চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তার সিভি বা ‘রিজ্যুমি’, অনেক চাকরির ক্ষেত্রে এমনও হয়, হয়তো আপনাকে প্রতিষ্ঠানের মুখোমুখিও হতে হলো না। এসব ক্ষেত্রে চাকরিদাতারা কিভাবে বুঝবেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগ্য ব্যক্তিটি আপনিই। এমন পরিস্থিতিতে আপনার যোগ্যতা তুলে ধরবে সেই ‘রিজ্যুমি’, যেটি আপনি জমা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানে। অনেকে অনেকভাবেই রিজ্যুমি সাজান। এতে কোনো বাধা নেই। তবে যে বিষয়গুলো সেখানে অবশ্যই থাকাটা সমীচীন হবে না তা আপনাদের জানানো হলো।
হাই স্কুল ও কলেজের বিস্তারিত তথ্য
আপনার হাই স্কুল ও কলেজের বিস্তারিত তথ্য দেয়ার প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয় পাস করে থাকলে কলেজের বিস্তারিতও না দেয়া উত্তম।
গড় বা কম জিপিএ
যদি আপনার শিক্ষাজীবনের ফলাফল ভালো না হয়ে থাকে এবং চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে আলাদাভাবে ফলাফল না জানতে চায়, তবে এগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে, যদি স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন বহু আগে শেষ হয়ে থাকে তাহলে খারাপ ফল উল্লেখ বিশেষ কোনো সুবিধা দিতে পারবে না।
শব্দ ব্যবহারে বাছ-বিচার
পেশাগত শক্তিশালী শব্দ ব্যবহার করুন। বিশেষ করে আপনার অভিজ্ঞতার ঘরে শব্দ নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে। রিজ্যুমি ইংরেজিতেই লিখা হয়ে থাকে। একটি উদাহরণ দেয়া যাক। কোনো বিশেষ কাজে পারদর্শিতার ক্ষেত্রে familiar with…বা learned how to…ইত্যাদি না ব্যবহার করে skill শব্দটি ব্যবহার করুন। এতে বোঝা যায়, আপনি ওই কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন, শিক্ষানবিশ নন।
ছবি
না চাওয়া হলে বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য অপ্রয়োজনীয় হলে ছবি সরিয়ে ফেলুন। আপনি দেখতে কেমন তা প্রতিষ্ঠান না জানতে চাইলে অযথা একটি ছবি জুড়ে দেয়া আনাড়ি আচরণের মতো দেখায়।
নাতিদীর্ঘ চাকরির লম্বা তালিকা
হয়তো আপনার অনেক চাকরির অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু প্রতিটিতেই ছিলেন খুব অল্প সময়ের জন্য। সেক্ষেত্রে এসব তথ্য দেয়া মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। এতে চাকরিদাতা মনে করবে, চাকরিতে আপনি মনযোগী নন। তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে এর অবতারণা করা যেতে পারে। অথবা দীর্ঘ সময় ধরে চাকরিহীন হয়ে থাকলে এগুলো দেয়া ছাড়া তো গত্যন্তর নেই।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বর্ণনা
ব্যক্তিগত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বর্ণনা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে তেমনটি দেখা যায় না। তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানের পছন্দ হতে পারে তেমনভাবে নিজের বর্ণনা দেয়াটাও যথেষ্ট কঠিন বিষয়। তাই এসব না দেয়াই ভালো। বরং আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাজের বৈসাদৃশ্য থাকলে তারা আপনাকে উপযুক্ত বলে মনে না-ও করতে পারে।
সাধারণ কাজের পারদর্শিতা
সাধারণ কিছু কাজ রয়েছে যা সবাই করতে পারে। এগুলো উল্লেখ করে দেয়ার প্রয়োজন নেই। যেমন- মাইক্রোসফট ওয়ার্ড সবাই ব্যবহার করতে পারে। কাজের দক্ষতায় এই অতি সাধারণ পারদর্শিতাযোগের প্রয়োজন পড়ে না।
যে তথ্যে বেআইনি বা অবৈধতার যোগ থাকতে পারে
ব্যক্তিগত তথ্য উপস্থাপনের সময় অতিমাত্রায় খোলামেলা না হওয়াই ভালো। যেমন- সামাজিক কার্যক্রম বা রাজনৈতিক কার্যক্রম ইত্যাদি সাধারণত প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির জন্য বিশেষ যোগ্যতা বলে বিবেচিত হয় না। বরং এসব বিষয়ে আপনার বেআইনি ও অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হতে পারে।
অতিরিক্ত পাতার সংযোজন
রিজ্যুমি তৈরির মূল নিয়মটি হলো এক পৃষ্ঠার মধ্যে সম্পন্ন করা। সর্বাধিক দুই পাতার রিজ্যুমি হতে পারে। এক বা দুই পাতার মধ্যে রিজ্যুমি সবচেয়ে চমৎকার এবং গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। তবে বিশেষ করে উচ্চপদস্থ চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ যোগ্যতা উল্লেখ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পাতাযোগের প্রয়োজন হতেই পারে। তা নির্ভর করে চাকরির ধরন ও প্রতিষ্ঠানের চাহিদার ওপর।