গত ৪ নভেম্বর ক্যাম্পাস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় সততা পুরস্কার ও সততা জাগরণী কর্মসূচির ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান। এতে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠায় প্রোজ্জ্বল দু’অঙ্গনের দু’ব্যক্তিত্বকে সততা পুরস্কার ও সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। অনুপ্রেরণাদায়ী সেই মহৎ দু’ ব্যক্তি হলেন- স্বাধীনতা পদকে ভূষিত, ১০ বার জাতীয় বাজেট প্রণয়নকারী, বহুমুখী প্রতিভায় ভাস্বর, বর্ণিল গুণাবলির কর্মযোগী ডায়নামিক-দূরদর্শী, সৎ ও নীতিনিষ্ঠ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী, ভাষা সৈনিক, বীমাশিল্পে জীবন্ত কিংবদন্তি, শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির পুরোধা, সততা ও নীতিনিষ্ঠায় প্রোজ্জ্বল নাসির এ চৌধুরী।
সততা পুরস্কার ও সম্মাননাপ্রাপ্ত ভাষা-সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাল আব্দুল মুহিত যেন এক পরশপাথর; যেখানেই হাত দেন- সোনা ফলে! এক জীবনে তিনি এত বেশি বলেছেন, এত বেশি লিখেছেন, এত এত গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন -তাঁর সমতুল্য ব্যক্তি খুঁজতে গেলে বেগ পেতেই হবে! রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করেও সৃষ্টি করেছেন বিপুল রচনাসম্ভার। কৃতি ও কীর্তিতে অনন্য এক মানুষ তিনি। চিন্তায়, কর্মে, সৃজনে সর্বদা সময়ের চেয়ে অগ্রসর।
অন্যদিকে, সুদীর্ঘ কর্মজীবনের বন্ধুর পথচলায় অসীম সাহস ও অতুলনীয় দূরদর্শীতার সাথে নাসির এ চৌধুরী ক্রমাগত এগিয়ে চলেছেন, উত্তরসূরিদের জন্য নির্মাণ করেছেন স্বচ্ছন্দ চলার পথ। তাঁর নির্মিত পথেই জাতীয় অর্থনীতিতে বীমা শিল্প রেখে চলেছে উল্লেখযোগ্য অবদান। বাংলাদেশের বীমাশিল্পে অনন্য সাধারণ গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত এক জীবন্ত কিংবদন্তি তিনি। কেবল বীমা শিল্পেরই স্বপ্নদ্রষ্টা নন, প্রগতিশীল ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থারও স্বপ্নচারী, একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক, এদেশের শিক্ষা, সাংবাদিকতা ও শিল্প-সাহিত্য-ক্রীড়া অঙ্গন তাঁর অকৃপণ পৃষ্ঠপোষকতায় ধন্য; তিনি গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ফাউন্ডার।
সততা পুরস্কার ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী স্পিকার, কমনওয়েলথ স্কলার, প্রথিতযশা আইনজীবী, বহুবিধ সম্মাননায় ভূষিত, দেশপ্রেমী, নিষ্ঠাবান, প্রাজ্ঞ ও প্রতিভাদীপ্ত ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং ক্যাম্পাস সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (সিএসডিসি) মহাসচিব ড. এম হেলালের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ শাহ্লা খাতুন, ওয়ার্ল্ড ইউনির্ভাসিটির ভাইস-চান্সেলর প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত্, প্রখ্যাত হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক ডাঃ আলমগীর মতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএস ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল হাকিম, গ্রীন ডেল্টা ইন্সিওরেন্সের সিইও ফারজানা চৌধুরী, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর জি এস চৌধুরী, আইসিএবি’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম এফসিএ, সাবেক প্রেসিডেন্ট মসিহ মালিক চৌধুরী, সমাজসেবা প্রতিষ্ঠান ‘ডরপ’-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এএইচএম নোমান, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একেএম মোমেন, রয়েল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. নেছার আহমেদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বিআইডিএস এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, জেলা ও দায়রা জজ আলী হায়দার, ক্যাম্পাস পরিচালিত ফ্রি ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পার্সন এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ক্যাম্পাস’র