ঘর—সংসারের ক্ষেত্রে তারাই যোগ্যতা ও সাফল্যের স্বাক্ষর রাখেন, যারা নিজ ত্রুটি সংশোধনে বদ্ধপরিকর এবং অন্যের ত্রুটিকে ক্ষমাসুন্দর ও উদার দৃষ্টিতে গ্রহণ করে সেসব সংশোধনের অব্যর্থ প্রচেষ্টায় নিবেদিত। এতে আনন্দ—কষ্ট অনুভবের কিংবা হার—জিতের চাইতে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার গুরুত্ব অনেক বেশি; যা সুশৃঙ্খল মানব জীবনের জন্য এমনকি স্রষ্টার কৃপালাভের জন্যও খুবই প্রয়োজন। তাইতো অজস্র বৈপরীত্য নিয়ে একজন অন্যজনকে সহ্য করে যাওয়া কিংবা একমত না হয়েও মতপার্থক্যকে মেনে নেয়াই হচ্ছে শান্তিপ্রিয় মানুষের সংসার—পরিবার—সমাজ। অর্থাৎ সংসার ও পরিবার সুখের হয় তখনই, যখন পরস্পরের ভুল ফুটে ওঠে ফুল হয়ে।
দাম্পত্য জীবনে একজন অন্যজনের কমতি পুষিয়ে দেয়া, সঙ্গীর প্রেরণা আর সহশক্তি ও সহ্যশক্তি হয়ে সর্বান্তকরণে পাশে থাকা এবং এসব ইতিবাচক চর্চা সর্বদা সর্বতোভাবে আজীবন করে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা—প্রতিশ্রম্নতিই হচ্ছে বিয়ে। এতে নিজ অসহিষ্ণুতা, বিরক্তি কিংবা ব্যর্থতা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে সঙ্গীর চোখে চোখ রেখে সম্মুখ আলোচনা করা, তাকে সংশোধনের সুযোগ দেয়া, সতর্ক করা এবং চূড়ান্ত পরিণতি সম্পর্কে জানিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া অবলম্বন অতীব জরুরি। এসব প্রক্রিয়াও ব্যর্থ হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে সামাজিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে দু’পরিবারের কিংবা প্রতিবেশী বা সমাজপতিদের সভা ডাকা অত্যাবশ্যক।
এটি হচ্ছে শিক্ষিত ও সুস্থ ব্যক্তির মত—পথ ও প্রক্রিয়া। এরূপ সুন্দর—সুস্থতার চর্চার গণতান্ত্রিক ও ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়া থেকে সরে গিয়ে বিকৃত রুচির কোনো ব্যক্তি তার একচেটিয়া, স্বৈরাচারী ও পক্ষপাতমূলক দূরভীসন্ধির একক সিদ্ধান্তে পরিবার ভাঙার কোনোই সুযোগ নেই। তা করলে তিনি পরিবার—সন্ত্রাসী এবং স্ত্রী নিপীড়ক কিংবা স্বামী নিপীড়ক হিসেবে পরিগণ্য।
সঙ্গীর মধ্যে থাকা কমতিগুলো কিংবা ত্রুটিগুলোসহ সঙ্গীকে মেনে নেয়ার মতো ধৈর্য—সহ্যের তথা মানসিক ভারসাম্যের সক্ষমতা অর্জন করার পরই কেবল একজন মানুষের বিয়ের পিঁড়িতে বসা উচিত। অর্থাৎ নিজের মধ্যে ধৈর্য—সহ্যগুণ তৈরি না করে তথা হবু সঙ্গীর সাথে Adjustment এবং Matching Capacity অর্জন না করে বিয়ে করা মানে পরিবার বিশৃঙ্খলায় প্রবেশ করা বা সঙ্গী—অসন্তোসে বা পারিবারিক সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়া, অন্যকথায় সামাজিক অপরাধে সম্পৃক্ত হওয়া। অধিকন্তু অনেক আকাক্সক্ষায় সন্তান উৎপাদন করে অতঃপর নিজ আলগা খায়েশ ও ব্যক্তিস্বার্থের কুমৎলব চরিতার্থে কিংবা ‘বনিবনা হয় না’ এর মতো তুচ্ছ, অস্পষ্ট ও অস্পৃশ্য অজুহাতে পরিবার ভাঙনের মাধ্যমে ঐ অবোধ শিশুদের জীবন ভেঙে দেয়ার অপরাধতো রীতিমতো জঘন্য ও ক্ষমাহীন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের দু’বিচারপতি অশ্রম্নসজল এক রায়ে বলেন ‘ডিভোর্সে বাচ্চারা অপূরণীয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়...’