মহামারী করোনাভাইরাস জনজীবনকে অনেকটা স্তম্ভিত করে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে কোভিড চীনকে তছনছ করা শুরু করে। দেখতে দেখতে সারা বিশ্ব করোনায় আক্রান্ত। গোটা পৃথিবীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় সংক্রমণের তান্ডবে। মার্চ ২০২০-এর শেষ দিক থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। আর শহুরে শিক্ষার্থীদের অবস্থা আরো করুণ। তারা শুধু বিদ্যালয় নয়, খোলা আকাশের নিচে যাওয়ার সাহস পায় না। শিক্ষা শিকেয় ওঠার উপক্রম।
বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার যান্ত্রিক প্রচেষ্টা চলছে। সেনাবাহিনী পরিচালিত অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে শিক্ষার ব্যবস্থা করছে। এটা যেন নিবিড় অন্ধকারে জোনাকির আলো, কারণ দেশের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এ কার্যক্রমের ব্যাপারে অন্ধকারে।
সরকার দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল ক্লাস নির্মাণে কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে ডিজিটাল ল্যাব, কিন্তু সেসব প্রতিষ্ঠান কতটুকু ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস নিচ্ছে এবং ল্যাব ব্যবহার করছে, তা নিয়ে শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের এসব প্রকল্প থেকে বর্তমানে শিক্ষার্থীরা যথাযথভাবে উপকৃত হচ্ছে না বলে অনেকেরই মতামত।
সরকারের নেয়া উদ্যোগ এখনও ফলপ্রসু না হলেও ডিজিটাল ক্লাসরুম পরিচালনা ও ভার্চুয়াল ক্লাসে সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে দেশের প্রথম ডিজিটাল-স্মার্ট ক্যাম্পাস স্থাপন করা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সব বইয়ের ডিজিটাল কনটেন্ট প্রস্তুত করে অনেক আগে থেকেই নিয়মিত ক্লাস পরিচালনাও করছে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বিএসবি ফাউন্ডেশন পরিচালিত ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি দেশের ১৫টি ক্যাম্পাসেই এই সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে, হয়ে উঠেছে দেশের ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম পথিকৃৎ। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ছুটির সময় ডিজিটাল মাধ্যমের ভার্চুয়াল ক্লাসেও শিক্ষা প্রদানে অনবদ্য সাফল্য দেখিয়ে চলেছে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
মহামারীর মধ্যেও যেভাবে ক্লাস নিচ্ছে ক্যামব্রিয়ান
করোনার উদ্ভূত প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দীর্ঘ এই ছুটিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দি। কিন্তু বসে নেই ক্যামব্রিয়ানের শিক্ষার্থীরা। করোনার কারণে ঘোষিত ছুটির শুরু থেকে জুম ক্লাউড, ইউটিউব, হোয়াটস অ্যাপ, গুগল ক্লাসরুম ও ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে ক্লাস পরিচালনা করছে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের ১৫টি ক্যাম্পাসে সবগুলো বিষয়ের ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার করে ডিজিটাল ক্লাস পরিচালিত হচ্ছে করোনা সংকটের আগে থেকেই। শুধু ক্লাস নয়; ঢাকার মোহাম্মদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জের তিনটি ক্যাম্পাস স্মার্ট ক্যাম্পাস হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন ভার্চুয়াল ক্লাস শুরু করতে নানা সংকটে পড়ছে, তখন সফলভাবে ভার্চুয়াল ক্লাস পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে ক্যামিব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। কোনো অভিযোগ ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটি করোনা সংকটে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি পর্যায়ে শুধুমাত্র ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের রয়েছে স্মার্ট ক্লাসরুম। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে দেশের এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের স্মার্ট ক্লাসরুমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিবছর শীর্ষ ১০০ ক্ষুদে প্রোগ্রামারও তৈরি হচ্ছে।
বিএসবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার বলেন, প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ক্যামবিয়ানের সব শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের কনটেন্ট প্রস্তুত করা আছে। সরকার চাইলে আমাদের কনটেন্ট শেয়ার করতে পারে। সম্প্রতি তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কনটেন্ট শেয়ারিংয়ের জন্য চুক্তি করতে একটি খসড়া প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। শিগগিরই হয়তো একটা চুক্তি হবে সরকারের সঙ্গে। দেশের আধুনিক শিক্ষার বিস্তারে বিএসবি ফাউন্ডেশন বিনা অর্থে সব কনটেন্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
ক্যামব্রিয়ানের ফাউন্ডার লায়ন এম কে বাশার জানান, এনসিটিবির বই ছাড়াও সরকার অনুমোদিত অন্যান্য সব পাঠ্যবইয়েরও ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করেছে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
করোনা পরিস্থিতির আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে, সব ক্লাসেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি পাঠ্যবইয়ের ডিজিটাল কনটেন্ট উপস্থাপন করা হচ্ছে স্মার্ট বোর্ডে। শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণও রয়েছে প্রযুক্তিগতভাবেই। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের বই ব্যবহার না করেই ডিজিটাল কনটেন্ট উপস্থাপন করে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা।
লায়ন এম কে বাশার জানানÑ শুধু মোহাম্মদপুর ক্যাম্পাসে নয়, সব ক্যাম্পাসেই একই নিয়মে একই সময়ে ক্লাস নেয়া এবং ক্লাস শেষ করা হয়। বিশেষ কোনও কারণ ছাড়া দেশের ১৫টি ক্যাম্পাসে একই দিন একই ক্লাস পরিচালিত হয়।
তিনি জানান, ডিজিটাল ক্লাসের পাশাপাশি পুরো ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের যাবতীয় তথ্য শিক্ষার্থীরা নিজ এন্ড্রয়েড মোবাইলের ক্লাউডে প্রবেশ করে দেখতে পারবে। শিক্ষার্থীরা তাদের বিগত সময়ের পরীক্ষার ফল, উপস্থিতির তথ্যসহ সব ধরণের তথ্য জানতে পারবে। আগামী পরীক্ষা ও ক্লাস সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য পাবে।
ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্যামব্রিয়ানের গতিশীল অগ্রযাত্রা
প্রচলিত পদ্ধতির পাঠদান শিক্ষার্থীদের কাছে কঠিন ও নীরস। তাই শিক্ষাব্যবস্থায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, যদিও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে। ডিজিটাল শিক্ষায় ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে অল্পসময়ে অধিক ও সর্বশেষ তথ্য দেয়া সম্ভব হয়। ই-শিক্ষার মাধ্যমে দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর মাঝে একসঙ্গে জ্ঞানের আলো পৌঁছে দেয়া সম্ভব।
মাল্টিমিডিয়া ও ভিডিও’র মাধ্যমে ক্লাস নিয়ে অত্যাধুনিক ডিজিটাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। শিক্ষকরাও এখানে বেশি কার্যকর শিক্ষা দিতে সক্ষম হচ্ছেন। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে শিক্ষকদের কর্মক্ষমতাও বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে।
ডিজিটাল শিক্ষা শিক্ষার্থীদের কাছে হয়ে উঠেছে অনেক বেশি আনন্দময় ও সহজবোধ্য। ডিজিটাল কনটেন্ট পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত বিষয়কে শব্দে, ছবিতে, এনিমেশন, ই-তথ্যকোষ ও গতিময়তায় উপস্থাপন করা হয়। তথ্যচিত্রের মাধ্যমে যে কোনো জটিল বিষয় সহজে উপস্থাপন করা যায়। অনলাইনে ওয়েব লিংক ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা নিজে নিজে স্টাডি করতে পারে। ফলে শিক্ষার্থীরা অনলাইন শিক্ষার দিকেই বেশি আগ্রহী হচ্ছে।
২০০৪ সাল থেকে পরিপূর্ণ শিক্ষার একটা সামগ্রিক ধারণা নিয়ে রাজধানী ঢাকায় পথচলা শুরু করে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সফলতার সিঁড়ি বেয়েই ক্যামব্রিয়ান এখন একটি পরিপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্যামব্রিয়ান আজ একটি বিশাল শিক্ষাপরিবার, বর্তমানে যেখানে পড়াশোনা করছে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীভাবে এগিয়ে যেতে হয় তার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার পিএমজেএফ। তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন ক্যামব্রিয়ানকে ডিজিটাল ক্যাম্পাসে রূপ দেয়ার এবং সেই কাজটি করে দেখিয়েছেন সর্বোচ্চ দুই বছরের ব্যবধানে। নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার কাজটি প্রাথমিক স্তর থেকেই শুরু করাসহ, ক্যামব্রিয়ানকে অত্যাধুনিক যুগোপযোগী এবং একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তিনি এক জ্বলজ্বলে আদর্শ।
