দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উচ্চ শিক্ষা-গবেষণার একমাত্র প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর ৩য় সমাবর্তন ১৪ মার্চ কেন্দ্রিয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোঃ আবদুল হামিদ ৩য় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, বিশিষ্ট প্রকৌশল শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত মাননীয় অতিথি, মাননীয় সংসদ সদস্য, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন আমন্ত্রিত অতিথিসহ সর্বমোট প্রায় ৩০০০ হাজার অতিথি ছিলেন।
এবারের সমাবর্তনে মোট ১৬০৩ জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে স্নাতক রয়েছেন ১৫৬৪ জন, মাস্টার্স ৩২ জন, পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ০৪ জন এবং পিএইচডি ০৩ জন। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য উক্ত সমাবর্তনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক চারজনকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। সমাবর্তন শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে সমাবর্তনের অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং সমাবর্তনের মুল অনুষ্ঠান শেষে প্রাক্তন গ্রাাজুয়েটদের নিয়ে একটি পুর্নমিলনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিআইটি পর্যায়ে ১৯৯৮ সালে ২০০৩ সালে দুটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম এবং ২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উচ্চ-শিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষতার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিআইটি, চট্টগ্রাম ১লা সেপ্টেম্বর ২০০৩ থেকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Chittagong University of Engineering & Technology) নামে যাত্রা শুরু করে।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল, সিভিল এন্ড ওয়াটার রির্সোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল, যন্ত্রকৌশল, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, স্থাপত্য বিভাগ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং মেকাট্রনিক্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসমূহে স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে।
এছাড়া পুরকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল, যন্ত্রকৌশল, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিজেস্টার এন্ড এনভায়রণমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, পদার্থ বিদ্যা বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, গণিত বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ও PhD ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে।
প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষা-গবেষণার আরো বিস্তার ও যুগোপযোগী করার জন্য স্নাতক পর্যায়ে ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল এন্ড ওয়াটার রির্সোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকাট্রনিক্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পাশপাশি ইনস্টটিউট অব এনার্জি টেকনোলজি (IET), ইনস্টিটিউট অব আর্থকোয়াক ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ (IEER) এ স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে।
এছাড়া ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন এন্ড কম্যুনিকেশন টেকনোলজির অধীনেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। Bureau of Research Testing & Consultancy (BRTC) মাধ্যমে বিবিধ শিল্প ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। বিশ্বমানের শিক্ষা-গবেষণার নিমিত্তে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে Centre for Environmental Science & Engineering (CESE), Centre for River, Harbor & Landslide Research (CRHLSR) এবং Centre for Industrial Problems Research (CIPR)। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম অনুসরণে ১টি University Central Research Lab এবং Directorate of Continuing Education (DCE) চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দেশি-বিদেশি Accreditation প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের Quality Assurance নিশ্চিত করার লক্ষে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের তত্ত্বাবধানে Higher Education Quality Enhancement Project (HEQEP) এর আওতায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে Institutional Quality Assurance Cell (IQAC) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বিগত কয়েক বছরে বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন- জাপানের ইয়ামাগাতা ইউনিভার্সিটি, দণি কোরিয়ার উলসান ইউনিভার্সিটি, জার্মানীর ক্যাসেল ইউনিভার্সিটি, জাপানের সাগা ইউনিভার্সিটি, ডেনমার্কের অলবর্গ ইউনিভার্সিটি, জার্মানীর স্টুটগার্ট ইউনিভার্সিটি, চীনের হারবিন ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই ইউনিভার্সিটি, নেপালের ন্যাশনাল সোসাইটি ফর আর্থকোয়াক টেকনোলজি-এর সাথে একাডেমিক Joint Collaboration স্মারক স্বারিত হয়েছে। এছাড়া জার্মানীর ক্যাসেল ইউনিভার্সিটি ও চুয়েট’র যৌথ উদ্যোগে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের Disaster and Environmental Engineering বিভাগের অধীনে দুই বৎসর মেয়াদী এমএসসি ইন ডিজাস্টার এন্ড এনভায়রণমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু আছে। প্রতি বৎসর ছাত্র-শিক্ষক জার্মানীতে ২ সপ্তাহ থেকে ৫ মাস সময়ের জন্য পড়ালেখা করে আসছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে South East Asian Network for Disaster & Environmental Engineering (SEAN-DEE) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এই Network CUET, KUET, SUST, ভারতের NIE, নেপালের Trivhuban University এর সঙ্গে যুক্ত আছে। নেদারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে Water Resources Management এর উপর ৪ বৎসর মেয়াদী Capacity Building প্রকল্প।