শিক্ষানবিশ আনতারা রাইসা ও মাহীর হেলাল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ক্যাম্পাস’র বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর নির্মিত ডক্যুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এরপর সততা পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার অর্পণের পূর্বে দু’জন সম্মাননালাভকারীর উপর নির্মিত বিশেষ ডক্যুমেন্টারি দেখানো হয়। এরপর প্রধান অতিথি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র গ্রহণ করেন ডিজিটাল অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত এবং গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ফাউন্ডার এমডি নাসির এ চৌধুরী। তাঁদের দু’জনকে সম্মাননা পুরস্কার হিসেবে বাংলাপিডিয়ার ১৪ খন্ডের বইয়ের সেট অর্পণ করেন হারবাল চিকিৎসক ও বাংলাদেশে হারবাল আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ডাঃ আলমগীর মতি। এসময় অতিথিদের মুহুর্মুহু করতালিতে ভরে যায় ক্যাম্পাস অডিটোরিয়াম।
এছাড়া, মুহিত ও নাসির চৌধুরীর হাতে ক্যাম্পাস’র জ্ঞানমেলা সিরিজের বহুল প্রশংসিত ১৭টি বইয়ের সেট অর্পণ করেন সিএসডিসি’র মহাসচিব ড. এম হেলাল। এরপর প্রধান অতিথি মহীয়সী, নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি এর হাতে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট অর্পণ করেন জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ শাহ্লা খাতুন; এছাড়া তাঁকে ক্যাম্পাস’র গবেষণা সেলের ১৭টি বইয়ের সেট, ২টি গবেষণা মডেল, বিভিন্ন সিডির সেট অর্পণ করেন ড. এম হেলাল।
অনুষ্ঠানের পরের পর্বে দেখানো হয় ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার এর উপর নির্মিত ডক্যুমেন্টারি। ডক্যুমেন্টারি দেখানো শেষে ক্যাম্পাস’র অনারারি রিসার্চ ডিরেক্টর ড. নাজনীন আহমেদ ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার নির্মাণের এ মহতী উদ্যোগে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এরপর শুরু হয় আলোচনা পর্ব। সকল বক্তাই ক্যাম্পাস’র এ ব্যতিক্রমী আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁদের অনেকেই এত জমজমাট, সুন্দর-সুশৃঙ্খল ও আকর্ষণীয়ভাবে সততা পুরস্কার আয়োজনের জন্য ক্যাম্পাস এবং এর কর্মীদের দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেন। আলোচনার মাঝে মাঝে পরিবেশিত হয় স্যুপ, স্ন্যাকস, ফ্রুটস, ব্রেড, চা, কফি, বাদাম ইত্যাদি। আলোচনায় বার বার উঠে আসে ক্যাম্পাস’র নানা ব্যতিক্রমী দেশ-উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের কথা। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রেস মিডিয়ার উপস্থিতিও ছিল উল্লেখ করার মতো। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সততা পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী মুহিত, বীমাশিল্পের কালজয়ী পুরুষ নাসির চৌধুরী এবং দেশের প্রথম নারী স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বক্তাদের আলোচনা পর্ব শেষে সততার আলোয় আলোকিত দু’ মহান ব্যক্তি অর্থমন্ত্রী মুহিত ও নাসির চৌধুরী নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন আগত অতিথিদের কাছে। তাঁদের বক্তব্যের পর ক্যাম্পাস সততা পুরস্কার সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এরূপ নানা আলোচনা, বক্তৃতা আর লাইট রিফ্রেশমেন্টের পর শুরু হয় মনোমুগ্ধকর ও জমজমাট সংগীতসন্ধ্যা। এ পর্ব পরিচালনায় ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ড. নাজনীন আহমেদ; সাথে ছিলেন ক্লোজআপ ওয়ান তারকা এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিল্পী মেহেদী হাসান। তাঁদের সুরেলা গানে অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। ড. নাজনীন গেয়ে শোনান- বঙ্গ আমার জননী আমার.., আজ বাংলাদেশের হৃদয় হতে.., আমি শুনেছি সেদিন তুমি.., এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায়.., আজ মন চেয়েছে...। মেহেদী হাসান শোনান- আজ এই দিনটাকে.., তুমি যদি যাও.., আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম.., স্বাদের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী..। গানের সাথে বাদকদল মিউজিক্যাল প্রেজেন্টেশন করেন।