২০১১ সালে ক্যামব্রিয়ানের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয় একটি ল্যাপটপ। এরপর ২০১২ সাল থেকে ৫ম ও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রমান্বয়ে দেয়া শুরু হয় ই-প্যাড, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং ২০১৩ সালে ক্যামব্রিয়ানের সকল শিক্ষার্থীদের হাতে একটি করে ই-প্যাড বা ল্যাপটপ তুলে দেয় ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপ।
ডিজিটাল ক্যামব্রিয়ানের শিক্ষার্থীরা যাতে সহজ-সাবলীলভাবে বিচরণ করতে পারে, সেজন্য তৈরি করা হয় ডিজিটাল ক্যামব্রিয়ান নামক একটি সাবলীল সফটওয়্যার। যে সফটওয়্যারে আছে নিম্নমাধ্যমিক থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সকল বোর্ড বইয়ের ডিজিটাল ভার্সন ডিভিডি তথা সফট কপি। ফলে অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর শিক্ষার্থীদের হাতে যে ই-প্যাড বা ল্যাপটপ তুলে দেয়া হচ্ছে, তাতে সত্যিকারের আনন্দময় শিক্ষার এক পরিপূর্ণ পৃথিবী রয়েছে। যেমনÑ সব বইয়ে রয়েছে স্বতন্ত্র ইনডেক্স, যেখানে ক্লিক করে এক সেকেন্ডেই একজন শিক্ষার্থী চলে যেতে পারবে যেকোনো বিষয়ের যেকোনো চ্যাপ্টারে। একই সাথে ক্যামব্রিয়ানের সকল ক্যাম্পাস এখন সম্পূর্ণ ওয়াই-ফাই জোনভুক্ত।
উন্নত বিশ্বের প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ডিজিটাল শিক্ষা বাস্তবায়নের উদ্যোক্তা লায়ন এম কে বাশারের শিক্ষা পদ্ধতি প্রচলিত ধারা থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। ক্যামব্রিয়ানে রয়েছে ৪০০ মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, স্মার্টবোর্ড, ৭ শতাধিক ডিজিটাল প্যাডাগোজি ও সৃজনশীল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক, ৩ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থীদের ১০১টি শিক্ষা উপকরণ প্রতিষ্ঠান হতে ফ্রি প্রদান, প্লে থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সকল বইয়ের ডিজিটাল ভার্সন ফ্রি প্রদান ইত্যাদি। উল্লেখ্য, ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়তে হয় না। ক্যামব্রিয়ানের ক্যাম্পাস হতে শিক্ষার্থীরা আধুনিক কারিকুলাম ও আন্তর্জাতিকমানের শিক্ষা গ্রহণ করছে।
ক্যামব্রিয়ানের বার্ষিক শিক্ষা কার্যক্রম চলে একটা পর্যায়ক্রমিক এবং টার্ম পদ্ধতিতে। আর পুরো প্রক্রিয়াটি চলে নির্ধারিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি পাঠ পরিকল্পনার মাধ্যমে। তথ্যমতে, এখানে পাঠদান পদ্ধতি চলে কমপক্ষে ১৪টি বিষয় অবলম্বন করে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ লেসন প্লান, প্রতিদিন প্রতিটি বিষয়ের ক্লাস, ক্লাসের আগে লেকচার শিট প্রদান, প্রশ্নব্যাংক ও সমাধান, সাজেশন ও সমাধান, সুপারভাইজরি স্টাডি প্রোগ্রাম বা এসএসপি, অডিও ভিজ্যুয়াল, বিকল্প ক্লাস, মেকআপ ক্লাস, ব্যবহারিক ক্লাস, আবাসিক হোস্টেলে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান, শ্রেণি শিক্ষক, গাইড শিক্ষক ইত্যাদি।
ক্যামব্রিয়ান কলেজের শিক্ষার্থীরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ডাক্তার ও সাংবাদিক হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁদের দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া ক্যামব্রিয়ানের অনেক শিক্ষার্থী এখন ক্যামব্রিয়ানেই কাজ করছে।
ডিজিটাল ক্যাম্পাসে স্টুডেন্টদের জন্য স্মার্ট আইডি কার্ড
ক্যামব্রিয়ানের শিক্ষার্থীদের জন্য আইডি কার্ড তৈরি করা হয়েছে অত্যাধুনিকভাবে। কার্ডে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত স্মার্ট ডিভাইস। ফলে শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার সময় আইডি কার্ড পাঞ্চ করলেই অভিভাবকের মোবাইল নম্বরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার উপস্থিতির ম্যাসেজ চলে যাবে। একইভাবে প্রতিষ্ঠান থেকে বেরুনোর সময়ও কার্ড পাঞ্চ করার সঙ্গে সঙ্গেই অভিভাবকের মোবাইল নম্বরে ম্যাসেজ চলে যাবে।
এই আইডি শুধু উপস্থিতি জানান দিতেই কাজ করে না, শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করে। কোনো কারণে কোনো শিক্ষার্থী বিপদের সম্ভবনা দেখলে তার আইডি কার্ডের এসএমএস বাটনে ক্লিক করলে মোবাইল ফোন থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষার্থীর বাবা ও মায়ের কাছে ফোন চলে যাবে।
ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য