। ঐ মামলায় বিচারকগণ সন্তানদের মতামত জানতে চাইলে তারা বলে- ‘আমরা আর কিছু চাই না, বাবা—মাকে একত্রে আমাদের সাথে দেখতে চাই’।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাম্প্রতিক জরিপে বিবাহ বিচ্ছেদের ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে ধরে বলা হয়েছে- প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পরিবার ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আমাদের সমাজ এবং এরূপ ডিভোর্সে এখন পুরুষের চেয়ে নারীরা এগিয়ে। ঢাকা মহানগরীতে ৭১% ডিভোর্স দিচ্ছেন নারীরা, যারা আর্থিক স্বাবলম্বী হয়ে ব্যক্তিত্বের দম্ভে পড়ে কিংবা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাবে আক্রান্ত হয়ে এরূপ পারিবারিক বিশৃঙ্খলায় মেতেছেন; যা পারিবারিক ভালোবাসা ও সামাজিক বন্ধনের সৃষ্টিতত্ত্ব বিনষ্টে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
যারা মান—হুঁশ, যাদের ধর্ম আছে কিংবা যারা ধর্ম মানেন; যারা স্বশিক্ষিত কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার আলোয় সত্যিকারভাবে দীক্ষিত Ñতাদের ধৈর্য—সহ্যগুণ কিংবা Adjustment ও Matching Capacity অবারিত, যা তার অর্জিত শিক্ষা ও মানবগুণ বলে বিবেচিত এবং যা তাকে আলাদা করে রাখে পশু—চরিত্র থেকে। তাই আমরা যদি পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি—শৃঙ্খলা রক্ষা করতে চাই, তাহলে বিকৃত কিংবা অপ্রকৃতিস্থ—অসহিষ্ণু ও উচ্ছৃঙ্খল পরিবার—সন্ত্রাসীর এহেন পশু—চরিত্রের প্রতি সবারই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মানবতা, সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে বর্তমান পরিবার—ভাঙন হিড়িক ঠেকানো জরুরি এবং এ ব্যাপারে সমাজপতি ও নীতি—নির্ধারকগণের দ্রুত ও জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক।
বিবাহ—ভঙ্গের বর্তমান প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী “তার সাথে আমার বনিবনা হয় না” —এরূপ বায়বীয় ও অস্পষ্ট—অস্পৃশ্য ক’টি শুব্দ লিখে পৌর বা ইউনিয়ন পরিষদকে জানিয়ে দিলেই পরিবার শেষ। কতৃর্পক্ষ দু’পক্ষকে শুনানির জন্য ডাকলে সে শুনানীতে ডিভোর্সের আবেদনকারী হাজির না হয়েও কিংবা পৌরসভার আহ্বানকৃত পর্ষদ—সভাগুলোর কোনোটিতে উপস্থিত না থেকেও কিংবা কোনো কারণ ব্যাখ্যা ব্যতিরেকে কোনোরূপ স্বচ্ছতা বা জবাবদিহিতা ছাড়াই ডিভোর্স কার্যকর হয়ে যায়। কোর্টের নোটিশ পেয়েও আবেদনকারীর উপস্থিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই অর্থাৎ তাকে কারুর কাছে কোনোরূপ জবাবদিহিতার এমনকি কোনো ব্যাখ্যা—প্রমাণের প্রয়োজন হয় না।
