আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৬৬ হাজার ৪০১ কোটি টাকা শিক্ষায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট বাজেটের ১১.৬৯ শতাংশ। আর চলতি অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ৬১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১১.৬৮ শতাংশ। ফলে চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে পাঁচ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়লেও শতাংশে তেমন একটা বাড়েনি।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৪ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, চলতি অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। একই মন্ত্রণালয়ে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা, চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৭ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। তবে শিক্ষা খাতের বাজেট বরাদ্দের বড় অংশই ব্যয় হচ্ছে অনুন্নয়ন খাত অর্থাৎ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতায়।
প্রায় ১০ বছর পর চলতি অর্থবছরে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিলো। দুই হাজার ৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা আসলেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয় দুই হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান। এখনও সাত হাজারের অধিক নন এমপিও প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য অপেক্ষা করছেন। এছাড়া অনার্স-মাস্টার্স কলেজের শিক্ষকরাও এমপিওভুক্তির জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করছেন। ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের আগামী অর্থবছরেও প্রত্যাশা ছিল, আগামী অর্থবছরে এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ থাকবে। কিন্তু এবারের বাজেটে নতুন এমপিওভুক্তির বরাদ্দের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়নি।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে শিক্ষার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় মোট বরাদ্দের অন্তত ১৫ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দের দাবি তুলেছিলেন শিক্ষাবিদরা। শিক্ষা ও প্রযুক্তি মিলিয়ে মোট বাজেটের ১৫.১ শতাংশ বরাদ্দ থাকলেও একক খাত হিসেবে শিক্ষায় বরাদ্দ ১১.৬৯ শতাংশ। ইউনেসকো দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৬ শতাংশ অথবা মোট বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলে আসছে। তবে গত তিন বছর ধরেই শিক্ষায় বরাদ্দ ১২ শতাংশের আশেপাশেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করাই হবে আগামী অর্থবছরে আমাদের এ খাতের মূল কৌশল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণসহ বিভিন্ন কাজ আমরা করে যাচ্ছি। জাতীয় স্কুল মিল নীতি ২০১৯ এর আলোকে সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছি। সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুটি করে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করতে যাচ্ছি। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য নানা উদ্যোগ, আইসিটি ল্যাবসহ যেসব ব্যতিক্রমী কাজ আমরা শুরু করেছি, তা ২০২০-২১ অর্থবছরেও অব্যাহত থাকবে।