ধুমধাড়াক্কা জমজমাট গানের রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয় ক্যাম্পাস কিচেনের পরিবেশনায় দেশীয় খাবারের নৈশভোজ, যা পরিবেশিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের খাবার পরিবেশনার স্টাইলে। ক্যাম্পাস কিচেনের পরিচ্ছন্ন ও সুস্বাদু খাবারের মধ্যে ছিল- ভেজিটেবল চিকেন বিরিয়ানী, ফ্রেঞ্চ ড্রেসিং সালাদ, নানা ধরনের ফল ইত্যাদি। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় খাবার শেষ হয় মডার্ণ হারবালের স্পেশাল দই দিয়ে। বিশিষ্ট সমাজসেবী, হারবাল খাদ্য আন্দোলনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব¡, গবেষক ও চিকিৎসক মডার্ণ হারবালের ফাউন্ডার ডাঃ আলমগীর মতিকে অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নের আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অনেকেই। এভাবে দেশপ্রেম-সম্প্রীতি -আবেগ-উচ্ছ্বাসে ভরপুর একটি স্মৃতিবহ-প্রীতিপূর্ণ সন্ধ্যার অবসান হয় দুই বরেণ্য ব্যক্তিত্বকে সততা পুরস্কার ও সম্মাননা জ্ঞাপনের মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের বক্তৃতা ও কথামালার অংশবিশেষ নিম্নরূপ।
যে জাতি গুণীজনদের সম্মান ও
মর্যাদা দেয় না, সে জাতিতে পরবর্তী প্রজন্মসমূহে গুণীজনের আবির্ভাব হয় না।
-স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুভাষিণী বাগ্মী দেশের প্রথম নারী স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পাস দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সম্মানিত করেছে, জ্ঞানভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস’র বিভিন্নমুখী কর্মসূচি, গবেষণা, ট্রেনিং প্রোগ্রাম ছাত্র-তরুণ সমাজকে গড়ে তুলছে লিডার হিসেবে, দেশের কল্যাণে। ক্যাম্পাস’র কর্মসূচি দেশের প্রয়োজন মেটাচ্ছে; তাদের অংশীদারিত্বমূলক কর্মসূচি প্রশংসার দাবিদার।
আজকের সম্মানিত ও অভিনন্দিত বীমাশিল্পের কিংবদন্তি নাসির এ চৌধুরী কঠোর শ্রম, অধ্যবসায়, ধৈর্য দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, স্বমহিমায় এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে; সততাকে ধারণ করে গড়ে তুলেছেন নিজের কর্মজীবন, আর্থ-সামাজিক অঙ্গনে নিজের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন গৌরবময় আসন। অন্যদিকে ১০বার জাতীয় বাজেট প্রণয়নে বিরল রেকর্ড স্থাপনকারী অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী। তিনি দেশের তরুণ সমাজকে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবার পথ দেখিয়েছেন। তিনি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ৭% এর উপরে নিয়ে গেছেন, এটি সম্ভব হয়েছে তাঁর জাদুকরী প্রভাবের গুণে। কল্যাণমূলক অনেক বিষয় জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন তিনি। তাই জাতির বরেণ্য সন্তানদের সম্মাননা দিয়ে ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র যেমনি গৌরবান্বিত হয়েছে, তেমনি পুরো জাতিকেই তারা গৌরবান্বিত করেছেন; ক্যাম্পাস’র সূচিত সততা পুরস্কার ও সততা জাগরণী কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, গুণীজনদের সম্মাননা দিয়ে আমরা নিজেরাও গৌরববোধ করছি। যে জাতি তার জ্ঞানী-গুণীদের মূল্যায়ন করে না, সম্মাননা দেয় না, সে জাতিতে পরবর্তী প্রজন্মগুলোতে জ্ঞানী-গুণী লোকের আবির্ভাব হয় না।
জ্ঞানী-গুণীরা যে ম্যাসেজ রেখে যান তা আমাদের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। যেসব বরেণ্য ব্যক্তি তাদের কর্মজীবনে সাফল্যের মাইলফলক রেখে যান তারা সবার নমস্য। তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষের অফুরন্ত প্রাণশক্তি রয়েছে, তারা কঠোর পরিশ্রমী, তারা দেশোন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। সবার অবদানের সমন্বয়ে আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে, পরবর্তীতে দখল করে নেবে উন্নত দেশসমূহের সারিতে মর্যাদাপূর্ণ আসন।