১। ক্যামব্রিয়ানে রয়েছে দেশ সেরা শিক্ষকম-লী, সকলেই সৃজনশীল ও ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট এ ট্রেনিংপ্রাপ্ত এবং রয়েছে প্রতিটি বিষয়ের মাস্টার ট্রেইনার।
২। ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ১০ঃ১।
৩। সকল শিক্ষা উপকরণ প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয়।
৪। কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়তে হয় না।
৫। স্কলারশিপ, হোস্টেল ও ট্রান্সপোর্ট সুবিধা।
৬। সকল ক্লাসরুমে স্মার্ট বোর্ডের মাধ্যমে পাঠদান।
৭। ক্যাম্পাসে রয়েছে আলাদা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র।
৮। স্কাউটিং, বিএনসিসি ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ।
৯। প্রতিষ্ঠানের রয়েছে নিজস্ব কালচারাল একাডেমি। তাই ক্যামব্রিয়ানের শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে নাচের স্কুল, গানের স্কুল, ডেবেটিং স্কুল, মার্শাল আর্ট স্কুল, উপস্থাপনার কোর্স, নাটকের কোর্সে হয় না, সবই রয়েছে ক্যামব্রিয়ানে ফ্রি।
১০। ক্যামব্রিয়ানের সকল শিক্ষার্থীর জন্য বয়সভেদে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ও ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ (Aptis, PTE, iCanRead, IELTS) বাধ্যতামূলক।
ক্যামব্রিয়ান কলেজের আধুনিক ও নান্দনিক পাঠদান পদ্ধতি
১। পাঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী পাঠদান
২। অভিজ্ঞ ও নিবেদিত শিক্ষকম-লী
৩। একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণ
৪। সৃজনশীল পদ্ধতির যথাযথ অনুসরণ
৫। বাংলা ও ইংরেজি ভার্শনে পাঠদান
৬। ক্লাসে আধুনিক শিক্ষা উপকরণের ব্যবহার
৭। নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন
৮। গাইড ও শ্রেণি শিক্ষকের নিবিড় পরিচর্যা
৯। সমৃদ্ধ লাইব্রেরি
১০। নিয়মিত অভিভাবক সভা
নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকারে বিএসবি ফাউন্ডেশন ও বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপ
বাংলাদেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছ, তা শিক্ষার্থীকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে অনেক সময়ই ব্যর্থ হচ্ছে। উন্নত দেশ সবসময়ই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এবং সময়ের প্রয়োজনীয়তাকে মূল্য দিয়ে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিন্যস্ত করে থাকে। ফলে গতিশীল ও আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে তারা তুলে আনে একের পর এক সাফল্য। সেদিক থেকে আমরা পড়ে আছি অনেক পেছনে। বাল্যকাল থেকে আমাদের শিক্ষার সাথে আনন্দ নেই, কেবল যা কিছু নিতান্ত আবশ্যক, তাই কন্ঠস্থ করছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। ফলে আমাদের চিন্তাশক্তি ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
আমাদের দেশে শিক্ষিতের হারও উল্লেখযোগ্য বাড়েনি। শিক্ষার হার দেখলেই বোঝা যায়, আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে কতটুকু পিছিয়ে আছি। ১৯৭১ সালের পূর্ব পর্যন্ত আমরা ব্রিটিশ ও পাকিস্তানীদের শাসন-শোষণে নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছিলাম। আমরা বঞ্চিত হয়েছি শিক্ষাদীক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি প্রতিটি ক্ষেত্রেই। এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশেও আমরা বেশিদূর এগুতে পারিনি। এর অন্যতম কারণ শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির অশুভ আছর, অব্যবস্থাপনা ও অবহেলা।
আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাই নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত। কী প্রাথমিক, কী মাধ্যমিক, কী উচ্চশিক্ষা সকল স্তরেই যেন দৈন্যদশা। এর অন্যতম কারণ নিরপেক্ষভাবে শিক্ষার উন্নয়নে কোনো সরকারই আন্তরিকভাবে এগোয়নি। বিশেষ করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সবসময়ই রাজনীতির ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে বরাবরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা এবং শিক্ষার্থী।