দ্বাদশ পরবর্তী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক উভয়েরই ভাবনার প্রয়োজন। এটি শিক্ষার্থীর জীবনের একটি ক্রান্তিকাল। যেখানে জীবন নেবে নতুন বাঁক, বলতে গেলে সত্যিকারভাবে জীবন গড়ার প্রথম সোপান।
স্নাতক বা অনার্সে ভর্তি হবার সময় শিক্ষার্থীকে বিষয় বেছে নিতে হবে নিজেকেই; অভিভাবক বা শিক্ষক তাদের পরামর্শ রাখতে পারেন, কিন্তু তা যেন শিক্ষার্থীর ওপর চাপিয়ে দেয়ার মতো না হয়। শিক্ষার্থীকে শুধু বিষয় বেছে নিলেই চলবে না, তাকে দেখতে হবে যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে, সে প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার ফলাফল, শিক্ষাদান পদ্ধতি, শিক্ষকদের আন্তরিকতা, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ইত্যাদি।
এ ব্যাপারে আমরা কয়েকটি কলেজের চেয়ারম্যান ও অধ্যক্ষের মতামত সংগ্রহের জন্য নিম্নোক্ত প্রশ্ন করেছিলাম, যা এ কলামে সন্নিবেশিত করা হলো। প্রশ্নগুলো ছিল
- দ্বাদশ পরবর্তী উচ্চ শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশের পূর্বে কী কী বিষয় ছাত্র-ছাত্রীদের বিবেচনা করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
- উচ্চশিক্ষা গ্রহণে কেন আপনার কলেজকে শিক্ষার্থীর বেছে নেয়া উচিত বলে মনে করেন?
- কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নে আপনার গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে বলবেন কি?
- কলেজকে ঘিরে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
১৯৬২ সালে ঢাকার শিক্ষা জোন হিসেবে পরিচিত অভিজাত আবাসিক এলাকা সিদ্ধেশ্বরীতে প্রতিষ্ঠিত হয় সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। শিক্ষার আলো বিস্তার ও জাতিকে উন্নততর আদর্শ নাগরিক উপহারদানে এ কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতীয় শিক্ষাঙ্গনে বর্ণাঢ্য ইতিহাসের অধিকারী অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, সুবিশাল ক্যাম্পাস, আকর্ষণীয় ফলাফল এ কলেজটিকে করেছে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। কলেজে রয়েছে এক্সট্রা একাডেমিক কার্যক্রম, খেলাধুলা, মেধা বিকাশের জন্য সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা, রোভার স্কাউট, গার্লস ইন রোভার এবং শিক্ষাসফরসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক সুযোগ। এ কলেজের ফলাফল বরাবরই ঈর্ষণীয়। এ কলেজে রয়েছে সমৃদ্ধ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, বিভাগওয়ারী আলাদা সেমিনার কক্ষ, ল্যাবরেটরি, কম্পিউটার ল্যাব, ইন-ডোর ও আউট-ডোর খেলাধুলার ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে নিজস্ব ক্যান্টিন ও নামাজের স্থান। ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে।
সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রয়েছে প্রভাতী শাখা (শুধু ছাত্রীদের জন্য), দিবা শাখা (উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রি, অর্নাস ও মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থীদের জন্য)। শতাধিক নিয়মিত শিক্ষক বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান করছেন। এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধূমপানমুক্ত। শিক্ষার পরিবেশ সংরক্ষণে এটিকে এক অনন্য বৈশিষ্ট্য বলা যায়। প্রভাতী শাখা ছাড়াও দিবা শাখাতে ব্যবসায় শিক্ষা, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৯টি বিষয়ে অনার্স এবং ৬টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্সে শিক্ষা দেয়া হয়। উল্লেখ্য, কলেজে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার।
অধ্যক্ষ মোঃ ফয়েজ হোসেনের সুদক্ষ পরিচালনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এবং কলেজ পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ভোলা ৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন এর গতিশীল ব্যবস্থাপনায় এ কলেজ উত্তরোত্তর ঈর্ষণীয় সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে।
অধ্যক্ষ মোঃ ফয়েজ হোসেন বললেন-
একজন শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য শুধুমাত্র দ্বাদশ পরবর্তী সময়কেই বেছে নিতে হবে তা নয়। শিক্ষা জীবনের শুরুতেই একজন শিক্ষার্থীকে ভাবতে হবে তার অরস রহ ষরভব কী? শিক্ষার সড়কপথ ধরে তিনি কতদূর এগুবেন; শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, একাউন্টটেন্ট, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির বড় কর্মকর্তা নাকি ব্যবসায়ী-শিল্পপতি হবেন! তখন থেকে ভাবতে শুরু করলে শিক্ষা জীবনের পরের ধাপগুলোতে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো তার পক্ষে সহজ হয়। কিশোর বয়সের চিন্তা যৌবনে ফলপ্রসূ রূপ নিতে পারে। তবুও আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষার ভাবনা শুরু হয় দ্বাদশ শ্রেণির পর থেকে। একজন শিক্ষার্থী এইচএসসি (বিজ্ঞান) পাসের পর ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। সে যে বিষয় নিয়ে পড়বে তাতে তার একাগ্রতা ও নিষ্ঠা থাকতে হবে, তবেই আসবে সাফল্য।