বিশেষ খবর



Upcoming Event

বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে

ক্যাম্পাস ডেস্ক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
img

অবরোধ-হরতালে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনোমতে চললেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছিল চরমভাবে। সেখানে ক্লাস-পরীক্ষা সবই শুক্র-শনিবারকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল।
এ পরিস্থিতিতে ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) হরতাল-অবরোধের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখা ও ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে। তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। পুরোপুরি ক্লাস শুরু করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আগামী সপ্তাহ থেকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সূচিও দিয়ে দিয়েছে। অবশ্য এখনো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস শুরু করতে পারেনি।
বনানীতে সাত-আটটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সাধারণ সময়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরগরম থাকে শিক্ষার্থীদের পদচারণায়।
ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীকে দেখা গেছে। তবে নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি ছিল।
এক শিক্ষার্থী বলেন, হরতালে শুক্র ও শনিবারে ক্লাস হচ্ছে। পত্রিকায় ইউজিসি’র নির্দেশ বিষয়ক খবর পড়ার পর জানতে এসেছি, প্রতিদিনই ক্লাস হবে কি না। আমার বাসা উত্তরায়। হরতালে আসতে আমার কোনো সমস্যা হবে না। তবে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ থেকেও আসে। তাদের আসতে বেশি সমস্যা হবে।
আরেক ছাত্র মোঃ আজম বলেন, ‘টেক্সটাইলে পড়ার জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রাইম এশিয়ার নাম রয়েছে। আমি সাভারে বোনের বাসায় থাকতাম। কিন্তু ওখান থেকে ক্লাস করা সম্ভব নয়। তাই এ মাসে খিলক্ষেতে বন্ধুদের সঙ্গে মেসে উঠেছি।’
প্রাইম এশিয়ার উপাচার্য ড. গিয়াস উদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এখন পুরোদমে খোলা। ক্লাস-পরীক্ষা সবই শুরু করেছি। আগে দূরের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে পরীক্ষাগুলো শুক্র-শনিবারে নেয়া হতো। ইউজিসি’র নির্দেশের পর হরতালেও পুরোপুরি খোলা থাকছে বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীরাও আসছে।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার এয়ার কমোডর (অবঃ) ইসফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘গত সপ্তাহেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ২ মার্চ থেকে ক্লাস চালু করার বিষয়ে। এর মধ্যেই ইউজিসি নির্দেশ দিয়েছে। এখন পুরোপুরি ক্লাস-পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সন্তোষজনক। অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো হরতালে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতেও ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছিল শুক্র ও শনিবারে। ইউজিসি’র নির্দেশের পর কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রয়েছে দাবি করলেও শিক্ষার্থীরা বলছে ভিন্ন কথা।
ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের এখন মিডটার্ম পরীক্ষা চলছে। আগামী পরীক্ষা হবে শুক্রবারে। কর্মদিবসগুলোতে এখনো ক্লাস শুরুর নোটিশ দেয়া হয়নি। শুক্রবারে যাওয়ার পর জানতে পারব আগামী সপ্তাহ থেকে স্বাভাবিকভাবে ক্লাস হবে কি না।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতেও খুব বেশি শিক্ষার্থীকে দেখা যায়নি। তবে প্রশাসন বিভাগ খোলা ছিল। ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ শহুল আফজাল  বলেন, ‘পুরোদমেই ক্লাস-পরীক্ষা চলছে। গত এক মাসে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্যই শুক্র-শনিবারেও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখা হয়েছে।’
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘এখনকার হায়ার এডুকেশন টেকনোলজিও নলেজ নির্ভর। তাই শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাটা খুবই জরুরি। অনন্তকাল ধরে চলা হরতাল-অবরোধে তো ক্লাস বন্ধ রাখা যাবে না।’ তিনি বলেন, খোলার প্রথম দিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকলেও গত দুই দিনে অনেক বেড়েছে। একটা ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস কম হচ্ছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। প্রসঙ্গত, অবরোধের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা চললেও হরতাল শুরু হতেই স্বাভাবিক শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ হতে থাকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। একপর্যায়ে শুক্র-শনিবারকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে পড়াশোনা। ২২ ফেব্রুয়ারি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল, নর্থসাউথ, ব্র্যাক প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে আবার বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনের জের ধরে কিছু শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশ ২৮ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধান্ত নেয়, আন্দোলনের জন্য কোনো শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত হলে তাকে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে না। এরপর ১ মার্চ ইউজিসি উপাচার্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে হরতালে ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার নির্দেশ দেয়।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img