স্পিকার বলেন, বাংলাদেশের মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি অনেক। এ দেশের মানুষ অনেক পরিশ্রমী ও মেধাবী। এ মেধাবী মানুষরাই উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। মানুষের এ মেধাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে আমরা নিম্ন আয় থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। শিগগিরই আমরা দেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাব। দেশ ও জাতির সেবায় ছাত্র-যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ, অনুপ্রাণিত ও আধুনিক ধ্যান ধারণায় প্রশিক্ষিত করতে ক্যাম্পাস’র কর্মসূচিগুলো দেশব্যাপি ছড়িয়ে পড়–ক এটি আমার কামনা।
জীবনমুখী ও জাতি জাগরণী কর্মসূচির প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস ভবিষ্যতে আরও চমক সৃষ্টি
করবে বলে আশাবাদী
-অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত
সততা পুরস্কার পেয়ে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন- ক্যাম্পাস আমাদেরকে যে সততা পুরস্কার ও সম্মাননা জ্ঞাপন করলো, তাতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত; এটি আমার জন্য একটি বিশেষ দিন। আমার বিশ্বাস, ক্যাম্পাস’র এ পুরস্কার সমাজে সততার চেতনায় সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে। সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার জাগরণে ক্যাম্পাস’র এ কর্মসূচি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের গতিসঞ্চারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এভাবে সরকার ও জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের সারিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।
মুহিত আরো বলেন, ক্যাম্পাস আমার আর নাসির দু’জনের প্রিয় প্রতিষ্ঠান। তাদের আন্তরিকতা, আবেগ-উচ্ছ্বাস, কর্মস্পৃহা আমাদেরকে মুগ্ধ করে। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মানুষকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে, বিশেষ করে ছাত্র-তরুণদেরকে বড় হতে স্বপ্ন দেখায় ক্যাম্পাস। তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের কর্মকান্ড ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কর্মকান্ডের সহায়ক। জীবনমুখী, জাতি জাগরণী কর্মসূচির প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস ভবিষ্যতে আরও চমক সৃষ্টি করবে বলে আমি আশাবাদী।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে শেখ হাসিনা আমাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন। ৮৪ বছর বয়সেও কাজ করি নিষ্ঠার সাথে। নেত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা’পালনে একনিষ্ঠ হয়ে কাজ করছি। ২০০৯ সালের নির্বাচনে আমি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানকে ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করি। আমার নির্বাচনী এলাকায় মাইলকে মাইল হেঁটেছি, ভোটারদের সাথে কথা বলেছি, তাদের আশা-আকাঙ্খার কথা জেনেছি।
অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যে সরকারে বেশি সৎ ও নিষ্ঠাবান মন্ত্রী যুক্ত হবে সে সরকার ব্যর্থ হবে না। আমাদের সরকার উন্নয়নের সরকার। দেশের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে; জ্বালাও-পোড়াও নীতি তারা মেনে নেবে না। দেশ দ্রুত মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ বিশ্বের উন্নত দেশের সারিতে স্থান পাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগে বলতো ‘উপরি’ না হলে চলে না। এখন সেটা বলতে পারবে না। আমরা বেতন কয়েকগুণ বাড়িয়েছি। সুতরাং এটা হচ্ছে সততার সময়। সবাইকে সততার সঙ্গে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার জনসেবায় নিযুক্ত হলে জনগণের জন্য অনেক কিছু করতে পারে। এজন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোর দিয়ে বলেন, আমরা উন্নয়নের সরকার।