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা ও শিক্ষাজোন নামে খ্যাত সিদ্ধেশ্বরীতে অবস্থিত আমাদের এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আকৃষ্ট করবে। কারণ উচ্চশিক্ষা গ্রহণে অবকাঠামোগত সকল সুযোগ-সুবিধা এখানে বিদ্যমান। আধুনিক প্রযুক্তিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করানো হয়। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে একাডেমিক পরিবেশ ও গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের কারণে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীর নিকট এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচিত হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য আমরা কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এবারের পরীক্ষায় আমাদের কলেজের সাফল্য প্রায় শতভাগ। আমাদের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ৪টি বিভাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত অনার্স ৪র্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৪৮ জন পরিক্ষার্থী ১ম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক ও মাসিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। এদের তত্ত্বাবধান এবং পড়ালেখার উন্নয়নের জন্য গাইড টিচার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গাইড টিচারগণ শিক্ষার্থীদের ক্লাস-টেস্ট পরীক্ষাগুলোর ওপর নজর রাখেন। কোনো বিষয়ে নম্বর কম পেলে বা দুর্বল থাকলে তাদের নিয়ে বিশেষ তত্ত্বাবধানে ক্লাস নেয়া হয়। পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদেরকে সঠিক পরামর্শ দেয়া হয়। এসব কারণে সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম সর্বমহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। আমাদের কলেজের শিক্ষা-পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা, দায়িত্বশীলতা সর্বোপরি পরীক্ষায় উত্তম ফলাফল অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানদের এ কলেজে ভর্তির ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে থাকে।
আমাদের কলেজে যেসব ছাত্র-ছাত্রী ভাল ফলাফল করে, তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। অনার্সে যারা ফার্স্ট ক্লাস পায়, মাস্টার্সে তারা বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীদের কল্যাণার্থে পৃথক একটি ফান্ড গঠন করা হয়েছে। অধ্যক্ষ জানান, আমি অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সের মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তির জন্য ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ফান্ড থেকে গরিব-মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তিদানের ব্যবস্থা করা হবে।
কলেজের একাডেমিক উন্নয়নসহ সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য আমরা কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। শিক্ষকগণ যাতে আর্থিক দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে নিশ্চিন্তে পাঠদান করতে পারেন, সেজন্য প্রথমেই আমরা তাদেরকে নতুন জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করেছি। কতগুলো বিষয়ে পূর্ণকালীন নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষকদেরকে (নন-এমপিও) আর্থিক সুবিধাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য দু’টি জেনারেটর ক্রয় করা হয়েছে। কলেজের জন্য একটি গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। ১২ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ও প্রশাসনিক নতুন ভবনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
পূর্বে পরীক্ষা ব্যবস্থায় অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যা ছিল। সেসব দূর করে কেন্দ্রীয়ভাবে সকল ধরনের পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এ কলেজকে বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষা আয়োজনের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হয়েছে। আমি আমার সহকর্মীদের কাছ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা পাচ্ছি, যার জন্য আমি সফল হতে পেরেছি। আমরা কলেজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি, আমরা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসনের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি, প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর স্বার্থেই তা করেছি।
সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি শিক্ষাবর্ষে শত শত শিক্ষার্থী উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ও বহির্বিশ্বে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এ প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে একটি আদর্শভিত্তিক ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন লালন করছি। আশা করি, তা একদিন বাস্তবায়িত হবে ইনশাল্লাহ। এ প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন আঙ্গিকে জাতিগঠনে মেধাভিত্তিক উচ্চ ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থী তৈরি করার মানসে একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে সরকার ও সর্বমহলের সহযোগিতা কামনা করছি।
খিলগাঁও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি এলাকার শিক্ষান্নোয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। এলাকাবাসীর যতœশীলতা এবং কলেজের উন্নয়নে তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। অভিভাবকবৃন্দ এবং এলাকার গণ্যমান্য সুধীজনের সমর্থন ও পরামর্শ কলেজটিকে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
অধ্যক্ষ কানাই লাল সরকার বললেন-
দ্বাদশ পরীক্ষার সময়ই শিক্ষার্থীদের একটা টার্গেট থাকে সেকি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, শিক্ষক হবে, সেকি সরকারি কর্মকর্তা হবে, সেকি পুলিশ প্রশাসনে যাবে প্রভৃতি। এখানে অভিভাবকের ইচ্ছা ছাত্রের ওপর চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়। সে যে বিষয়ে আগ্রহী তার থেকে তাকে ডাইভার্ট করা ঠিক হবে না। প্রথমে কলেজ চয়েস করতে হবে, কলেজে সেই সাবজেক্টের টিচার কেমন পড়ান, পাঠদানে কোয়ালিটি আছে কিনা তা দেখতে হবে।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীরা আপনার এ কলেজকে কেন বেছে নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ কানাই লাল সরকার বলেন, উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আমার প্রতিষ্ঠানকে অনেক কারণে শিক্ষার্থীরা বেছে নেবে। যেমন আমাদের কলেজটির অবস্থান ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে। নিরিবিলি ও বৃহৎ পরিসরে আমার এ শিক্ষাঙ্গন অবস্থিত, সুবিশাল খেলার মাঠ রয়েছে এখানে, প্রতিবছর শিক্ষা সফরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়, কোনো ধরনের রাজনৈতিক হানাহানি নেই, ভালো ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পেয়েছে আমার কলেজেরই ১ জন ছাত্রী, ভালো ফলাফলের জন্য আমরা বৃত্তি প্রদান করে থাকি। আমাদের কলেজে বিবিএ (প্রফেশনাল) সহ ১০টি বিষয়ে অনার্স এবং ২টি বিষয় প্রক্রিয়াধীনসহ ৪টি বিষয়ে এম এ কোর্স চালু রয়েছে। কলেজের শিক্ষক সংখ্যা শতাধিক। প্রত্যেকটি ক্লাস যথাযথভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হয়।
এ কলেজের অনার্স ও মাস্টার্স এর ফলাফল অত্যন্ত ভালো। মানসম্মত শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত এ কলেজে বাংলা, ইংরেজি (১১তম-২০০২), রাষ্ট্রবিজ্ঞান (১ম-২০১০), সমাজকর্ম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাববিজ্ঞান (৮ম-২০১৩), ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং ও ৬ বার ১ম শ্রেণিতে ১ম স্থানসহ স্বর্ণপদক বিজয়ী প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ। এখানে ১০টি বিষয়ে অনার্স বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, সমাজকর্ম, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং, প্রাণিবিজ্ঞান, বিবিএ (অনার্স) প্রফেশনাল, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং (প্রক্রিয়াধীন) এবং ৬টি বিষয়ে মাস্টার্স প্রাণিবিজ্ঞান (কীটতত্ত্ব, মাৎস্যবিজ্ঞান), হিসাববিজ্ঞান (প্রিলি মাস্টার্স, শেষপর্ব মাস্টার্স), ব্যবস্থাপনা (প্রিলি মাস্টার্স, শেষপর্ব মাস্টার্স), রাষ্ট্রবিজ্ঞান (শেষপর্ব মাস্টার্স), ইংরেজি (শেষপর্ব মাস্টার্স) মার্কেটিং শেষপর্ব মাস্টার্স) ক্লাসে পড়ানো হয়। হিসাববিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রিলিমিনারি কোর্স চালু আছে। এছাড়া এবার থেকে বিবিএ (প্রফেশনাল) এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ খোলা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ক্লাস খোলা হবে।
সুন্দর, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ সম্বন্ধে নিজ মতামত ব্যক্ত করে অধ্যক্ষ কানাই লাল সরকার বলেন, একটি সুন্দর শিক্ষাঙ্গন নির্ভর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানের ওপর এ কথার সাথে আমি একমত। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঠিক ও সময়োপযোগী পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে গভর্নিং বডি, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। তাহলেই সুন্দর শিক্ষাঙ্গন গড়ে উঠতে পারে।
