রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানোকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদান করেন।
বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রম সময়োপযোগী করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে তোলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল দায়িত্ব হলেও সৃজনশীলতা ও স্বাধীন চিন্তার কেন্দ্রস্থল হিসেবেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসারের ফলে জ্ঞানের পরিধি বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির প্রসার এ মাত্রাকে আরো বেগবান করেছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তাই উচ্চশিক্ষার পাদপীঠ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আধুনিক ও সর্বশেষ উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে জ্ঞান বিস্তারে উদ্যোগী হতে হবে। বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে কারিকুলামেও সময়োপযোগী পরিবর্তন আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ এই সমাবর্তনে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানোকে ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেয়া হয়। মূলত তাঁকে এই ডিগ্রি প্রদান উপলক্ষেই বিশেষ এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।
রাষ্ট্রপতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সফল বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে আইএইএ’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন ও পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে আইএইএর সহায়তা অরিহার্য।
রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আবদুল হামিদ আইএইএ’র মহাপরিচালককে ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদানকালে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও অস্ত্রবিস্তার রোধের কূটনীতির পাশাপাশি পারমাণবিক জ্বালানি ইস্যুতে তাঁর ব্যাপক অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার বিশ্বাস এটি আইএইএ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন হবে। বাংলাদেশের মানুষ এ দেশের পারমাণবিক কর্মসূচিতে আইএইএর ভূমিকায় খুবই কৃতজ্ঞ।
সমাবর্তনে আইএইএ মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো ‘শান্তি ও উন্নয়নে পারমাণবিক শক্তি’ শীর্ষক বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, পরমাণু বিদ্যুতের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এখন গোটা বিশ্বেই পরমাণু শক্তির ব্যবহার জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বাংলাদেশও এই পথে সফলভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে।
ঢাবি ভাইস চ্যান্সেলর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, সংসদ সদস্য, কূটনীতিক, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।