এক ব্যক্তির একক খামখেয়ালীতে এমনকি অবোধ—অবুঝ সন্তানদের ফয়সালা ব্যতীত এরূপ বিবাহ—ভাঙ্গা কিংবা ঘর—সংসার—পরিবার নিয়ে নিরাপদে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানোর আইনী প্রক্রিয়া কিংবা বিধান একজন নগন্য সমাজকর্মী ও সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাকে সর্বদাই বিস্মিত করে। এটি বর্তমান আধুনিক সমাজব্যবস্থায় নির্মম প্রতারণা, বর্বরতা ও অসভ্যতা বলে আমার মনে হয়।
সন্তান না হওয়া পর্যন্ত হয়তো স্ত্রী বা স্বামী তার কথিত ‘বনিবনা’ না হওয়ার সুযোগ নিতে পারেন; কিন্তু সন্তান হওয়ার পর আইন—আদালতে ডিভোর্সের ব্যাখ্যা—বিশ্লেষণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং সন্তানের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষা না করে কেবল ‘বনিবনা’ না হওয়ার মামুলি অজুহাত দেখিয়ে চম্পট দেয়ার বিষয়টি সন্তান ও অপর সঙ্গীর প্রতি লাম্পট্য, অসদাচরণ এবং জঘন্য অমানবিক নয় কি? একজন নগণ্য সমাজ—গবেষক হিসেবে আমি এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ফিরছি সুস্থ বিবেকবানদের কাছে!
বনিবনা কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে হয় না -এরূপ কোনো জিজ্ঞাসা বা আলোচনার বাধ্যবাধকতা না রেখে অনুরূপ ক’টি শব্দ লিখেই পরিবার ভেঙে ফেলার রীতি বা নিয়মকে সৃষ্টিতত্ত্বের প্রতি একটি মর্মান্তিক বিশৃঙ্খলা বলে আমি মনে করি। এটি বর্তমান সভ্য সমাজের নৃশংস বর্বরতা বলেও আমার মনে হয়। এতে একদিকে ব্যক্তির অন্যায়—অভিলাষ কিংবা বিকৃত রুচি চরিতার্থের ব্যাপক সুযোগ থেকে যাচ্ছে; অন্যদিকে এই এক ব্যক্তির দূরভিসন্ধি ও স্বেচ্ছাচারিতার কবলে পড়ে ঐ পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট বহু পরিবার এবং শত শত সদস্যকে মানবেতর ও বিশৃঙ্খল জীবনযাপনে নিপতিত হতে হচ্ছে। আর ডিভোর্সে ক্ষতিগ্রস্ত সঙ্গী ও সন্তানদের বুক ভেঙে হাহাকারের মর্মান্তিক ক্ষতে তাদের জীবনে যে গভীর অমানিষা—অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়, সে কথা হৃদয় থাকা যেকোনো মানুষেরই বোধগম্য হবার কথা।
বর্তমান ডিভোর্স—পদ্ধতির উপরোক্ত ত্রুটিকে সুবিধা হিসেবে নিয়ে স্বার্থান্ধ ধান্দালরা পরিবারসমূহ ভেঙে দিয়ে সমাজকে চরম অরাজকতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমার প্রত্যক্ষ দেখা এমনও নজির রয়েছে যে, সুবোধ ও সহজ—সরল মনের পাত্রকে প্রলোভনে ফেলে অনেকটা জোর জবরদস্তিতে দু’কাজী অফিসে দু’কাবিননামা রেজিস্ট্রি করার মাধ্যমে পাকাপোক্তভাবে দু’বার বিয়ে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া এক ছাত্রী—পাত্রী। সহজ—সরল, অসহায় স্বামীর ঘাড়ে চড়ে ঐ নারী তার ব্যক্তি—স্বার্থের সবকিছু বিশেষত উচ্চডিগ্রি, পদ—পদবী, বাড়ি—গাড়ি ও বিত্ত—বৈভবে আপনস্বার্থ হাসিল করে এবং ৩ সন্তানের জননী হয়ে মাতৃত্বের স্বাদ—স্বার্থ লাভের পর কোনোরূপ ব্যাখ্যা—বিশ্লেষণ ছাড়াই ঘর—সংসার—পরিবার ভেঙে সমাজে ও জাতিতে অবলীলায় নীরব ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে। এমনকি স্বামীর প্রতিষ্ঠান ও স্বামীর জীবন ধ্বংস করারও পায়তারায় লিপ্ত হয়েছে।
৫০ বছর বয়সের ঐ কুচক্রিণী নারী স্বামীর সাথে কোনোরূপ আলাপ—আলোচনা ছাড়া, দু’পক্ষের কোনো পরিবারকে এমনকি কাউকে কিছুই না জানিয়ে তার শারীরিক রূপ—সৌন্দর্যের অহং—ঢংয়ে আর শেষ যৌবনের ভিমরতিতে অন্য পুরুষ—প্রলুব্ধে পড়ে আচমকা ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেয় সিটি কর্পোরেশনে। তার ঐ ডিভোর্স লেটারের প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশন বার বার নোটিশ দিয়ে তাকে পরিষদের সভায় যোগদানের আহ্বান জানালেও ঐ ক্ষমতাধর হঠকারী নারী আইনী কর্তৃপক্ষীয় কোনো নোটিশকেই গ্রাহ্য করেনি, যায়নি পরিষদের কোনো সভায়, কোনো কোর্টে।
এমনকি সন্তানদের বিষয় নিয়ে আলাপ করতে ২৫ বছরের সংসারী—স্বামীর সাথে একটিবার বসার জন্যে স্বামীর আবেদন-আকুতিকে এবং সমাজপতি ও নারী নেতৃবৃন্দের বারংবারের অনুরোধও চরম ঔদ্ধত্যে ধূলিষ্যাৎ করে দিয়েছে। দুই কাজী অফিসে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে দু’টি কাবিননামা রেজিস্ট্রির কোনটিতে তিনি ডিভোর্স দিলেন, তাও জানার সুযোগটুকুন পাননি তার গোবেচারা স্বামী এবং অবোধ ৩ সন্তানের অসহায় বাবা। বিকৃতরুচির এ নারী এমনই অহং-ঢংয়ে ক্ষমতাবান। নারী নির্যাতন আইনে ফেলে স্বামীকে চূড়ান্তভাবে শেষ করে দেবার হুমকি-ধমকি দিয়ে এবং বাবার অতি আদরের ৩ সন্তানকে মা-বাবার ক্রসফায়ারের ঢালস্বরূপ ব্যবহার করে পার পেয়ে যাবার কুচক্রে লিপ্ত রয়েছে। অথচ পাশবিক চরিত্রের এ ক্ষমতাধর নারীর রক্তচক্ষুকে কিংবা তার দেহ-সৌষ্ঠবের আকর্ষণকে উপেক্ষা করে কেহই আজতক এ অন্যায়ের জোর প্রতিবাদে কিংবা তার কুমন্ত্রণার ঘোর প্রতিরোধে এগিয়ে আসেনি। ফলে এ পরিবার সন্ত্রাসীর পোয়া বারো হয়ে সমাজে অনুরূপ অন্যায় ও ত্রাসের রাজত্ব বেড়েই চলছে।
ওদিকে সুন্দরী রমনীর প্রতি কিছু পুরুষের লোলুপতাপ্রসূত সর্বক্ষমা মনোভাব আর ক্ষমতাবানের রক্তচক্ষুর প্রতি সামাজিক নতজানুর কারণে ঘর-সংসার হারা পুরুষটি একাকী নির্জনে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে; আর যত দ্রুত সম্ভব স্রষ্টার কাছে গিয়ে এপারের সব বলে দিয়ে নিজকে ভারমুক্ত করার প্রহর গুণছে।
আমার জানামতে, মানবসৃষ্ট আইনে কিংবা ধর্মের কোথাও এক ব্যক্তির একক সিদ্ধান্তে পরিবার ভেঙে দেয়ার কোনো সুযোগ থাকার কথা নয়। সৃষ্টিতত্ত্বের শৃঙ্খলা সৌন্দর্য্য ও পারিবারিক বন্ধন-ভালোবাসার বিধান লঙ্ঘন করে এরূপ করলে তাতে পরিবার বিধ্বংস ও সামাজিক বিশৃঙ্খলার দায়ে অবশ্যই অভিযুক্ত হওয়া উচিত। সেই কারণে যদি কল্যাণকামী কোনো কর্তৃপক্ষ কিংবা কোনো সমাজপতি এরূপ অন্যায়ের প্রতিরোধে এগিয়ে আসেন, তাহলে আমি তাঁদেরকে এরূপ পরিবার-সন্ত্রাসীর সন্ধান দিতে প্রস্তুত আছি।
উপরোক্ত বিভিন্ন মর্মান্তিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে এক ব্যক্তির একক সিদ্ধান্তের এরূপ অন্যায় ডিভোর্স রুখতে ঐ ডিভোর্সকারীকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বয়কট করা উচিত বলে আমি মনে করি। যেমন-
ক) অন্যায়ভাবে ডিভোর্সকারীর পুনর্বিবাহে বাধা থাকা;
খ) যে কোনো ক্লাব, সভা—সমিতিতে তাকে নিষিদ্ধ করা;
গ) সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে নিমন্ত্রণ না করা এবং তার অংশগ্রহণে বাধা দেয়া;
ঘ) তার চাকরিক্ষেত্রে ও বিভিন্ন লাইসেন্স-পারমিট পাবার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ;
ঙ) ডিভোর্স প্রদানের পূর্বে অন্তত দু’পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে না জানালে কিংবা তাদের পরামর্শ গ্রহণ না করলে সেইসব আত্মীয়দের কতৃর্ক ডিভোর্সকারীকে প্রত্যাখান করা জরুরি ও অত্যাবশ্যক। অনুরূপভাবে প্রতিবেশী ও সমাজকে না জানানো কিংবা তাদের পরামর্শ না নেয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেশী ও সমাজ কতৃর্ক ডিভোর্সকারীকে প্রত্যাখান করা ইত্যাদি।
এরূপ বা অনুরূপ ক্ষেত্রে সমাজপতি, নীতিনির্ধারক ও আইন প্রণেতাগণের টনক নড়ার পূর্বে সমাজের সদস্য হিসেবে এখনই আমরা সবাই উপরোক্তরূপ দায়িত্ব ও ভূমিকা পালন করতে পারি।
আসুন, এভাবেই আমাদের যার যার অবস্থান থেকে সবাই সমবেতভাবে পরিবার ভাঙন হিড়িক থেকে সমাজ ও জাতিকে উদ্ধার করি; অন্যায়ভাবে ডিভোর্স প্রদানকারী বাবা কিংবা মায়ের বিকৃত মস্তিষ্কের অমনুষ্যচিত অত্যাচার থেকে অগণিত অবোধ-অবুঝ শিশুদেরকে রক্ষা করি এবং তাদের বুকফাটা আর্তনাদ প্রশমিত করে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীবের সেবায় অপরিসীম অবদান রাখি। ভাঙ্গা পরিবারের অপ্রকৃতিস্থ সন্তানদের প্রতি মানবিক হয়ে আমরা আধুনিক ও সুউন্নত মানুষ হই; উপরোল্লিখিত মান্যবর বিচারপতিগণের অশ্রম্নসজল রায়ের প্রতি ও তাঁদের মানবিক মতাদর্শের প্রতি আনুগত্য-শ্রদ্ধা জানাই।
শুভ হোক সকল মঙ্গল প্রয়াস।
লেখকঃ
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক
ফোনঃ ০২—৪৭১২২৪৬৩, ৯৫১৫০৯৯
web: www.helal.net.bd
e-mail: m7helal@yahoo.com