বিশেষ খবর



Upcoming Event

নিরক্ষরতার কারণে বাংলাদেশের ক্ষতি আট হাজার কোটি টাকা!

ক্যাম্পাস ডেস্ক শিক্ষা সংবাদ
img

সরকারি হিসাবে দেশে এখনো ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৩ কোটি ৭৩ লাখ মানুষ নিরক্ষর। এই নিরক্ষরতার জন্য বাংলাদেশকে বছরে যে আর্থিক ও সামাজিক মূল্য দিতে হচ্ছে, এর পরিমাণ প্রায় আট হাজার কোটি টাকা (১০২ কোটি ডলার)। এই আর্থিক হিসাব পাওয়া গেছে ২৪ আগস্ট প্রকাশিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওয়ার্ল্ড লিটারেসি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে।
ওয়ার্ল্ড লিটারেসি ফাউন্ডেশনের নিরক্ষরতার অর্থনৈতিক ও সামাজিক মূল্যবিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরক্ষর ব্যক্তিরা সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের চেয়ে ৩০ থেকে ৪২ শতাংশ কম আয় করেন। উন্নয়নশীল দেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ ক্ষতি হয় নিরক্ষরতার কারণে। এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
কম উপার্জন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়া, ব্যবসায় উৎপাদনশীলতা ও সম্পদ তৈরির সুযোগ কমে যাওয়া, সম্পদ গড়ার সুযোগ হ্রাস পাওয়া, ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়াসহ কয়েকটি বিষয়ে আর্থিক মূল্যের হিসাবটি দেখা হয়েছে ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, নিরক্ষরতার প্রভাবে সমাজে অপরাধপ্রবণতাও বাড়ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, দেশে সাক্ষরতার হার এখন ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ ৩৯ শতাংশ নিরক্ষর। চিত্রটা এমন হলেও এই মুহূর্তে নিরক্ষরতা দূরীকরণে দেশে কোনো কার্যক্রম নেই। দেড় বছর আগে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও সেটির বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। যদিও সরকার বিভিন্ন সময়ে ২০১৪ সালের মধ্যে দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করার অঙ্গীকার করেছিল।
এ রকম পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ উদযাপন করছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আলোচনা সভা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, দেশে যাঁরা নিরক্ষর, তাঁদের অক্ষম বলা যাবে না। কিন্তু এই মানুষগুলোর সাক্ষরজ্ঞান থাকলে তাঁরা এখন যে আয় করছেন, তার চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি আয় করতে পারতেন। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে কার্যক্রম না থাকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, বর্তমানে নিরক্ষরতা দূরীকরণের কাজটি হয়ে গেছে প্রকল্পনির্ভর। একটি প্রকল্প শেষ হলে হয়তো আরেকটি প্রকল্প আসে। আবার সবাই ভুলে যায়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানও নিরক্ষরতা দূরীকরণে অঙ্গীকার পূরণে পিছিয়ে থাকার কথা মেনে নেন। তিনি বলেন, তাঁরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। হাতে নেয়া প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শিগগিরই শুরু হবে। বর্তমানে মৌলিক সাক্ষরতা বলতে (সাধারণত মাতৃভাষায়) পড়তে, লিখতে, গণনা করে হিসাব করতে পারা এবং লিখিতভাবে যোগাযোগ করার সক্ষমতাকে বোঝানো হয়।
দীর্ঘসূত্রিতায় প্রকল্পের কাজ
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, সারা দেশের ৪৫ লাখ (মোট নিরক্ষরের ১৩ শতাংশ) নিরক্ষর ব্যক্তিকে সাক্ষর করে তোলার জন্য সরকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্প অনুযায়ী ২৫০টি উপজেলার প্রতিটিতে ১৮ হাজার নিরক্ষরকে সাক্ষরতার পাশাপাশি এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবন দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা। শিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তুলে ছয় মাসের কোর্সে সাক্ষরতা দেওয়ার কথা। প্রতি শিক্ষণকেন্দ্রে ৩০ জন পুরুষ ও ৩০ জন নারী থাকবেন। নারী-পুরুষের জন্য আলাদা পালা করে কোর্সটি চলবে।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৪৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহ কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। ৬৪টি জেলার ২৫০টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করতে পারছে না উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো। অথচটি প্রকল্প শেষ হবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে।


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img