বিশেষ খবর



Upcoming Event

ওয়েস্টিন, রেডিসন, সোনারগাঁও হোটেলে বাবার সাথে আমার দেখা ক্রিসমাস উৎসব!

ক্যাম্পাস ডেস্ক শিশু ক্যাম্পাস
img

॥ ওয়াসির হেলাল ॥
৫ম শ্রেণি, সহজপাঠ স্কুল, ঢাকা

২৫ ডিসেম্বর বড়দিন। আমি প্রতিবছর বড়দিনে বাবার সাথে ক্রিসমাস-ট্রি আর স্যান্টাক্লজ দেখতে যাই ঢাকার বড় বড় ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে। করোনার কারণে এ বছর ক্রিসমাস ভিন্নরকমে পালন করা হয়েছে। ক্রিসমাসের আগের দিন মানে ২৪ ডিসেম্বর (২০২০ সাল) রাতে বাবাকে ফোন করে যখন ক্রিসমাস উৎসব দেখার কথা বললাম, তখন তিনি ঢাকার সবগুলো বড় বড় হোটেলে খোঁজ নিলেন, দেখলেন সব হোটেলে লাঞ্চ ও ডিনার ফুল বুকড হয়ে আছে। তারপরও বাবা চেষ্টা করছিলেন আমাকে বড়দিনের ক্রিসমাস উৎসব দেখাতে কোন্ ভালো হোটেলে নিয়ে যাওয়া যায়। এরপর বাবা ভেবেচিন্তে প্ল্যান করলেন, আমাকে নিয়ে ঢাকার টপ ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে যাবেন এবং বড়দিনের ক্রিসমাস-ট্রি আর স্যান্টাক্লজ দেখাবেন। তাই দু’টি হোটেলের চিলড্রেন পার্টিতে বাবা আমার নাম বুকড করে রাখলেন। তার মধ্যে একটা হচ্ছে হোটেল দি ওয়েস্টিন, যেখানে আমি গতবছরও ক্রিসমাস উৎসবে গিয়ে বাবার সাথে প্রায় সারাদিন মজা করেছিলাম। এ বছর অবশ্য বাবা আমার জন্যে আকেরটি হোটেলেও বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন; সেটি হচ্ছে হোটেল রেডিসন ব্লু।

পরদিন ২৫ ডিসেম্বর বাবা আমাকে ফাইভ স্টার হোটেল ওয়েস্টিনে নিয়ে গেলেন। ওয়েস্টিনের ক্রিসমাস-ট্রি ছিল অনেক বড়। রংবেরংয়ের ঝলমল বাতি দিয়ে সাজানো। আমি ঘুরে ঘুরে ক্রিসমাস-ট্রি দেখেছি। আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমার আরও ভালো লেগেছে স্যান্টাক্লজকে। স্যান্টাক্লজ আমাকে চকলেট গিফট দিয়েছে। ওয়েস্টিন হোটেলের অডিটোরিয়ামে আমাদের উৎসব স্থানের পাশেই অনেক খাবারের আয়োজন ছিল। মিনি বার্গার, চিকেন ফ্রাই, ফ্রেন্স ফ্রাই, রকমারি কাপকেক, বারবিকিউ আরো কত কি! কাপকেক ছাড়া আর বাকি সবগুলো আমি খেয়েছি। তারপর আবার আমি স্যান্টাক্লজের সাথে দেখা করেছি। আমার মনে হয়, স্যান্টাক্লজও আমাকে খুব পছন্দ করেছে। তাই বার বার আমার সাথে শেকহ্যান্ড করেছে এবং আমাকে জড়িয়ে ধরে অন্যদেরকে ছবি তুলতে দিয়েছে। সেইসাথে আমার বাবাও স্যান্টাক্লজ এর সঙ্গে আমার ছবি তুলে দিয়েছেন।

ওয়েস্টিন হোটেলের উৎসব দেখে আমরা চলে যাই রেডিসন হোটেলে। সেখানে গিয়ে দেখি একটা দারুন ক্রিসমাস-ট্রি আর একেবারে ছোট একটা স্যান্টাক্লজ। সেই ছোট্ট স্যান্টাক্লজ এর সঙ্গে আমি কথা বলেছি, তার সাথে নেচেছি। এরপর কটন ক্যান্ডি খেয়েছি। কটন ক্যান্ডি তুলার মতো দেখতে এক ধরনের ক্যান্ডি। কালারফুল কটন ক্যান্ডি খেতে মজাই বলা যায়; তবে এগুলো সময় কাটানোর ও মজা করার খাবার, কোনো সিরিয়াস খাবার না। এ প্রসঙ্গে কানে কানে বলে রাখিÑ প্রতিবারই দেখেছি খাবারের দিক থেকে এমনকি অন্যান্য সকল আয়োজনের দিক থেকে আমার কাছে ক্রিসমাস উৎসব সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে দি ওয়েস্টিন হোটেলে। তারা আমাদের থেকে টিকেটে যে পরিমাণ টাকা নেয়, তার চেয়ে অনেক বেশি আয়োজন ও আপ্যায়ন থাকে তাদের। এরা শিশুদের ব্যাপারে টাকার লাভ না করে ভালো ভালো ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে শিশুদেরকে অনেক বেশি আনন্দ দিতে চেষ্টা করে বলে আমি প্রতিবছরই বাবার সাথে গিয়ে দেখেছি। রেডিসনের এই অডিটোরিয়ামটাও ওয়েস্টিনের চেয়ে ছোট। স্যান্টাক্লজ আসতেও অনেক দেরি করেছে। খাবারও বেশি ভালো ছিল না। তবে আইসক্রিমটা খেয়েছি মজা করে।

নির্ধারিত টাইম ৩টায় আমরা পৌঁছার প্রায় দু’ঘন্টা পর স্যান্টাক্লজ আসে অডিটোরিয়ামে আমাদের কাছে। আমি তখন স্যান্টাক্লজ এর সঙ্গে ছবি তুলতে চাইলে বাবা অনেকগুলো ছবি তুলে দেন। স্যান্টাক্লজ আমাকে গিফট দিয়েছিল। তার দেয়া চকলেটটা মজার ছিল। কিছুক্ষণ পর সেখানে শুরু হলো ম্যাজিক-শো। ম্যাজিকগুলো দেখে আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি। ম্যাজিক-শো দেখা শেষ করে আইসক্রিম খেয়েছি। আগেই বলছি যে, আইসক্রিমগুলো ছিল খুবই মজার। এরূপ এনজয় করতে করতে আমি টায়ার্ড হয়ে যাই। বাবাকে চলে আসার কথা বললে বাবা বলেনÑ আরেকটা হোটেলে চলো। লা-মেরিডিয়ান নাকি সোনারগাঁও, কোনটিতে যাবে বলো? আমার ঘুম আসছে বলায় বাবা বলেন, চলো তুমি গাড়িতে ঘুমাবে আর আমি তোমাকে নিয়ে ড্রাইভ করে বাসায় যাবার পথে সোনারগাঁও হোটেলে ক্রিসমাস আয়োজন দেখাবো। এরপর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে গিয়েছি। সেখানেও ছিল এক বিশাল ক্রিসমাস-ট্রি। লাল-নীল, সবুজ-হলুদ নানা রকমের উজ্জ্বল আলোর বাতিতে সাজানো ছিল সেই ক্রিসমাস-ট্রি। সেখানকার স্যান্টাক্লজ ছিল ভিন্ন রকম। ভূড়ি বড়, পেটুক বলে মনে হচ্ছিলো। বাবা আমাকে স্যান্টাক্লজের সাথে ছবি তুলে দেন। ঘুরে ঘুরে ক্রিসমাস-ট্রি দেখেছি। রাতের ঝলমলে রঙিন আলোর সেই ক্রিসমাস-ট্রি আমার খুব ভালো লেগেছে।

এভাবে ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে, বিশেষত ওয়েস্টিন, রেডিসন আর সোনারগাঁও হোটেলে বাবার সাথে আমার ক্রিসমাস-ট্রি ও স্যান্টাক্লজ দেখা এবং খাবার-দাবার উপভোগ করা ছিল সত্যিই খুব মজার এবং আনন্দের। এজন্য বাবাকে আমি অনেক ধন্যবাদ জানাই। মাত্র একটি হোটেলে আমাকে নিয়ে যাবার জন্যে বাবাকে আমি ফোন করেছিলাম; অথচ আমাকে নিয়ে বাবা নিজে ড্রাইভ করে দূরদূরান্তের ৩টি হোটেলে গেলেন এবং অন্যান্য হোটেলেও নিয়ে যেতে চাইছিলেন। আমি টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিলাম বলে বাকিগুলোতে যেতে পারিনি। তাইতো বলিÑ বাবাতো বাবাই, বাবার তুলনা শুধু বাবাই...

বাবার সাথে দেখা বড়দিন!
ভুলবো না আমি কোনোদিন!!


বিশ্ববিদ্যালয় কম্পাস পত্রিকার সংখ্যা সমূহ

আরো সংবাদ

শিশু ক্যাম্পাস

বিশেষ সংখ্যা

img img img