বিশেষ খবর



Upcoming Event

বাঙালির বিশ্বজয়ঃ বিলেতে বাঙালি স্পিকার

ক্যাম্পাস ডেস্ক প্রতিবেদন

লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের প্রথম ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নারী ও সর্বকনিষ্ঠ স্পিকার সাবিনা আক্তার। ১৭ মে স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পেলেন তিনি। ২০১৫ সালের উপনির্বাচনে টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টি থেকে স্টেপনি এলাকার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে ডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
ব্রিটেনের লেবার পার্টির সমর্থক সাবিনার বাবা। তিনিই ছোট সাবিনাকে পাঠাতেন দলের লিফলেট বিলি করতে। সাবিনা আক্তার হেসে বললেন, আব্বা আমাকে পুশ করতেন মানুষের দরজায় দরজায় ক্যাম্পেইনে যাওয়ার জন্য, লিফলেটিং করার জন্য। আমার বন্ধুবান্ধবরা, বিশেষ করে বাঙালি কমিউনিটির কেউ তখন রাজনৈতিক ক্যাম্পেইন করত না। সেখান থেকেই আসলে শুরু।
অথচ ছোটবেলায় তাঁর পছন্দের বিষয় ছিল বিজ্ঞান ও নাটক। স্কুলজীবনে নাচ-গান সব কিছুতেই অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু হয়ে গেলেন রাজনীতিবিদ। স্কুলে স্থানীয় লেবার পার্টির প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। ২০১০ সাল থেকে সরাসরি লেবার পার্টির সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করেন। মূলত বাবার অনুপ্রেরণায় শুরু হয় রাজনৈতিক পথচলা।
সাবিনা আক্তারের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পূর্ব লন্ডনে। মেডিসিনের ওপর পড়াশোনা করেছেন লন্ডনের সেন্ট জর্জ ইউনিভার্সিটিতে। বাবা ফারুক আলী, মা সুরাইয়া আক্তার। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সাবিনা দ্বিতীয়। অন্য ভাই-বোনরা রাজনীতি না করলেও রাজনীতির আদ্যোপান্ত খবর রাখেন। সাবিনা বলেন, তারা আমার চেয়েও বেশি রাজনীতিসচেতন।
বাংলাদেশের কোনো স্মৃতি আছে কি না জানতে চাইলে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসলেন। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল গ্রামে বাপের ভিটা। ছোটবেলায় দুই বছর পরপরই দেশে যাওয়া হতো। দেশের চা-বাগান, ঝরনা, বিস্তীর্ণ হাওর, ধানক্ষেত সবই পছন্দের। বিশেষ করে ছোটবেলায় বর্ষায় নৌকায় চড়া স্মৃতিতে উজ্জ্বল। কাউন্সিলর হওয়ার পর দেশে যাওয়াতে ছেদ পড়েছে। তবে এই বছরের শেষ দিকে আবার বাংলাদেশে বেড়াতে যাচ্ছেন।
ভালোবাসেন বাংলাদেশের মানুষ ও তাদের আতিথেয়তা। দেশের গরিব-অসহায় মানুষকে সাধ্যমতো সাহায্য করছেন ছোটবেলা থেকেই। বাংলাদেশের নারীদের অগ্রযাত্রাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করেন সাবিনা। বাংলাদেশের নারীরা সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। বিশেষ করে রাজনৈতিকভাবে নারীদের অংশগ্রহণ ও ভূমিকাকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। আর বলেন, এই অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাই সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে। মা-বাবার মুখে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গল্প শুনে শুনেই বড় হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে আপনজনদের হারিয়েছে তাদের পরিবার।
ব্রিটেনের রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের উপস্থিতি ও অবস্থান দিন দিন সুদৃঢ় হচ্ছে, ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান? জানতে চাইলে বলেন, এই প্রশ্নটা অনেকেই করেন। একদম মন থেকে বলছি, কিছু হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করছি না। মানুষের জন্য কাজ করতে ভালোবাসি। মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। আমি যখন রাজনীতিতে ছিলাম না, কাউন্সিলরও ছিলাম না, তখনো লোকজন আসত, বিশেষ করে নারীরা, এই ফরম সেই ফরম কত কিছুই আমাকে পূরণ করে দিতে হতো। ২০১৪ সালে নির্বাচনে আমাকে দল যে এলাকায় নির্বাচন করতে দিয়েছিল, সেখানে কাউকে চিনতাম না। সেখানে প্রথমবার হেরেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয়বার ২০১৫ সালের উপনির্বাচনে যখন আমি নির্বাচন করতে চাইনি, সেই এলাকার লোকজনই আমাকে নির্বাচন করিয়েছে এবং বিজয়ী করিয়েছে। রাজনীতি করি না-করি, মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই। মা-বাবা এটাই আমাকে শিখিয়েছেন।
কাউকে অখুশি করতে চান না, চেষ্টা করবেন সবার সঙ্গে অন্তত দেখাটুকু করতে। এত ব্যস্ততায় আরেকটি মানুষ তাঁকে নিভৃতে সাহায্য করেন, সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, সাবিনা আক্তারের স্বামী।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img