॥ রাইসা হেলাল ॥
স্নাতক (সম্মান), ১ম বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এইচএসসি পরীক্ষার পর যে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বেশ চিন্তায় পড়তে হয় তা হল, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি। এর মধ্যে বেশিরভাগেরই ইচ্ছা থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল, ইত্যাদিতে পড়ার। তাই তারা এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই ভর্তির প্রস্তুতিতে লেগে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, দিন-রাত খেয়ে না খেয়ে পড়েও অনেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় না।
আল্লাহর অশেষ রহমতে আমাকে এ ধরনের ঝামেলায় পড়তে হয়নি। প্রথম প্রচেষ্টাতেই আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে গিয়েছি। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধবকে দেখেছি দিন-রাত খেটেছে ঢাবিতে চান্স পাওয়ার জন্য, অথচ কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই চান্স পায়নি। তাদের অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠেছিলাম আমি। তারা অনেকেই নানারকম দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলÑ তাদের চেয়ে তুলনামূলক কম খেটে কিভাবে ঢাবিতে চান্স পেলাম! আজ সে বিষয়েই লিখছি।
আমাদের পরিবার গবফরঃধঃরড়হ ঙৎরবহঃবফ পরিবার; ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা আমাকে মেডিটেশন চর্চা শিখিয়েছেন। ভর্তি পরীক্ষার আগে যেখানে সবাই দিন-রাত খেটে শুধুই পড়াশোনা করেছে, সেখানে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি মেডিটেশন চর্চাটি চালু রেখেছিলাম। শুধু পরীক্ষার আগে বললে ভুল হবে, নবম শ্রেণি থেকে প্রায় নিয়মিতভাবেই মেডিটেশনে এবং নামায পড়ে প্রার্থনা করতাম, যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাই।
ভর্তি পরীক্ষার আগে ৩ মাস প্রতিনিয়ত মেডিটেশন লেভেলে গিয়ে দেখেছি আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। এভাবে কল্পনা করতে করতে এক সময় কল্পনাকে বাস্তব মনে হতে লাগল। নিজের ওপর বিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছিল যে, আমি চান্স পাবোই!
শুধু মেডিটেশন নয়, পজিটিভ চিন্তাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার চান্স পাওয়ার একটি কারণ। সবসময় এটিই চিন্তা করেছি যে, আমি ঢাবিতে পড়ছি, ক্লাস করছি, টিএসসিতে ঘুরছি। একটিবারের জন্যও আমার মনে এরূপ চিন্তা আসেনি যে, চান্স পাবো না অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবো না। এরূপ পজিটিভ চিন্তাকে সাথে নিয়েই দৃঢ় বিশ্বাসে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।
ভর্তি পরীক্ষার দিন আমার বন্ধু-বান্ধবরা প্রচন্ডরকম নার্ভাস ছিল। নার্ভাসনেসের কারণেও অনেকে জানা প্রশ্নের ভুল উত্তর দিয়ে এসেছে। অথচ আমার মধ্যে এতটুকুও নার্ভাসনেস ছিল না, কারণ আমার মন এবং মস্তিষ্ক এই ঝরমহধষ পেয়ে গিয়েছিল যে, আমি ঢাবিতেই পড়ব। ঠান্ডা ও নিশ্চিন্ত মাথায় পরীক্ষা দিতে পেরেছিলাম বলেই আমার বেশিরভাগ উত্তর ছিল নির্ভুল। আর এ জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি।
সবশেষে বলব, কঠোর পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু শুধু পরিশ্রম দিয়ে সবকিছু জয় করা যায় না -মনোবল, আত্মবিশ্বাস পজিটিভ চিন্তা এসবেরও প্রয়োজন হয়। আর সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন, তা হল বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখা। আর এরূপ স্বপ্ন দেখতে এবং স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করে মেডিটেশন।
যারা আগামীতে ভর্তি পরীক্ষা দেবে তাদের উদ্দেশ্যে বলব, শুধু পড়াশোনায় মগ্ন না হয়ে এর পাশাপাশি সঠিক নিয়মে মেডিটেশন চর্চা করলে জীবনের সকল পরীক্ষাই খুব সহজ হয়ে যায়। তাছাড়া নিজের ওপর বিশ্বাসটা দৃঢ় করার জন্য মেডিটেশনের কোনো বিকল্প নেই। খুব সহজে এবং বিনামূল্যে মেডিটেশন শিখতে ও চর্চা করতে তোমরা আসতে পারো ৩৩ তোপখানা রোডে অবস্থিত ক্যাম্পাস কার্যালয়ে।