ছাত্র-যুবকরা ইংরেজি বলতে পারে না। সে প্রেক্ষাপটে ইংরেজি শেখার জন্য কোর্স করার চিন্তা করলেও ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে অনেকের পক্ষে ইংরেজি কোর্স করা সম্ভব হয় না। এসব বিবেচনায় ক্যাম্পাস বিনামূল্যে এ কোর্স পরিচালনা করছে।
এছাড়াও ছাত্র-যুবকদের উন্নয়নে ক্যাম্পাস আরও কর্মসূচি পরিচালনা করছে। যেমন ডায়নামিক কম্পিউটার কোর্স, ফ্রি মেডিটেশন কোর্স, প্রোএকটিভ সেমিনার, ডিজিটাল স্টার এওয়ার্ড প্রোগ্রাম, শিক্ষানবিশ কর্মসূচি ইত্যাদি। এসব কর্মসূচি পরিচালনার মাধ্যমে ক্যাম্পাস ছাত্র-যুবকদেরকে আধুনিক বিশ্বের উপযোগী করে গড়ে তুলছে।
তাজকেরা খায়ের
বিশিষ্ট সমাজসেবী, বিশ্ব ভালোবাসা আন্দোলনের চেয়ারপার্সন তাজকেরা খায়ের বলেন ক্যাম্পাস সবসময় ভালো কিছু করার চেষ্টা করে, তাদের পারফরমেন্স অনেকের চেয়ে আলাদা। ক্যাম্পাস সুন্দরের পূজারি, ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠা এবং আলোকিত জাতি গঠনের সংগ্রামে তারা নিবেদিত।
তিনি বলেন আজকের অনুষ্ঠানের অতিথিদ্বয় ক্যাম্পাস অনুষ্ঠানে যোগদান করে ছাত্র-তরুণের মনে জ্বালিয়ে দিয়েছেন আশার আলো। এ আলোয় ছাত্র-তরুণরা নিজেদের জীবনকে আলোকিত করে তুলবে, দেশকে ভালোবাসবে, দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করবে: ক্যাম্পাস’র এ শিক্ষাকে তারা দেশময় ছড়িয়ে দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
ড. খান আসাদুজ্জামান
সোফেন ইনোভেশন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ড. খান আসাদুজ্জামান বলেন ক্যাম্পাস তিন দশক ধরে সমাজ উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মধারার পাশাপাশি সুন্দর ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সাধনা করেছে, সংগ্রাম করেছে পরিশীলিত জীবন গড়ার, শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার। ড. হেলাল এবং ড. নাজনীন এর শ্রম, নিষ্ঠা আর তারুণ্যদীপ্ত পরিচালনার গুণে ক্যাম্পাস নামের বৃক্ষটি আজ ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়েছে, সময়ের সুযোগ্য সাথী তরুণ সমাজকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করছে। আমরা সবাই ক্যাম্পাস’র পাশে থাকব, ক্যাম্পাস’র রঙে রাঙিয়ে নেব আমাদের মন, শানিত করব দেশ উন্নয়নের কর্মধারা।
এডভোকেট এম গোলাম কিবরিয়া
ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পারসন এম জি কিবরিয়া বলেন, Campus will be another Bangladesh. তারা সার্টিফাইড ছাত্র-তরুণদেরকে কোয়ালিফাইড করছে। এরফলে ছাত্র-যুবকরা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের জন্য নিজেদেরকে যোগ্য করে গড়ে তোলার সুযোগ পাচ্ছে। তাই ক্যাম্পাস’র এসব কর্মসূচিতে সহযোগিতা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন আপনারা আজ যে সার্টিফিকেট পেয়েছেন, সে সার্টিফিকেট কোনো ফল বয়ে আনবে না, যদি না নিয়মিত প্রাকটিস করেন। সাফল্য অর্জনের জন্য নিরলস সাধনার প্রয়োজন। প্রথম জীবনে কষ্ট না করলে পরবর্তী জীবনে সুখ-শান্তি আসবে কোত্থেকে!
এম হেলাল
ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং সিএসডিসি’র মহাসচিব ড. এম হেলাল বলেন, প্রধান অতিথি ড. শাহজাহান মাহমুদ বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে টেলিকমিউনিকেশন ভুবনে এসেছেন; প্রজ্ঞা ও প্রতিভার সমন্বয়ের এ কর্মযোগী ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে জাতি অনেক আশা করে; তিনি সফল হবেন এ আমাদের প্রত্যাশা। অন্যদিকে গেস্ট অব অনার কবি নাসির আহমেদ সংগ্রামী জীবনের অধিকারী সফল ব্যক্তিত্ব; ইচ্ছাশক্তি তথা জেদ থাকলে জীবনে সফল হওয়া যায় তিনিই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তাঁদের দেখে আমাদের ছাত্র-তরুণরা নিজেদের জীবনে সাফল্য বয়ে আনার প্রেরণা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
ড. হেলাল বলেন, ক্যাম্পাস জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গঠনে নিবেদিত। ক্যাম্পাস ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। এ বিরাট দায়িত্ব ক্যাম্পাস কাঁধে নিয়েছে দেশপ্রেম, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। তাই ক্যাম্পাস’র এসব কল্যাণকর কর্মসূচিতে জ্ঞানী-গুণী, সচেতন দেশপ্রেমী ব্যক্তিত্বগণের সমর্থন-সহযোগিতা একান্ত কাম্য।