তিনি আরো বলেন, প্রধান অতিথি স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী আমার বন্ধু রফিকউল্লাহ চৌধুরীর কন্যা, তার মা সিলেটের মেয়ে প্রফেসর নায়ার সুলতানা আমাদের বোন, সে সুবাদে আমার বোনের মেয়েও বটে। তিনি ক্যাম্পাস’র সততা জাগরণী অনুষ্ঠানে এসে সৎ ও ন্যায়নিষ্ট জাতি গঠনে সবাইকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।
ক্যাম্পাস’র কর্মসূচিসমূহ অত্যন্ত ডায়নামিক ও সৃজনশীল, জাতির প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টিতে উদ্দীপকস্বরূপ
এম এ মান্নান, অর্থ প্রতিমন্ত্রী
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দু’জন প্রতিভাধর, গুণী ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করে সমাজে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ক্যাম্পাস। অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিতের সাথে কাজ করছি; তাঁর সম্পর্কে আগেই জানা ছিল। সারা দেশের মানুষ তাঁকে চেনে। তিনি সদালাপী, হাসিখুশি ডায়নামিক মানুষ। অন্যজন নাসির চৌধুরী শিল্পাঙ্গনে কীর্তিমান, বীমা-শিল্পে জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবে খ্যাতিমান। জনাব মুহিত ও জনাব নাসির তরুণ সমাজের আদর্শ।
তিনি আরো বলেন, জীবনমুখী, জাতি জাগরণী কর্মযজ্ঞের নিরলস প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাস’র কর্মসূচিসমূহ অত্যন্ত ডায়নামিক ও সৃজনশীল, জাতির প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টিতে উদ্দীপকস্বরূপ। অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি ক্যাম্পাস’র সততা পুরস্কার ও সততা জাগরণী কর্মসূচি আরও ব্যাপকতা লাভ করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ক্যাম্পাস আমাদেরকে যে সম্মাননা দিল, তা’ ভালোবাসায় সিক্ত হৃদয়ের অনুভূতি
-বীমাবিদ নাসির এ চৌধুরী
ক্যাম্পাস’র সততা পুরস্কার লাভে ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসির চৌধুরী বলেন- মাননীয় স্পিকারের মাধ্যমে ক্যাম্পাস আমার হাতে যে সততা পুরস্কার ও সম্মাননাপত্র তুলে দিল, তা ন্যায়নিষ্ঠভাবে আমার সুদীর্ঘ কর্মজীবনের স্বীকৃতি বলে মনে করছি। ক্যাম্পাস’র এরূপ জাতিজাগরণী ব্যতিক্রমী কর্মসূচি সমগ্র দেশ ও জাতিতে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে পারলে অচিরেই বাংলাদেশ আরও গতিশীল উন্নয়নের মহাসড়কে স্থান পাবে।
নাসির এ চৌধুরী তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আরো বলেন, ক্যাম্পাস’র আসর অনেক ছোট, স্থান সংকুলানের অভাব; কিন্তু তাদের আয়োজন ও চিন্তা-চেতনার মাপকাঠি অনেক বড়। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সুমহান। মুহিত আমার ছোটবেলার বন্ধু। ক্যাম্পাস তার সাথে আমাকেও সম্মাননা দিচ্ছে দেখে আমি আনন্দিত ও অভিভূত। এটি আমার জন্য বড় পাওনা, এ ঘটনা বিরল এবং সারাজীবন মনে রাখার মত। মুহিতকে দেখলে ফেলে আসা দিনগুলোর কথা বাক্সময় হয়ে ওঠে। ‘লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ সেøাগানে কন্ঠ দিয়েছি, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শামিল হয়েছি; আবার যখন দেখেছি পাকিস্তান সরকার বাঙালির মাতৃভাষা বাংলার উপর আঘাত হানছে, পূর্ব বাংলাকে শোষণ করছে, তখন সে পাকিস্তানী শাসকদের বিরুদ্ধে একত্রে রাজপথে নেমেছি।
ক্যাম্পাস আমাদেরকে যে সম্মাননা দিল তা ভালোবাসায় সিক্ত হৃদয়ের অনুভূতি বলেই মনে করি। ভবিষ্যতে অন্যান্য কর্মসূচির সাথে সততা কর্মসূচিও ক্যাম্পাস অব্যাহত রাখবে এ আমার বিশ্বাস।
জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ শাহ্লা খাতুন
ট্রেজারার, ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার
ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টারের ট্রেজারার জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ শাহ্লা খাতুন বলেন, আজ যারা সংবর্ধিত হলেন, সম্মাননা পেলেন তাঁরা সমাজে অসম্ভব সম্মানীয় ব্যক্তি। ক্যাম্পাস সততা পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সমাজে ও জাতিতে সততা লালনের আদর্শকে উজ্জীবিত করেছে।
ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার ভবন নির্মাণ একটি বড় মাপের কাজ, একা কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন চিত্তশালী ও বিত্তশালী মানুষের সহযোগিতা।
প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী
ভাইস-চ্যান্সেলর
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পাস’র সততা পুরস্কার দেয়া হলো অনন্যসাধারণ দু’জন বড় ব্যক্তিত্বকে। ক্যাম্পাস’র এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ আরো বহু মানুষকে সততায় উৎসাহিত করবে।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী যে মহৎ ব্যক্তির সন্তান সেই শ্রদ্ধেয় রফিক উল্লাহ চৌধুরীর কাছ থেকে উত্তরাধিকার নেতৃত্ব হিসেবে ছাত্রলীগের দায়িত্ব পেয়েছিলাম। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, পরবর্তীতে সিএসপি অফিসার, বঙ্গবন্ধুর মুখ্য সচিব।
প্রফেসর ড. এ কে আব্দুল মোমেন
জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি
জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড.এ মোমেন বলেন, ক্যাম্পাস’র অনুষ্ঠানে এসে ভালো লাগছে। ক্যাম্পস’র সততা পুরস্কার ও সততা জাগরণী কর্মসূচিতে চমৎকারিত্ব আছে, নতুনত্ব আছে। সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পুুরস্কার-পদক দেয়া হলেও সততার স্বীকৃতি স্বরূপ কোনো পুরস্কার এখনও দেয়া হয় না। ক্যাম্পাস এ পুরস্কার চালু করে সরকারকে সেবামূলক কাজে আগ্রহী করে তুলছে। আশা করছি, ক্যাম্পাস সততা জাগরণী কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, সরকারের কর্মসূচিতেও তারা অংশগ্রহণ করবে।
ডাঃ আলমগীর মতি
হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট হারবাল চিকিৎসক ও গবেষক ডাঃ আলমগীর মতি বলেন, আমরা ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার তৈরি করছি; এতে আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। মডার্ণ হারবালের পক্ষ থেকে এ সেন্টার নির্মাণে ৫ লক্ষ টাকার অনুদান ঘোষণা করছি। নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমী ব্যক্তিত্ব ড. এম হেলালের কর্মযজ্ঞের সাথে একাত্ম হয়ে আমরা ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার গড়ে তুলবো এবং জাতি জাগরণসহ দেশ উন্নয়নে গতিশীল প্রাণপ্রবাহ সৃষ্টি করব।
অধ্যাপক এম এ হাকিম
চেয়ারম্যান, এআইএস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাজ্ঞ শিক্ষক প্রফেসর এম আবদুল হাকিম বলেন, আজকের সম্মাননাপ্রাপ্ত দু’জন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব সবার পরিচিত। তাঁদেরকে সম্মাননা দিয়ে ক্যাম্পাস জাতির গৌরব বৃদ্ধি করেছে। স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীকে জানার সুযোগ হয়েছে, কারণ আমি তাঁর গ্রামের বাড়ির কাছাকাছি নোয়াখালীর সন্তান। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী স্পিকার নির্বাচিত হয়ে যেমন দেশের গৌরব বৃদ্ধি করেছেন, তেমনি নোয়াখালীকেও গৌরবান্বিত করেছেন।
সততা পুরস্কার সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা যদি ব্যক্তি জীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সততা লালন করতে পারি তা হলে দেশ ও জাতি দ্রুত উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে। সততা পুরস্কার প্রবর্তন করে এক্ষেত্রেও ক্যাম্পাস জাতির জন্য অনুকরণীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছে।
ফারজানা চৌধুরী
সিইও, গ্রীন ডেল্টা ইন্সুরেন্স কোং
গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর এমডি এবং সিইও ফারজানা চৌধুরী বলেন, যে দু’জন ব্যক্তিত্ব সততা পুরস্কারে ভূষিত হচ্ছেন তাঁরা দু’জন আমার আপন জন। একজন আমার পিতা নাসির এ চৌধুরি, অন্যজন পিতার বন্ধু পিতৃতুল্য এএমএ মুহিত। এ দু’জন আমার আদর্শ বটে। তাঁরা সততার চর্চায় জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলেছেন, কর্মজীবনকে করেছেন সাফল্যমন্ডিত। সমাজ থেকে দুর্নীতি ও অসততা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হবে না; তবে তার দাপট কমানো যাবে, মানুষও স্বস্তি পাবে।
এ এইচ এম নোমান, প্রতিষ্ঠাতা, ডরপ্
গুসি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত সমাজসেবক ‘র্ডপ’-এর ফাউন্ডার চেয়ারম্যান, আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত এএইচএম নোমান বলেন, আমরা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়ন ও অবস্থার উন্নয়নে কাজ করি। ক্যাম্পাস’র কর্মসূচিসমূহ জনকল্যাণমুখী, এর রয়েছে নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা। তারা সমাজ সচেতন, দেশপ্রেমী, সৎ ও নিষ্ঠাবান। ক্যাম্পাস’র দেশ জাগানিয়া কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হয়ে আমরা যদি একসাথে কাজ করি তা’হলে আমরা সফল হতে পারবো।
ড. নাজনীন আহমেদ
অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও ব্যাংক-পরিচালক
অনুষ্ঠানমালার স্বাগত বক্তব্যে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, ক্যাম্পাস’র অনারারি রিসার্চ ডাইরেক্টর ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠানে সম্মাননা গ্রহণকারী দু’জন মহান ব্যক্তিত্ব অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত এবং বীমাবিদ নাসির এ চৌধুরী। তাঁরা প্রতিভার আলো ছড়িয়ে দেশকে জাগিয়ে তুলেছেন, ছাত্র-তরুণদের কাছে নিজেদেরকে উপস্থাপন করেছেন আদর্শ হিসেবে, তাঁদেরকে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ক্যাম্পাস পরিবার নিজেদেরকে ধন্য মনে করছে।
সততা জাগরণী কর্মসূচি ক্যাম্পাস-কর্মসূচির একটি বিশেষ আকর্ষণ; ছোট্ট পরিসরে বিশাল ব্যক্তিত্বদের সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন- এটাকে দুঃসাহস বলা যায়। তবে আমরা বিশ্বাস করি সংবর্ধিত ব্যক্তিত্বগণ এবং উপস্থিত সুধীজন নিশ্চয়ই এটাকে আমাদের আন্তরিক উদ্যোগ বলে গ্রহণ করবেন।
তিনি বলেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ক্যাম্পাস’র আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই। ক্যাম্পাস’র দু’টি সময়োপযোগী অত্যাধুনিক মডেল বাস্তবায়নে সমাজের সবার সর্মথন পাবো বলে আশা করি।
ড. নাজনীন আরও বলেন, আমরা আনন্দিত, যাঁদেরকে সম্মানিত করা হলো তাঁরা দেশ ও সমাজের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। আজকের অনুষ্ঠানে ক্যাম্পাস সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের সভাপতি এমিরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান অবশ্যই উপস্থিত থাকতেন, কিন্তু বহুপূর্বে নির্ধারিত চট্টগ্রাম বই মেলার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। মাননীয় স্পিকার সততা ও ন্যায়নিষ্ঠায় প্রোজ্জ্বল বলে আমাদের ডাকে এ ক্ষুদ্র পরিসরের অনুষ্ঠানেও আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। অর্থমন্ত্রী এএম এ মুহিত একজন ডায়নামিক কর্মযোগী মানুষ, অর্থনীতির জাদুকর বলে খ্যাতিলাভ করেছেন। নাসির এ চৌধুরী ন্যায়নিষ্ঠা ও কর্মগুণে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এ দু’ব্যক্তিত্ব আমাদের কাছে আলোকবর্তিকা স্বরূপ। তাঁদেরকে সম্মাননা দিতে পেরে আমরা উজ্জীবিত ও গর্বিত।
ড. নাজনীন বলেন, সততা পুরস্কার প্রদানের নেপথ্য উদ্দেশ্য হলো- দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানসহ নীতি-নির্ধারকগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করা; যাতে
পরবর্তীতে এ পুরস্কার রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রদান করে সমাজের সর্বক্ষেত্রে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠাকে উৎসাহিত করা হয়। রাষ্ট্রীয় বা সরকারি পর্যায়ের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রপতি সততা পুরস্কার, প্রধানমন্ত্রী সততা পুরস্কার, একুশে সততা পুরস্কার, স্বাধীনতা সততা পুরস্কার প্রভৃতি সম্মাননা প্রদানে যেন সরকার ও নীতিনির্ধারকগণ এগিয়ে আসেন- এটিই ক্যাম্পাস’র লক্ষ্য।
এম জি কিবরিয়া, এডভোকেট
ক্যাম্পাস ইংলিশ কোর্সের রিসোর্স পার্সন এডভোকেট এম জি কিবরিয়া বলেন, শুরু থেকেই ক্যাম্পাস’র পরিবেশ আমাকে আকৃষ্ট করে। আমি ক্যাম্পাসকে অবজার্ভ করতে থাকি। দেখলাম ক্যাম্পাস বিভিন্নমুখী কর্মসূচি পালন করে। ফ্রি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। ফ্রি মানে একেবারেই ফ্রি! ক্যম্পাস কোনোরূপ বিদেশি সাহায্য নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে না। দেশে অনুরূপ প্রতিষ্ঠান চালানোর লোক আছে, কিন্তু তাদের লক্ষ্য ও কর্মসূচি ভিন্ন, তাদের এ্যাপ্রোচও ভিন্ন। ক্যাম্পাস’র গ্রহণযোগ্যতা গগনচুম্বী, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির এমন প্রতিষ্ঠান নেই। ক্যাম্পাস স্টাডি সেন্টার রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে কিংবা পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হওয়া উচিত। এ বিষয়ে মাননীয় স্পিকারের মাধ্যমে সংসদে প্রস্তাব এলে আমরা খুশি হব।
ড. এম হেলাল
মহাসচিব, ক্যাম্পাস সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র,
সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকা
অনুষ্ঠানের সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক এবং ক্যাম্পাস সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিএসডিসি)-এর মহাসচিব ড.এম হেলাল বলেন, অতীত অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে জানি দুর্নীতিবাজরা বড় গলায় কথা বলে, নীতিবানরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এটি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় উপলব্ধি করেছি। এ সময় এএমএ মুহিতের সাথে পরিচয়। পরবর্তীতে তাঁর কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। তারও পরে নাসির চৌধুরীর সাথে পরিচয়। তাঁদের পরামর্শে আমরা সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। মুহিত সাহেব সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের জীবনেও ছাত্রদের প্রয়োজনের সময় ধার দিতেন। আর নাসির চৌধুরী -সেতো আরেক উদারপ্রাণ, মহৎ ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের নাম।
ড. এম হেলাল বলেন, একটা সময় ছিল যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা যেত না। এখন আন্দোলন হয়, ঘুষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া যায়। আগামী দিনে বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করবো। এ অনন্য সাধারণ কর্মসূচিটি যদি- সরকারি তত্ত্বাবধানে পালন হয় তা’হলে সেটি ব্যাপকতা লাভ করবে।
ড. হেলাল আরও বলেন, আমাদের এ প্রতিষ্ঠানের মাননীয় প্রেসিডেন্ট এমেরিটাস প্রফেসর আনিসুজ্জামানের ঢাকায় নিজের বাড়ি নেই, একখন্ড জমিও নেই। ভাড়াটে বাড়িতেই জীবন কাটিয়ে দিলেন এ গুণী ব্যক্তিত্ব। তেমনি জীবনটা সততাময় বলেই অর্থমন্ত্রী মুহিতকে সবাই ভালোবাসেন। বয়সের ভ্রুকুুটি উপেক্ষা করে দুর্দান্ত সাহসিকতায় দেশ ও মানব কল্যাণে নিয়োজিত রয়েছেন এভারগ্রীন নাসির চৌধুরী। সৃষ্টিশীল কর্মকান্ড ও কল্যাণ চিন্তার জন্য তাঁরা বাঁচবেন আরও ৫০ বছর!
তিনি বলেন, নতুন নতুন আইডিয়ার জেনারেটর ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদেরকে যুক্তিভিত্তিক ও ন্যায়ভিত্তিক আচরণ শেখায়, ছাত্রযুবকদের মধ্যে সৃষ্টি হয় বুদ্ধির মুক্তি, চিন্তার স্বাধীনতা। জ্ঞানভিক্তিক ও ন্যায়ভিক্তিক সমাজ গঠন করে ক্যাম্পাস গড়ে তুলছে যুক্তিপ্রিয় আলোকিত জাতি। ক্যাম্পাস’র আহবান- সর্বক্ষেত্রে সৎ ও যোগ্য দেশপ্রেমীকে নেতা-নেত্রী নির্বাচিত করুন। এ চেতনা লালন করতে পারলে ২০২০ সালের মধ্যে ন্যায়ভিত্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং আলোকিত জাতি গড়ে উঠবে। ক্যাম্পাস’র সেই আলোকিত পথে অভিযাত্রায় সবার আন্তরিক সমর্থন ও সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
প্রতিবেদনঃ মোহাম্মদ মোস্তফা