উক্ত প্রকল্পের অধীনে নদী শাসনের উপর গবেষণার জন্য একটি অত্যাধুনিক Hydraulic Lab প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং বাংলাদেশে DELTA PLAN বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত হয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিশ্বমানের গবেষণা ও তথ্য আদান-প্রদানের নিমিত্তে যুক্তরাষ্ট্রের ‘University of Hawaii-এর সহযোগিতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘Climate Change Application Centre প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বিশ্বের ৭টি দেশের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক গবেষণা ফোরাম International Forum On Strategic Technology (IFOST) এর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তির (MoU) ফলে IFOST এর অন্যান্য সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুয়েটের যৌথভাবে গবেষণা ও Teacher-Student Exchange প্রোগ্রাম চালু করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের তত্ত্বাবধানে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে Industry-University Collaboration প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিদেশী ভাষা শিক্ষা দেয়ার জন্য Language Center প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জাপানী ও জার্মান ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা এবং গবেষণার একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়কে Center of Excellence হিসেবে গড়ার নানামুখী নিরন্তর প্রয়াস চালানো হচ্ছে। এরই সূত্র ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রেরিত একটি উচ্চ বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়। উক্ত প্রকল্প দ্রুত অনুমোদনের পর বাস্তবায়ন করা গেলে এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বমানের শিক্ষা-গবেষণার মডেল হিসেবে পরিচিতি পাবে। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন এবং উন্নত দেশের কাতারে পৌছাঁর অভিযাত্রায় শামিল হয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে Mini Silicon Valley হিসেবে গড়ে তোলার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আইটি সেক্টরে উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম CUET IT Business Incubator, একটি IT Park এবং একটি IT Village প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উক্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বিশ্বের খ্যাতনামা কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবনী কার্যক্রমে অংশগ্রহন করতে পারবে এবং আমাদের প্রিয় দেশকে মধ্যম আয় থেকে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছানোর নিমিত্তে চলমান গতিশীল প্রচেষ্টায় CUET IT Business Incubator, IT Park এবং IT Village স্থাপন সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমরা মনে করি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রস্তাবিত ‘চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আই.টি. পার্ক’ স্থাপনের নিমিত্তে ইতিমধ্যেই ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ১০ একর ভূমির দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্ত পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীনে এতদ্অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য চুয়েটে Robotics Lab, animation software Lab, Mobile Apps Lab প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
চলতি বছর পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমই) বিভাগ থেকে প্রকৌশল ডিগ্রি প্রদান করেছে। এসব প্রকৌশলী এখন জ্বালানি নিরাপত্তা, খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানসহ এই সেক্টরের নানাবিধ কর্মকান্ডে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে দেশকে সেবা দিতে সক্ষম।
উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে এবং বর্তমান সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে Nuclear Engineering, Automobiles Engineering, Bio-medical Engineering, Computer Engineering & Information Technology, Coastal Engineering এবং Railway Engineering নামে নতুন পাঁচটি বিভাগ প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে একটি হাইড্রোজেন (H2) ফুয়েল বেইজড বাইসাইকেল (Fuel Cell Based Bicycle) তৈরির প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বায়োডিজেল প্ল্যান্ট (Bio-Diesel Plant) স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরিত্যক্ত বীজ থেকে তেল সংগ্রহ করে তা জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর করে বৃহত্তর উন্নয়নে ভূমিকা রাখা হবে। উক্ত চষধহঃ দরিদ্র জনগোষ্ঠির ভাগ্য বদলের নতুন দিশা দিতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের বিবিধ শিা-গবেষণার নিমিত্তে এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি Energy Park (Field Laboratory) স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। Energy Parkটিতে ছাত্রছাত্রী এবং গবেষকগণের জন্য Wind Energy, Water Energy, Coal Energy, Solar Energy, Oil Energy এবং Gas Energy বিষয়ক গবেষণা Laboratory থাকবে।
ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির সহযোগিতায় Solar Energy Park স্থাপনের ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের তত্ত্বাবধানে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত HEQEP এর অধীনে Renewable Energy Lab স্থাপনের কাজ চলছে। চুয়েট’র অবস্থান চট্টগ্রাম শহর থেকে বেশ দূরে। তাই চট্টগ্রাম শহর সংলগ্ন কাপ্তাই রাস্তার মাথাস্থ জানালী হাট থেকে চুয়েট ক্যম্পাস পর্যন্ত আনুমানিক ১৫ কি. মি. রেললাইন সম্প্রসারণ প্রয়োজন। বহুল প্রত্যাশিত রেললাইন সম্প্রসারণের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৭ম বৈঠকে সিদ্ধান্ত মোতাবেক চট্টগ্রাম শহরের জানালী হাট থেকে চুয়েট-পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণে প্রাথমিক সমীক্ষা ও জরিপ কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, সেশনজটমুক্ত, অস্থিরতামুক্ত একটি সুন্দর সুখী পরিবার হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে।
সীমিত বাজেটের মধ্যে উচ্চ শিক্ষা-গবেষণায় চুয়েট নানা সাফল্য লাভ করে দেশে-বিদেশে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে, প্রতিবছর সফলভাবে একাধিক আর্ন্তজাতিক কনফারেন্স-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠান, বিভিন্ন খ্যাতনামা জার্নালে নিয়মিত গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ, বিশ্বমানের ল্যাব যন্ত্রপাতি সংযোজন, Robotics গবেষণায় যুগান্তকারী উদ্ভাবন, মৌলিক গবেষণায় Nanotechnology এর ব্যবহার, সরকারের রূপকল্প অনুসরণে ভিশন ২০২১ গ্রহন ও ভিশন ২০৪১ প্রণয়নের উদ্যোগ, বিদেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে উচ্চ শিক্ষা-গবেষণায় সমঝোতা চুক্তি গড়ে তোলা, বিশ্বব্যাংক, জার্মানি, জাপান, নেদারল্যান্ডসরকারসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও সফল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়া চুয়েট এলামনাইসহ অন্যান্য শুভাকাড়খী ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার বন্ধন আরো দৃঢ় হয়েছে। সর্বোপরি বাংলাদেশকে সত্যিকারের ডিজিটাল দেশে রূপান্তরিত করতে দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষা-গবেষণার অন্যতম এই শীর্ষ প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।