মাধ্যমিকে পড়াশোনা করেছেন ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধাতালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি। জানান দিয়েছেন আর দশটা সাধারণ ছাত্রের মত নন তিনি। তার স্বপ্ন আকাশছোঁয়া।
বিজ্ঞানের নানান বিষয় নিয়ে পড়াশোনাতেই তার আগ্রহ বেশি। স্বপ্নের নায়ক আইনস্টাইন। সেই নায়কের পথ ধরেই মস্ত বড় পদার্থ বিজ্ঞানী বনে গেছেন। বলছি বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী জাহিদ হাসানের কথা। তিনি এখন বাংলাদেশের গর্ব।
ঢাকা কলেজের সেই ছাত্র জাহিদ হাসান নতুন কণা আবিষ্কার করে বিশ্বজুড়ে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছেন। এই কণা আবিষ্কার করতে লেগেছে পঁচাশি বছর। বহুল প্রতীক্ষিত এ কণাটি হল ফার্মিয়ন, ভাইল ফার্মিয়ন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে একদল গবেষক পরীক্ষাগারে ওই কণা খুঁজে পেয়েছেন। গবেষক দলের অন্য সদ্যসরা হলেন ড্যানিয়েল সানচেজ, গুয়াং বিয়ান, হাও শ্যাং ও ইলিয়া বেলোপোলস্কি।
এই আবিষ্কারের মাধ্যমে এখনকার মুঠোফোন, কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক সামগ্রীর বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। বাড়বে গতি। হবে শক্তিসাশ্রয়ী। এই আবিষ্কারের ফলে নতুন প্রযুক্তির মোবাইল আসবে বাজারে। যে মোবাইল কখনও গরম হবে না। কারণ, এই কণার ভর নেই। এটি ইলেকট্রনের মতো পথ চলতে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে না। এমন আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে এ কণার।
বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স-এ ভাইল ফার্মিয়নের পরীক্ষামূলক প্রমাণের বিষয়টি বিস্তারিত ছাপা হয়েছে।
জাহিদ হাসান বর্তমানে আইনস্টাইনের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাত প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে শিক্ষকতা করছেন। জাহিদ হাসানের এমন অসামান্য আবিষ্কারে তার নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। আর এটা সম্ভব হলে তিনিই হবেন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পাওয়া প্রথম বাঙালি।
বিজ্ঞানীদের মতে, গ্রহ-নক্ষত্র, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, গাছপালা, ফুল কিংবা মানুষ সবই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার পি-। দুনিয়ার এসব বস্তুকণাকে বিজ্ঞানীরা দুই দলে ভাগ করেছেন।
এসব কণার একটি ফার্মিয়ন, যার একটি উপদল হলো ভাইল ফার্মিয়ন। ১৯২৯ সালে হারম্যান ভাইল এই কণার অস্তিত্বের কথা প্রথম জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি তারই পরীক্ষামূলক প্রমাণ হাজির করলেন জাহিদ হাসান।
আরেক জাতের কণা হলো বোসন, যার নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছেন বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু। তার আবিষ্কারের ৯১ বছর পর ভাইল ফার্মিয়নের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়ে পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে যুক্ত হলেন আরেক বাঙালি জাহিদ হাসান।
জাহিদ হাসান সাংবাদিকদের জানান, মোট তিন ধরনের ফার্মিয়নের মধ্যে ডিরাক ও মায়োরানা নামের বাকি দুই উপদলের ফার্মিয়ন বেশ আগেই আবিষ্কৃত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে ভেবেছেন, নিউট্রিনোই সম্ভবত ভাইল ফার্মিয়ন। কিন্তু ১৯৯৮ সালে নিউট্রিনোর ভরের ব্যাপারটা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে আবার ভাইল ফার্মিয়নের খোঁজ শুরু হয়।
অবশেষে জাহিদ হাসানের গবেষক দল ওই কণাকে খুঁজে পেয়েছেন একটি যৌগিক কেলাসের (ক্রিস্টাল) মধ্যে। কেলাসেই কেবল এটি পাওয়া যায়। অবশ্য জাহিদ হাসানের ধারণা, নতুন যুগের সেই ইলেকট্রনিকসের জন্য হয়তো আরও ১০ থেকে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে।