কবি সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের একটি কবিতার একটি লাইনের অংশ সম্ভবত এ রকমই, ... ‘এই নিস্তরঙ্গ বাংলাদেশ আর ভাল লাগে না’। গত কয়েকদিনে বার বার সমরেন্দ্র সেনগুপ্তের এই কবিতাটি মনে পড়ছিল। আর মনে হয়, কেন এমনটি হয়! আমাদের সমস্যা কোথায়? বাস্তবে একটি জাতি বা রাষ্ট্রের সার্বিক সমস্যা নিয়ে গভীরে যাবার জ্ঞান আমাদের মতো সাংবাদিকদের থাকার কথা নয়। তাই অতটা গভীরে যাবার চেষ্টা না করেও কতকগুলো বিষয় দেখা যায়।
প্রথমত দেখা যায়, দেশ চলছে বুর্জোয়া বা মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কিন্তু সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিতর কোথায় যেন একটি সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মাথা বা চিন্তা ঢুকে আছে। তাছাড়া আমাদের সমাজতান্ত্রিক চিন্তার সঙ্গে চীনের সমাজতান্ত্রিক চিন্তারও পার্থক্য আছে। চীন ধনী হতে চায়, আমরা বেশি ক্ষেত্রে দারিদ্র্য বিলাসী। আমরা দারিদ্র্যকে পছন্দ করি, ধনী ও ধনের প্রতি একটা ক্ষোভ ছড়ানো হয় সমাজে। এগুলো যে সমাজের সার্বিক চিন্তা তা নয়- এগুলো আছে আমাদের সমাজে। পাশাপাশি বিশাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে নিয়ে শুধু মুক্তবাজার অর্থনীতিতে আর দশ পাঁচটা দেশ যেভাবে চলছে সেভাবেও চলা সম্ভব নয়। অনেক অসঙ্গতিকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে মুক্তবাজার অর্থনীতির পথে চলতে হচ্ছে। অসঙ্গতি অবশ্য সব সমাজে সব দেশে কিছু না কিছু আছে। বেশি ক্ষেত্রে ওই সব সমাজ ও দেশ নীরবে সমাধান করে। আমরা সরবে সমাধানের পথে চলি। যা আমাদের জীবনের অঙ্গে পরিণত হয়েছে। তাই সমরেন্দ্র সেনগুপ্তকে লিখতে হয়- নিস্তরঙ্গ বাংলাদেশ ভাল লাগে না।
যাহোক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে গত কয়েকদিনে তরঙ্গ ভরা বাংলাদেশ দেখা গেল। অনেক কাজের ক্ষতি হলো। আবার ছাত্ররাও একটা বোঝামুক্ত হলো। তবে এ সবের থেকেও বড় হলো, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা মনে হয় এবার ভেঙ্গে যাবে। যেমন- প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর এই ভ্যাট আরোপ করার পর পরই ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনকে বলার চেষ্টা করেছিলাম- এটা ঠিক হয়নি। তার ভিতর একজন ছাড়া বাদবাকিরা ছিলেন খুব জোরালোভাবে ভ্যাট আরোপের পক্ষে। তাদের কথা ছিল, যারা প্রতিদিন এক হাজার টাকা খরচ করে তাদের জন্য এই ভ্যাট দেয়া কোনো বিষয় নয়।
তাদের কাছে বিনয়ের সঙ্গে বলার চেষ্টা করেছিলাম, দেখুন আমি মাত্র চার বছর আগে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলাম। সেখানে আমি যাদের সঙ্গে পড়তাম তারা অধিকাংশই আমার সন্তানের বয়সি। তাই খুব সহজেই তারা আমার আপন হয়ে গিয়েছিল। এদের ভিতর কয়েকজনকে দেখেছি, গ্রাম থেকে বাবার জমি বিক্রি করে এসে এমবিএ ক্লাসে ভর্তি হয়েছে। তারা মনে করেছিল, এমবিএ পাস করলে তারা একটা চাকরি পাবে। বাবার ওই জমিটুকু তাদের সংসারের অভাব মেটায় না। চাকরি হয়ত তাদের সংসারের অনটন দূর করে দেবে। আবার বিশেষ পেশার মানুষকেও পেয়েছি, যারা তাদের পেশার ইনস্টিটিউটে না পড়ে এখানে এসেছেন খরচ কম বলে। আবার ডিগ্রিটিও তাঁর দরকার। তাঁর ধারণা এই ডিগ্রি তাঁকে প্রমোশন পেতে সাহায্য করবে। তাই সংসারকে কষ্ট দিয়ে ভবিষ্যতের সুখের আশায় ওই তরুণ চাকরিজীবী এই পড়াশোনা চালাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের বাংলাদেশে কতজন ধনী? বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী এ মুহূর্তে সাড়ে চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলাদেশের একটি সেক্টরের প্রতিনিধির সাড়ে চার লাখ পরিবার যদি এমন ধনী হতো যে তাদের সন্তানরা প্রতিদিন এক হাজার টাকা হাতখরচ করতে পারে, তাহলে কী আর বাংলাদেশ নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থাকে?
নির্মম সত্য হলো, প্রতিদিন বাংলাদেশি টাকার এক হাজার টাকা থেকেও বেশি অর্থ হাতখরচ কিছু বাঙালী ছেলেমেয়েরা করছে ঠিকই। কিন্তু তারা তা বাংলাদেশে করছে না। দেশের বাইরে করছে। এরা কিছু রাজনীতিবিদ, কিছু আমলা ও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের সুবিধা পাওয়া কিছু ব্যবসায়ীর সন্তান বা তাদের সন্তানদের সন্তান। এমনকি নির্মম সত্য হলো, তারা যে টাকা সেখানে খরচ করে তার সবটুকু কিন্তু বাংলাদেশ থেকে প্রোপার চ্যানেলে যায় না। এই যে অর্থ যাচ্ছে, এই অর্থের বেশি অংশেরই কিন্তু আয়ের কোনো উৎস নেই। যাহোক, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে এই উৎসহীন টাকা নিয়েও খুব ক্ষোভ থাকার বা একে একেবারে অচ্যুত মনে করার কোনো কারণ নেই। বরং এটাই সত্য, মুক্তবাজার অর্থনীতি হলে সেখানে উৎসহীন অর্থ কিছু থাকবেই। এই উৎসহীন অর্থ নিয়ে যে মানসিকতা ওই একই মানসিকতা কিন্তু সমাজে ও রাষ্ট্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর ভ্যাট বসানোর মতো চিন্তাকে সামনে আনছে। তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির ধারণা থেকে আমরা যে কোনো প্রাইভেট খাতকে বাঁকা চোখে দেখি। একই রকম বাঁকা চোখেই উৎসহীন অর্থ বা কালোটাকাকে সাদা করার কোনো সুযোগ দিলেই আমরা অর্থমন্ত্রীর চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে ফেলি। যার ফলে সরকার বাধ্য হয়, বুর্জোয়া অর্থনীতির অনিবার্য একটি বিষয় উৎসহীন অর্থকে কঠিন বাঁধনে বাঁধতে। আর সরকার যতই বাঁধন শক্ত করে ততই চোরা পথে অর্থ বিদেশে চলে যায়। ফলে দেশের পুঁজি বিদেশে চলে যায়। যাহোক, এ প্রসঙ্গে গেলে লেখার পরিসর বেড়ে যাবে। প্রসঙ্গও ভিন্ন হয়ে যাবে। তবে, এ মুহূর্তে উন্নয়নশীল অনেক দেশ কিন্তু ভাবতে শুরু করেছে- কালো টাকা আসলে কতটা কালো? বেশি কালো বলে বিদেশে তাড়িয়ে দিচ্ছি না তো?
বাস্তবে সমাজের এক শ্রেণির এই মানসিকতাই কিন্তু এ সমাজে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে- মেয়েদের সম্পর্কে ও তাদের গার্ডিয়ানদের আর্থিক সঙ্গতি সম্পর্কে একটি ভুল ধারণার সৃষ্টি করে রেখেছে। শুধু যে আর্থিক সঙ্গতি সম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি করেছে তা নয়, ওই ছেলেমেয়েদের সম্পর্কেও ভুল ধারণা সৃষ্টি করেছে। যেমন- প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যে সময়ে আন্দোলন করছিল ওই সময়ে দেখি আন্দোলন বিরোধী একজন আমার ফেসবুকের টাইম লাইনে একটি প্ল্যাকার্ডের অশ্লীল অর্থ করে ট্যাগ করেছে। তাড়াতাড়ি আমি তা হাইড করি। লজ্জিত হই। তবে আমি ওই ব্যক্তিকে আনফ্রেন্ড করিনি। কারণ, এর থেকেও অনেক উঁচু স্থানে সম্প্রতি আমি এর থেকে বেশি অজ্ঞতা দেখেছি। তাই কার নিন্দা করব, কাকে আনফ্রেন্ড করব- মাথা নত করা ছাড়া! শুধু ওই কন্যাসম ছাত্রীটির প্রতি মাথা নত করি। মনে মনে বলি, মামণি, তোর ভাষা বোঝার মতো সজ্ঞান আমার খুব কম। এ পাপ আমাদের সকলের-তুই কষ্ট নিস না। সমাজে এভাবেই কষ্টকে হাসিমুখে নিয়ে এগুতে হয়। মেয়েটির প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, মন পাবি/ দেহ পাবি/ ভ্যাট পাবি না। একটি মেয়ের হাতে প্ল্যাকার্ড আর তাতে দেহ আছে। আর তো কথা নেই শিয়াল যেমন মুরগি দেখলে লক লক করে ওঠে। এখানেও মেয়ের হাতের প্ল্যাকার্ডে ‘দেহ’ শব্দ লেখা। শিয়ালদের আর ‘রা’ ধরতে কি সময় লাগে? একদিন পরে দেখলাম, মেয়েটি নিজেই অর্থ করে দিয়েছে একটি টিভি চ্যানেলে তার প্ল্যাকার্ডের। মন পাবি অর্থাৎ ভ্যাট উঠিয়ে নিলে সরকার আমাদের ছাত্রদের হৃদয় জয় করে নেবে। দেহ পাবি অর্থাৎ যদি পুলিশ গুলি চালায় আমরা মারা যাব। আমাদের দেহ পাবে। আর ভ্যাট পাবি না অর্থাৎ মৃত্যুকে মেনে নেব তবু ভ্যাট দেব না। যেখানে এই প্ল্যাকার্ডটির চমৎকার প্রকাশ নিয়ে প্রশংসিত হবার কথা- তার বদলে মেয়েটিকে লজ্জা থেকে বাঁচতে নিজেকে ব্যাখ্যা দিতে হলো। তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওই আন্দোলনে হিযবুত বা জামাতিরা যে ঢোকার চেষ্টা করেছিলো তারও প্রমাণ দেয় কিন্তু একটি প্ল্যাকার্ডে। কিছু ছাত্রের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘জয়বাংলা, ভ্যাট সামলা’। ‘জয়বাংলা’ স্লোগান নিয়ে যারা এ ধরনের মানসিকতা পোষণ করে তারা যে হিযবুত-জামায়াত এতে সন্দেহ নেই।
যাহোক মেয়েটির প্ল্যাকার্ড নিয়ে যা ঘটেছে এরপরে কি বলার কোনো সুযোগ আছে সমাজ আলোর পথে চলছে! অজ্ঞতার অন্ধকার দূর হচ্ছে। দেশের ৮৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর ১০টি মাত্র ভাল। ২৬টির মান মোটামুুটি ভাল। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হিসাব। বেশ কিছুর মান একেবারেই খারাপ। অন্যদিকে ওই প্ল্যাকার্ডটিকে ঘিরে অশ্লীল মন্তব্য দিয়ে আমার ফেসবুকের টাইম লাইনে যে ট্যাগ করেছিল সে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার শিক্ষা তাকে ওই বোধ ও মানসিকতা দিয়েছে। তাহলে তার মানও কি ভাল? কেন শিক্ষার ও বোধের এ অবস্থা তা শিক্ষাবিদরা ভাল বলবেন। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কোনো কথা এখন আর কেউ শুনতে চায় না। কারণ তাকে ঘিরে শিক্ষার বিষয় কোনো কিছু চিন্তা করা এখন সময় নষ্ট ছাড়া কিছু নয়। তবে সম্প্রতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন তাঁর একটি ইন্টারভিউ নেয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ব্যক্তিগত আলোচনায় একটি কথা বলেছিলেন- যে বিষয়টি এখন এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভাল করতে গেলে আমলে নিতেই হবে। তিনি বলেছিলেন, শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে আবেদনকারীরা সকলে কম্পিউটার নিয়ে আসছে। সেখানে কেবল পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেনটেশনে প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তরের পয়েন্ট বলে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন তাদের ক্লাস লেকচার দিতে বলেন। সেখানে তারা কিছুই বলতে পারেন না। আসলে এখানেই গলদটি। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অবধি শিক্ষক তো শুধু প্রশ্নের উত্তর শেখানো আর পাস করানো- এ দায়িত্ব পালন করেন না। তিনি ছাত্রকে শিক্ষা দেন। শিক্ষা সব সময়ই প্রিজমের মতো নানান কৌণিক। এর ভিতর দিয়ে সব সময়ই আলোর সাতরঙ দেখা যায়। শুধু সাদা দেখে না শিক্ষিতরা। আর এটা শেখে ছাত্ররা শিক্ষকের ক্লাস লেকচার থেকে। যেখানে ভার্সেটাইল নলেজ উপস্থাপন হয় নানানভাবে।
মনে হয় না গত সাত বছরে দেশের শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের মতো প্রতিভাবান শিক্ষকদের একবারও ডেকে বলেছেন যে, আপনারা বলুন না শিক্ষার মান বাড়ানো যায় কীভাবে? আমাদের গলদ কোথায়? অবশ্য এসব কাজ ক্ষমতাধরদের করাও ঠিক নয়। তারা দেশের দন্ডমুন্ডের কর্তা। তাদের আগে পিছে পুলিশ থাকে। ট্যাক্স ফ্রি গাড়িতে চলেন। কোনো ট্রাফিক জ্যামে পড়তে হয় না। আগে রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যায়। তাঁরা কেন- হাফ সিøভ শার্ট পরে একটা লোক পড়ান, গবেষণা করেন আর বই লেখেন তাকে ডেকে শুনতে যাবেন? এ অন্যায় আবদার তাঁদের প্রতি আমাদের করাও ঠিক নয়। বরং অজ্ঞতা বাড়বে, আমাদের কন্যারা আরও অপমানিত হবে- এটাই এ সমাজে আমাদের ধরে নিতে হবে।
রবীন্দ্রনাথ কখনই বাঙালীকে নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী ছিলেন না। তবে বাঙালীকে তাঁর থেকে বেশি কেউ চেনেননি। এমনকি বঙ্গবন্ধুও নন। কারণ, বঙ্গবন্ধু যদি সত্যি সত্যি রবীন্দ্রনাথের মতো, এই খর্বাকৃতি জাতির- শঠ, পরশ্রীকাতর এমনি সব চরিত্রগুলো চিনতেন তাহলে হয়ত তাঁর শিশু পুত্রটিকেও অমন নির্মম মৃত্যু বরণ করতে হতো না। যাহোক, তারপরেও রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘এই শঠ, পরশ্রীকাতর ... জাতির ভিতর ভুল করিয়া দুই একজন মানুষ জন্মিয়া যায়।’ আজ বাঙালীকে বলতেই হবে, সেই মানুষদের একজন শেখ হাসিনা। যে কারণে সব দায় তাঁকে বহন করতে হয়। সবাই মিলে যখন বাংলাদেশকে অস্থির করতে পছন্দ করি, সবাই ম্যাড টি পার্টির পার্ট হয়ে যাই তখন তাকেই সব দায় কাঁধে নিয়ে বাংলাদেশকে নিস্তরঙ্গ করতে হয়। এবারও তিনি করেছেন। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা শেখ হাসিনার ওপর খুশি হয়ে তাদের পড়াশোনায় ফিরে গেছে।
এখন শেখ হাসিনার কাঁধে সব দায় না দিয়ে, শেখ হাসিনা যাদের কাঁধে যে দায় দিয়েছেন তাঁরা দয়া করে একটু ভাবুন, কীভাবে দেশের মানুষের আয়ের সঙ্গে, সামর্থ্যরে সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রাইভেট সেক্টরে শিক্ষাকে এগিয়ে নেয়া যায়। কারণ, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কখনই সব শিক্ষা পাবলিক সেক্টরে রাখা যাবে না। আগামীতে প্রাইভেট সেক্টরই বড় হবে। তাই শিক্ষার কাঠামো, শিক্ষার মান ও শিক্ষার প্রাইভেট সেক্টর এগুলো নিয়ে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মেঠো বক্তৃতায় শিক্ষা সেক্টর এগিয়ে নেয়া যায় না। সর্বোপরি ইরানী একটি কবিতার অনুকরণে বলতে হয়, জীবনে অন্ধকার আসুক, আলো আসুক, সংঘাত আসুক- সবই ভালর জন্যে আসে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এ আন্দোলনটিও তাই এ সমাজ ও রাষ্ট্রের ভালর জন্যে হয়েছে। হয়ত এই আন্দোলনের পরে এখন রাষ্ট্র ও সমাজ এ সেক্টরটিকে নিয়ে দ্রুত ভাববে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কারা তাও এ সমাজ জানতে পারলো। এ জন্যে প্রয়োজন ছিল এ আন্দোলনটির।
-লেখকঃ স্বদেশ রায়
swadeshroy@gmail.com