আমরা শিক্ষার্থীদেরকে শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে বিদায় করি না। Come to learn and go to serve -এই নীতিকে সামনে রেখে আদর্শ চরিত্রবান, দায়িত্ববান, দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে যাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, সেই প্রচেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকে। তারা এখান থেকে মানবিক গুণাবলি অর্জন করে শিক্ষাঙ্গন ত্যাগ করে এবং সুনাগরিক হয়ে ওঠে।
মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ঢাকার সবুজবাগ, খিলগাঁও থানাসহ রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মেয়েরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে আসে। দেশের প্রায় সকল অঞ্চলের ছাত্রীরা এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করছে।
মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ উচ্চশিক্ষা প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির (এম.এস.এস. রাষ্ট্রবিজ্ঞান, এলএলবি)।
কলেজটিতে শিক্ষার সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ এবং প্রতিবছর বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য এ প্রতিষ্ঠান অভিভাবক এবং সুধীসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। এ কলেজে হিসাব বিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। এছাড়া ব্যবস্থাপনা ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে অনার্স এবং হিসাববিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু প্রক্রিয়াধীন।
মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্রীদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে একটি সুবিশাল মাঠ। গ্রন্থাগার ও বিজ্ঞান গবেষণাগার ছাত্রীদের উন্নত শিক্ষাগ্রহণে সহায়ক হচ্ছে। দুশ’ ছাত্রীর আবাসন উপযোগী একটি ছাত্রী নিবাস রয়েছে।
অধ্যক্ষ লুৎফুন নেছা বললেন-
উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা এ কলেজকে বেছে নেবে কারণ বাসাবো-সবুজবাগ এলাকায় নারীদের একমাত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। নারী সমাজের মাঝে কলেজটি জ্ঞানের আলো বিতরণ করে চলেছে অকাতরে। এলাকাবাসীর মধ্যে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনেক পরিচিত এবং জনপ্রিয়। শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে এ প্রতিষ্ঠানে। এ কলেজের সব শিক্ষক মহিলা; কলেজের মেয়েদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কলেজের ৪র্থ তলায় ছাত্রীনিবাসটি কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। কলেজের বিশাল খেলার মাঠে ছাত্রীরা খেলাধুলায় অংশ নেয়; তারা সংগীত, স্পোকেন ইংলিশ, ডিবেটিং ইত্যাদি এক্সট্রা একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামে নামকরণ হলেও এ কলেজে হানাহানি নেই, শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষকগণ আন্তরিক, তারা শিক্ষার্থীদের প্রতি যতœশীল, ক্লাসের পড়া ক্লাসেই পড়িয়ে দেয়া হয়। পরীক্ষার ফলাফল খুব ভালো। এসব কারণে উচ্চশিক্ষায় ভর্তিচ্ছু ছাত্রীরা মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজকেই বেছে নেয়।
তিনি আরও বলেন, কলেজটির অনার্স পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত ভালো। হিসাব বিজ্ঞান এবং সমাজকর্ম বিষয়ে মাস্টার্স চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করছি, আগামী সেশন থেকে উক্ত বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে।
মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটিকে ঘিরে আমার অনেক স্বপ্ন আছে এটিকে নারীশিক্ষার সেরা পীঠস্থান হিসেবে আমি গড়ে তুলতে চাই। আমরা কোয়ালিটি শিক্ষার প্রতি বিশেষ জোর দিচ্ছি। আরও কয়েকটি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ক্লাস চালু করে এলাকার ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করতে চাই। মির্জা আব্বাস মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজকে অত্র এলাকার মধ্যে উচ্চশিক্ষার উজ্জ্বল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই মেয়েদের জন্য এমন শিক্ষা প্রবর্তন করতে চাই, যাতে তারা এ কলেজ থেকে পাস করে চাকরির বাজারে যোগ্য প্রার্থীর প্রমাণ দিতে পারে, স্বকর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখতে পারে।
দনিয়া কলেজ
দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৪ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে শনির আখড়ার সন্নিকটে। কলেজটি সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও ধূমপানমুক্ত। বর্তমানে কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) এবং প্রফেশনাল বিবিএ মিলে মোট ১৩টি বিষয়ে অনার্স কোর্সসহ প্রায় ৮,০০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
অধ্যাপক সাহাদাত হুসাইন রানা’র সুদক্ষ ও গতিশীল পরিচালনায় কলেজটি উত্তরোত্তর সাফল্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। গভর্নিং বডি’র সভাপতি হলেন আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লা এমপি। কলেজে মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগে পড়ানো হয়। শিক্ষক ৯৫ জন, কর্মকর্তা-কর্মচারী ৪৮ জন। কলেজটি কোয়ালিটি শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
অধ্যক্ষ সাহাদাত হুসাইন রানা বললেন-
দ্বাদশ পরবর্তী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পূর্বে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কী কী বিষয় বিবেচনা করা উচিত বলে আপনি মনে করেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ সাহাদাত হুসাইন রানা বলেন, শুধু দ্বাদশ পরবর্তী নয়, শিক্ষা জীবনের শুরুতেই একজন শিক্ষার্থীকে তার লক্ষ্য স্থির করে নেয়া উচিত। লক্ষ্য স্থির করে শিক্ষা জীবন শুরু করলে তাকে লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হতে হয় না। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে বিজ্ঞান; ব্যবসায়ী হতে চাইলে বাণিজ্য এবং জেনারেল লাইনে পড়তে চাইলে তাকে কলা বা আর্টস সাবজেক্ট বেছে নিতে হবে।
উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীরা আপনার কলেজকে কেন বেছে নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে সাহাদাত হুসাইন বলেন, আমার কলেজকে বেছে নেয়ার যৌক্তিক কারণ আছে। সংসদীয়-৫ আসন এলাকার সবচেয়ে বড় কলেজ এটি। যেখানে রয়েছে ১০ তলার ১টি বিশাল একাডেমীক ভবন। গভর্নিং বডির সুপরিচালনায় এবং দক্ষ শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে কলেজটি ভালো ফলাফল করে এরই মধ্যে এলাকাবাসীর আস্থা অর্জন করেছে।
কলেজের স্বনামধন্য অধ্যক্ষ হিসেবে শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নে তাঁর গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে সাহাদাত হুসাইন বলেন, আমাদের কলেজের একাডেমিক কার্যক্রমে কতগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। ইন্টারমিডিয়েট থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাস এবং পরীক্ষা যথাযথভাবে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ক্লাস টেস্ট, মডেল টেস্ট, মিড টার্ম ও ফাইনাল পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঘষেমেজে তৈরি করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের মনিটরিংয়ের জন্য প্রতিক্লাসে রয়েছে ক্লাস কো-অর্ডিনেটর। সার্বিক বিষয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একাডেমিক কমিটির মিটিং প্রতি মাসেই অনুষ্ঠিত হয়। যার ফলে আমাদের কলেজের ফলাফলও ঈর্ষণীয়। সরকার শিক্ষানীতি প্রণয়নের সাথে সাথে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করেছে। আমি নিজ উদ্যোগে আমাদের শিক্ষকদেরকে পর্যায়ক্রমে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। বর্তমানে আমার সব শিক্ষক সৃজনশীল পদ্ধতির ট্রেনিং পেয়েছে।
প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে তাঁর স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সাহাদাত হুসাইন রানা বলেন এ কলেজের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে আমরা বিশেষ নজর দিয়েছি; ১০ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করেছি। তবে শুধু শুধু ভবন তৈরিতেই আমাদের স্বপ্ন সীমাবদ্ধ নেই, এখানে যারা শিক্ষা গ্রহণ করবে তাদের মেধা বিকাশে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। গভর্নিংবডির মাননীয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লা এমপি এবং সম্মানিত সদস্যদেরও এ স্বপ্ন। আমরা যদি তরুণ প্রজন্মকে উপযুক্ত শিক্ষায় আলোকিত করতে পারি, জীবনমুখী ও কর্মমুখী শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে পারি তাহলে তারা দেশকে বঙ্গবন্ধুর সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
তেজগাঁও মহিলা কলেজ
তেজগাঁও মহিলা কলেজ ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ অনুপ্রেরণায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তেজগাঁও এবং আশেপাশের এলাকার সাধারণ মানুষের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করার লক্ষ্যে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আত্মপ্রকাশ। সূচনালগ্ন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক (পাস) কোর্সের অধিভুক্তি হয়। বর্তমানে কলেজটিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্সসহ আরও ৪টি বিষয়ে বিবিএ (সম্মান) কোর্স চালু রয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ কলেজের ফলাফল শতভাগ হওয়ায় কলেজটিতে ছাত্রীসংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরও কয়েকটি বিষয়ে অনার্স খোলার প্রস্তুতি চলছে।
অধ্যক্ষ আসাদুল হক এবং তাঁর ৬০ জন শিক্ষক সহকর্মীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তেজগাঁও মহিলা কলেজ বর্তমানে নারীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মেয়েরা উচ্চশিক্ষার জন্য এ কলেজে আসছে। হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং এবং ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিংয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়াও বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্স নারী শিক্ষার কলেজগুলোর মধ্যে একমাত্র অত্র কলেজেই চালু রয়েছে।
সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বললেন-
গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর কলেজের উন্নয়নে কী ভূমিকা পালন করেছেন এমন জিজ্ঞাসায় গভর্নিং বডির ডায়নামিক সভাপতি, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বলেন আমরা যখন কলেজের দায়িত্ব নিলাম, তার পূর্বে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে এই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের ৮ মাসের বেতন বাকি ছিল। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করি এবং বাৎসরিক আয় ৩০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকায় উন্নীত করি। এছাড়া বর্তমানে কলেজে হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিং, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে অনার্স ও বিবিএ (প্রফেশনাল) কোর্স চালু রয়েছে। শিক্ষার্থী সংখ্যা ২০০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে প্রায় ১৪০০ জনে উন্নীত হয়েছে। পূর্বে শ্রেণি কক্ষের স্বল্পতা ছিল, স্বল্পতা নিরসনে কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে নতুন ভবনের উপরে তৃতীয় ও চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ প্রফেসর আসাদুল হক বললেন-
দ্বাদশ পরবর্তী উচ্চশিক্ষাঙ্গনে ভর্তির ক্ষেত্রে যেসব বিষয় ভাবনা হওয়া উচিত তা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ আছে কিনা; স্বচ্ছন্দে পড়ালেখার উপযোগী কিনা; শিক্ষার্থী যে বিষয়টি পছন্দ করে, সে বিষয়ের ভালো শিক্ষক আছে কিনা; বিগত কয়েক বছরের পরীক্ষার ফলাফল প্রভৃতি।
ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রীরা তেজগাঁও মহিলা কলেজকে বেছে নেবে, কারণ কলেজটি ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত; যেকোনো দিক থেকে এখানে আসা যায়। কলেজের শিক্ষকমন্ডলী অনেক দক্ষ ও অভিজ্ঞ। তাঁরা খুব যতœশীলতার সাথে পাঠদান করেন। ক্লাসের পড়া ক্লাসেই পড়িয়ে দেয়া হয়, কোনো পড়া পেন্ডিং থাকে না। শিক্ষার্থীদেরকে প্রাইভেট পড়তে হয় না, টিচাররা ক্লাস শেষে বিশেষ কোচিং দিয়ে অসমাপ্ত পাঠ পড়িয়ে দেন। এজন্য তেজগাঁও মহিলা কলেজের পরীক্ষার ফলাফল বরাবরই ভালো। তাছাড়া শুধুমাত্র মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য এ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এবং তেজগাঁও কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেক্সটাইল ইউনিভর্সিটি প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আশেপাশে থাকায় তেজগাঁও মহিলা কলেজের প্রতি অভিভাবকদের দৃষ্টি প্রথমেই আকৃষ্ট হয়।
সবার জন্য উচ্চশিক্ষা, এটি সম্ভব নয়, যুক্তিযুক্তও নয় বলে অধ্যক্ষ আসাদুল হক মনে করেন। তিনি সমাজে শিক্ষিত বেকার সৃষ্টি না করে কারিগরি শিক্ষার প্রতি সবাইকে আগ্রহী হবার আহ্বান জানান। ১৬ কোটি মানুষকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জনশক্তিকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর করে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে। নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ভিশন-’২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার ২০ হাজার স্কুল ও ১ হাজার কলেজে কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করেছে। এই কলেজেও একটি উন্নতমানের কম্পিউটার ল্যাব এবং মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের ব্যবস্থা আছে। সকল ছাত্রীর কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য একটি অনুকুল পরিবেশ এই কলেজে শতভাগ বিদ্যামান।
গুণগত শিক্ষার শিক্ষকের প্রকট অভাব সম্পর্কে অধ্যক্ষ আসাদুল হক সচেতন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে নিবিড় প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। নাই বলে বসে থাকলে চলবে না, বিদেশ থেকে কেউ এসে করে দেবে না, আমাদের সমস্যার সমাধান আমাদেরকেই করতে হবে।