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ’৯০ এর দশকে বাংলাদেশে উত্তাল রাজনীতির কারণে শিক্ষাঙ্গনে যখন অস্থিরতা চলছিল; সন্ত্রাস, দাঙ্গা-হাঙ্গামার কারণে যখন একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে সেশনজট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছিল তখন সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছিলেন অভিভাবকরা। দেশের সেই ক্রান্তিলগ্নে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় আজীবন শিক্ষাব্রতী, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাদ্যোক্তা লায়ন এম কে বাশার এর নেতৃত্বে। তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণেচ্ছু হতাশাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বিদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার ব্যবস্থা করলেন। চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে বিএসবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার জনগণের মণিকোঠায় স্থান করে নিলেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠান বিদেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হয়ে ওঠে।
এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। প্রতিষ্ঠা করেন বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপ যা দেশের প্রথম এডুকেশন গ্রুপ যেখানে আছে আধুনিকতার ছোঁয়া। ক্যামব্রিয়ানে খুঁজে পাওয়া যায় শিক্ষার সঙ্গে জীবনের প্রতিচ্ছবি। বলতে গেলে Total Quality Education পাওয়া যাবে বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের মাধ্যমে।
বিএসবি এবং ক্যামব্রিয়ানের একসাথে দীর্ঘ পথ চলায় যুক্ত হয়েছে নানা স্বীকৃতি, প্রাপ্তি, অসাধারণ খ্যাতি এবং ঈষর্ণীয় সাফল্যময় ফল। অব্যাহত সেবার মান ধরে রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ দ্বিতীয় বারের মতো ISO 9001:2008 সনদ অর্জন, টক এর Accreditation সংস্থা ASIC কর্তৃক Accreditation লাভ। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ জাতীয় অর্জন বাংলাদেশের জন্য এটাই প্রথম এবং একমাত্র।
বিএসবি ফাউন্ডেশনের যাত্রা
বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক সার্ভিস একে একে তার পরিধি বৃদ্ধি করতে গিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি দেশে আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ায় মনোনিবেশ করে। তারই ধারাবাহিকতায় লায়ন এম কে বাশার ২০০৪ সালে ঢাকায় গড়ে তোলেন ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের নামে মাদ্রাসাতু ছালেহা খাতুন মাদ্রাসা। পরবর্তীতে শিক্ষা, সেবা ও জনকল্যাণমুখী নানাবিধ সেবা কার্যক্রমকে সুচারুরূপে পরিচালনার জন্যে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বিএসবি ফাউন্ডেশন। যাত্রা শুরুর পর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান ছাড়াও এটি বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে আসছে। বিএসবি ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ভিশন-২০২১, বিএসবি ফাউন্ডেশন এওয়ার্ড, স্কলারশিপ প্রদান, বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন, আমরা শিক্ষার সুযোগ চাই ইত্যাদি কর্মসূচি।
ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক সার্ভিসের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মাদ্রাসাতু ছালেহা খাতুন মাদ্রাসাকে ফাউন্ডেশনের অধীনে আনা হয়। পরবর্তীতে এ ফাউন্ডেশন আরো ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ক্যামব্রিয়ান প্রি-স্কুল, ক্যামব্রিয়ান প্রাইমারি স্কুল, ক্যামব্রিয়ান মাধ্যমিক স্কুল, ক্যামব্রিয়ান ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ, মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কিংস কলেজ, উইনসাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ক্যামব্রিয়ান কালচারাল একাডেমি, ক্যামব্রিয়ান ইউনিভার্সিটি (প্রস্তাবিত)। বিএসবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার ভিশন-২০২১ এর প্রবক্তা। তিনি মনে করেন, শিক্ষা ছাড়া মানুষ অন্ধ এবং অন্ধত্বের রং কালো। আর সে কারণেই বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক, বিএসবি ফাউন্ডেশন, ক্যামব্রিয়ান কলেজ এবং এর অঙ্গ সংগঠনসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা কালো পোষাক পরিধান করে। যতদিন দেশ নিরক্ষরমুক্ত না হবে ততদিন এ কালো পোশাক পরিধান করবে বিএসবি পরিবারের সদস্যরা।
বিএসবি’র ভিশন
একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে বিএসবি। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তি। স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জিত হয়নি। জীবনের জন্য প্রয়োজন মৌলিক পাঁচটি বিষয় অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান। কিন্তু শিক্ষার স্থান সবার উপরে। শিক্ষার অভাব পূর্ণ হলে অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয়তা স্বাভাবিকভাবেই আর অবশিষ্ট থাকে না। তাই নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে বিএসবি ফাউন্ডেশন। ইতোমধ্যে স্বাধীনতা অর্জনের কয়েক যুগ অতীত হয়েছে। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্খিত ফল অর্জিত হয়নি। অন্যান্য ক্ষেত্রেও মৌলিক অধিকারগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। সবার আগে বাস্তবায়ন করা দরকার নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ। অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে না পারলে মৌলিক অধিকার, বাঁচার অধিকার এবং মানবিক অধিকারগুলো উপেক্ষিত থাকবে। শিক্ষার আলো ছাড়া সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের কোনো স্তরে পৌঁছা সম্ভব হবে না। মানুষের জীবনে শিক্ষা না থাকলে অজ্ঞতা যাবে না। দারিদ্র্য দূর হবে না, সংস্কারবোধ ও মানবতাবোধ জন্ম নিবে না।
তাই ভিশন-২০২১ শিক্ষা উন্নয়নে একটি সামাজিক আন্দোলন। নির্ধারিত সময়ে নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। ২০২১ সাল নানা কারণে বাঙালি জাতির জন্য একটি তাৎপর্যময় বছর। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হবে এ বছরটিতে। নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৫০ বছর অর্থাৎ সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করাই হচ্ছে ভিশন-২০২১ এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।
মেধা বিকাশে বিএসবি ফাউন্ডেশন
বিএসবি ফাউন্ডেশন প্রাক-প্রাইমারী, প্রাইমারী, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক -এই চার স্তরেই যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান করে জনমনে আস্থা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। বিএসবি ফাউন্ডেশন পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা; ক্যামব্রিয়ান কলেজ, চট্টগ্রাম; কিংস কলেজ, মেট্টোপলিটন কলেজ, উইনসাম কলেজ, নর্থসিটি কলেজ প্রভৃতি।
মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজ
মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষা বিস্তারে ২০০৬ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। বোর্ড পরীক্ষায় এ কলেজের সাফল্য শতভাগ। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪শ’ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। বিএসবি ফাউন্ডেশনের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় মেট্রোপলিটন কলেজের শিক্ষার্থীদেরও কোনো প্রাইভেট পড়তে হয় না। সকল উপকরণও প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহ করা হয়। রয়েছে হোস্টেল ও ট্রান্সপোর্ট সুবিধা এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকমন্ডলী। যাঁদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকশিত হচ্ছে। শিক্ষার আলো ছড়াতে ও নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছে মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
কিংস কলেজ
ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত, অত্যাধুনিক এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু জ্ঞানের রাজারাই পড়ালেখা করে। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি ২০১১ সালে প্রথম উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। নিবেদিত ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী, নিয়ম-শৃংখলা, কঠোর নিরাপত্তা, আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানটিকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে স্বতন্ত্র মর্যাদা দিয়েছে।
নর্থ সিটি কলেজ
ডিজিটাল বাংলাদেশ এর স্বপ্নকে বাস্তবায়নে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বমানের উপযোগী করার লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের আদলে বাংলাদেশে নর্থ সিটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। নর্থ সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি-তে পাস করা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের খ্যাতনামা মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে।
উইনসাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ
উইনসাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ ২০০৮ সালে (কলেজ) ও ২০১০ সালে (স্কুল) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। যার কলেজ কোড- ১১৩৩ এবং স্কুল কোড- ১২২৯। ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে বিএসবি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। এখানে প্লে-গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি (বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়) পর্যন্ত অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী ও ৩০ জন শিক্ষক এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়তে হয় না। সকল শিক্ষা উপকরণ প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয়।
ক্যামব্রিয়ান কালচারাল একাডেমি
লেখাড়ার পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীর মানবীয় গুণাবলি বিকাশের লক্ষ্যে নৃত্য, গান, কবিতা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা প্রভৃতি কালচারাল বিভাগের বিভিন্ন শাখায় পারদর্শী করে গড়ে তোলার জন্য এবং দেশীয় সংস্কৃতি লালন ও দেশাত্মবোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিএসবি ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান কালচারাল একাডেমি, যা ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে।
এ একাডেমিতে রয়েছে মোট ৭টি স্কুল। এগুলো হলো English language division, Training division, School of music, School of dance, School of drawing, School of recitation & School of debate. দেশের গুণী ও স্বনামধন্য প্রশিক্ষক দ্বারা নিবিড় তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করা হয়। বিএসবি ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার্থীবৃন্দ ছাড়াও যেকোনো স্কুলের শিক্ষার্থী এবং যেকোনো বয়সের যেকোনো ব্যক্তি এ একাডেমির স্কুলসমূহে অধ্যয়ন করার সুযোগ পাবে।
ক্যামব্রিয়ান স্কুল
বিএসবি ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান স্কুল। বাংলাদেশের প্রথম ওঝঙ সনদপ্রাপ্ত, ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত সর্বাধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান কলেজের স্কুল শাখা এটি।
ক্যামব্রিয়ান কলেজের সাফল্যের পথ ধরে মাধ্যমিক স্তরে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু করা হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে প্রি-প্রাইমারি স্কুল এবং ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত অর্থাৎ প্রাইমারি স্তর চালু করা হয়েছে।
উপসংহার
শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি যাতে বিকশিত হয়, এ বিষয় খেয়াল রেখে পাঠদান পদ্ধতি আকর্ষণীয় এবং আনন্দময় করে তোলা প্রয়োজন। দেশীয় সম্পদ ও কালচারের সঙ্গে মিল রেখে উদ্ভাবনী ও দক্ষতামূলক শিক্ষা এবং বাস্তব জীবনে কাজে লাগবে এরূপ শিক্ষা কনটেন্ট তৈরি করা প্রয়োজন। ক্যামব্রিয়ান এক্ষেত্রে অনবদ্য সাফল্য দেখিয়েছে Ñএটি নিঃসন্দেহে বলা যায়।
ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা একসময় একটি প্রত্যয় ও স্বপ্ন ছিল। অনেক শিক্ষার্থীরা এখনো এর সুফল থেকে বঞ্চিত হলেও ক্যামব্রিয়ান দেখিয়ে দিয়েছে, সদিচ্ছা থাকলেই সম্ভব অত্যাধুনিক ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।
শিক্ষাক্ষেত্রে জিজিটাল বা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে ক্যামব্রিয়ানের আন্দোলন সফলতা পেয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগের সময় শিক্ষাব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন কৌশল উদ্ঘাটন করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ক্যামব্রিয়ান।
ডিজিটাল ক্লাস এর ফলে প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্যের হাত থেকেও রেহাই পেয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বর্তমান ও আগামী দিনের অনেক চ্যালেঞ্জ তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেই মোকাবেলা করতে হবে। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম যখন বন্ধ, তখন ক্যামব্রিয়ান প্রদর্শিত ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থাই টিকিয়ে রাখতে পারে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা।